৫০ লাখ টাকা মধ্যে কী ব্যবসা করা যেতে পারে?

1 Answers   11 K

Answered 2 years ago

আমি আশা করি আপনি যখন এই প্রশ্ন করেছেন,আপনার ৫০লাখ টাকা আছে অথবা আপনার ৫০লাখ টাকা কোন মাধ্যম থেকে ম্যনেজ করার সামর্থ আছে।যাহোক ৫০লাখ টাকা তে অনেকধরনের ব্যবসা আছে,আর আমি আপনাকে ব্যবসার পরামর্শ বিনামুল্যতে দিতেছি,অথচ আমার কাছে ব্যবসার জন্য ৬,৮লাখ টাকা সেটাও নেই,অথচ এই মুল্ধন টাকা হলে আমি ব্যবসা করতে পারতাম।আর এখানে যারা আপনাকে আমার মত বিনামুল্য উপদেশ দিতেছে তাও ৫০লাখ টাকা তে ব্যবসা কিভাব করব এই প্রশ্ন এর উত্তরে,আপনার উচিত ছিল এই উত্তরের জন্য উত্তরদাতাদের কিছু ফি দেয়া।আর অনেক মার্কেটিং এজেন্সি আছে,যারা পরামর্শ দেই টাকার বিনিময়ে।যাহোক সেটা নিয়ে এখন না লিখি।এই টাকা দিয়ে অফলাইন ও অনলাইন ব্যবসা দুই যায়গাতে করা যায়।তবে অনলাইন সেক্টরে ব্যবসা করতে আপনার ইনভেস্টমেন্ট কম লাগবে,আর এখানে লাভের সম্ভবনা বেশি।তবে এখানে ব্যবসা করতে হলে অনেক কিছু আপনাকে জানতে হবে,এখানে যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে।কম্পিউটার ,ইন্টারনেট ,ব্রাউজ করা এসব নিয়ে বেসিক ধারনা থাকতে হবে ।আর এই সেক্টরে গ্লোবালি কাজ করতে চাইলে ইংরেজিটা একটু হলেও বুঝতে হবে,তবে এখন গুগল ট্রান্সলেট দিয়ে ইংরেজি বোঝা অন্তত যায়।আর প্রতিযোগিতা ,পরিশ্রম এটা দুই যায়গাতে আছে।অফলাইনে যদি এই টাকা নিয়ে একটা শোরুম করে ব্যবসা করতে চান,তবে শোরুম এর সিকুরিটি মানি ,ক র্মচারি বেতন,শোরুম ডেকারেশন ,আরো অনেক খরচ দিয়ে এই টাকাতে ব্যবসা করতে গেলেও লাভ করা কঠিন হবে।এই টাকা দিয়ে জমি ক্রয় বিক্রি ব্যবসা করেন,সেটা যদি প্রপার টার্গেটেড যায়গার জমি ক্রয় করে টার্গেটেড কাস্টমার ধরতে পারেন ,তবে এতে ভাল লাভ।কিন্ত এখানে এই ব্যবসা করতে হলে স্থানিয় রাজনিতিক প্রভাবশালির ব্যক্তির সাথে ভাল রিলেশন থাকতে হবে,না হলে বিভিন্ন চাদাবাজদের চাদা দিতে গিয়েই মুল্ধন হারাতে হবে,জমি ক্রয় করে বিক্রি করা দূরে থাক দখল ও পাবেন না।এছাড়া বালু ব্যবসা,ডিশ ,ওয়াইফাই ব্যবসা এসব ব্যবসাতে লাভ আছে,কিন্ত এসব ব্যবসা নতুন অবস্থায় করতে গেলে যদি এই ব্যবসার মার্কেট এলাকার প্রভাবশালিরা দখল করে থাকে,তবে তাদের সহযোগি হয়ে করতে পারেন,কিন্ত তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে গিয়েছেন তো আপনার খুজে পাওয়া যাবে না।

বিভিন্ন পুকুর চুক্তিভিত্তিক নিয়ে মাছের চাষ করতে পারেন,এমনকি এখন পুকুর বাদেও আরো কিছু আধুনিক ব্যবস্থা হচ্ছে মাছ চাষের ,এছাড়া কাকড়া ,মুক্তা চাষ হচ্ছে,চিংড়ি চাষ হচ্ছে এটাও ভাল ব্যবসা।

গরু ও ছাগল এই ব্যবসাতে লাভ আছে,কিন্ত বর্তমানে এই ব্যবসার মন্দা।কারন গোখাদ্যর দাম বেশি,গোখাদ্যর সংকট,তাই এই ব্যবসা এখন না করা ভাল।

জমি চুক্তিতে নিয়ে সেখানে এমন ধরনের চাষ করতে পারেন,যেসব লাভজনক হয়।

মোটরসাইকেলের জন্য ছোট গ্যরেজ করতে পারেন,যেখানে মোটরসাইকেলের মেরামতের জন্য দুজন কর্মচারিকে বেতন হিসেবে রাখবেন,এর সাথে মোটরসাইকেল এর যন্ত্রাংশ খুচড়া ও পাইকারি বিক্রি করবেন

জুস,সফট ড্রিঙ্ক ,কফি এসবের জন্য মেশিন ক্রয় করে,একটা গাড়িতে সেট করে জনবহুল যায়গা তে বিক্রি করতে পারেন,এরজন্য দুইজন কর্মচারিকে বেতন হিসেবে রাখতে পারেন।

এছাড়া আরো অনেকধরনের মেশিনে প্রোডাক্ট বানিয়ে বিক্রির ব্যবসা আছে।

এমনকি চাইলে গাড়ি ইম্পোর্ট করার ব্যবসা করতে পারেন,এখন করোনা বলে চায়না থেকে পাইকারি পন্য এনে স্থানীয় মার্কেটে বিক্রি করতে পারেন।

তবে এসব ব্যবসার জন্য বিজ্ঞাপন বাজেট থাকতে হবে।

এবার অনলাইনে ব্যবসার কথা বলি।অনলাইন ব্যবসার জন্য কম্পিউটার,ল্যপটপ ,ইন্টারনেট লাইন এটা লাগবে।আর এই ব্যবসা পরিচালনার জন্য নিজের বাড়ির যেকোন একটা ঘর যথেষ্ট।এখন প্রশ্ন কি ব্যবসা করা যায় অনলাইনে।

(১) ইউটিউব ;

ইউটিউব থেকে বিভিন্নভাবে আয় করা যায়,এটা আমরা সবাই জানি।ইউটিউব ক্যরিয়ারটাকে ব্যবসা হিসেবে নেয়া যায়।এরজন্য বাড়ির রুমে স্টুডিও করে,লাইট ক্যমেরা সেটআপ করে ভিডিও নির্মান করতে হবে।ভিডিও চ্যনেলে আপলোড করতে হবে,ভিডিও এর এসিও করতে হবে,পেইড মার্কেটিং ও করতে হবে।ভিডিও এর থাম্বনেল ডিজাইন করতে হবে।এভাবে চ্যনেলে যখন অনেক সাবস্ক্রিবার হবে,ভিডিও তে যখন ভিউস হবে ,চ্যনেল বেশ বড় হবে।আর তখন বিভিন্নভাবে চ্যনেল থেকে আয় করা যায়।আর যখন আপনি এই ভিডিও এর স্ক্রিপ্ট ,থাম্বনেল ডিজাইন,এসিও এসব টাকা খরচ করে প্রফেশনাল ব্যক্তি দিয়ে করবেন,তখন আপনার চ্যনেল খুব দ্রুত বড় হবে।বাংলাদেশের বক্সটিউব ইউটিউব চ্যনেলের এডমিন তার ৪টি ইউটিউব চ্যনেল।আর তিনি কিন্ত ইউটিউব টাকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন,এজন্য তার চ্যনেলে যারা কর্মচারি তারা কিন্ত সেলারি হিসেবে কর্মচারি।আর ইউটিউব এ ক্যরিয়ার করার জন্য শুরুতে ২,৩মাস ৩,৫হাজার টাকা দিয়ে কিছু পেইড কোর্সে ট্রেনিং নিতে পারেন।

(২) হোস্টিং রিসেলিং ব্যবসা

এটা একটা লাভজনক ব্যবসা ,তবে এই ব্যবসার জন্য শুরুতে আপনার অনেক বিনিয়োগ লাগবে না,তবে এই ব্যবসা করার জন্য যে হোস্টিং প্রোভাইডার এর হোস্টিং রিসেলিং করবেন তাদের কাছ থেকে ৩,৪মাস ট্রেনিংকরা লাগবে।

(৩) ডোমেইন এর ব্যবসা

একটা ওয়েবসাইট করতে ডোমেইন লাগে।বিভিন্ন কিওয়ার্ড রিসার্চ করে ডোমেইন অল্প দামে ক্রয় করে সেটা বেশি দামে টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে বিক্রি করা যায়।অনেক প্রফেশনাল ব্যক্তি এই ডোমেইন ক্রয়ের জন্য টার্গেটেড কিওয়ার্ড রিসার্চ করে থাকে।এছাড়া মেয়াদউত্তীর্ন ডোমেইন ক্রয় বিক্রয় ব্যবসা করা যায়।

(৪)ফরেক্স ট্রেডিং

আন্ত্রজাতিক মুদ্রার ট্রেডিং করা,এটা হচ্ছে ট্রিলিয়ন ডলারের মার্কেটপ্লেস।এটা একটা লাভজনক ব্যবসা,তবে এই ব্যবসা তে শেয়ারমার্কেটের মত ১মিনিটে হাজার ডলার লাভ করা যায়,আবার ১মিনিটে হাজার ডলার লস হতে পারে।এই ব্যবসাতে নামার জন্য অবশ্য ভাল ট্রেনিং নিতে হবে।

(৫) ওয়েবসাইট

একটা ওয়েবসাইট হচ্ছে সারাজীবনের জন্য বড় সম্পদ।একটা ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্নভাবে আয় করা যায়।একটা ওয়েবসাইটে যত ইনভেস্ট করবেন,সেটা একটা সময় আপনার জন্য সোনার ডিম পাড়া হাস হবে।ডোমেইন ,হোস্টিং ক্রয় করে একজন প্রফেশনাল ব্যক্তিকে দিয়ে খুব আকর্ষনীয় ডিজাইনের ওয়েবসাইট বানানো যায়।এটা ওয়ার্ডপ্রেস দিয়েও করা যায়,আবার বেশি বাজেট দিয়ে কাস্টম ডিজাইন ওয়েবসাইট করা যায়।ওয়েবসাইট বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।ওয়েবসাইট করার পর সেখানে ভিজিটর আনতে হবে,আর ভিজিটর আনার জন্য ওয়েবসাইটে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে,যা ওয়েবসাইটে অর্গানিক ট্রাফিক আনার জন্য এসিও এর জন্য সহায়তা করবে।আর ওয়েবসাইটের এসিও করে ,ওয়েবসাইট গুগলের টপ পেজে আনতে হয়।কারন গুগলের টপ পেজে ওয়েবসাইট থাকা মানে অর্গানিক ভিজিটর ওয়েবসাইটে আসার সুযোগ বেশি হওয়া।আর একটা ওয়েবসাইটে যত ভিজিটর তত টাকা।

আর ওয়েবসাইটে ভিজিটর দের জন্য দরকার তারা যে কারনে ওয়েবসাইটে আসবে তথ্যবহুল ইউনিক কনটেন্ট।আর কনটেনট ওয়েবসাইটের রাজা,কনটেন্ট আর্টিকেল,ইমেজ ,ভিডিও,স্লাইডশো সব কিছু।আর এই কনটেন্ট এর জন্য প্রফেশনাল কনটেন্ট রায়টার হায়ার করা ভাল,ওয়েবসাইট কে এসিও ,কিওয়ার্ড রিসার্চ এরজন্য প্রফেশনাল ব্যক্তিকে হায়ার করে করা উচিত।ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার জন্য ব্যকলিঙ্ক করা ,সোশ্যল সাইটে পেইড মার্কেটিং এসব টাকা খরচ করে করা দরকার।ওয়েবসাইট থেকে যদি এফেলিয়েট,সিপিএ মার্কেটিং করে আয় করা হয়,তবে ওয়েবসাইটে রিভিউ আর্টিকেল লিখতে হবে।টার্গেটেড কাস্টমার এর জন্য ইমেইল কালেক্ট করতে হবে,এরপর ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন অফার প্রোমট করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে ভাল ভিজিটর থাকলে ,অন্য ওয়েবসাইট ব্যকলিঙ্ক এর জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে পেইড করবে।এছাড়া ওয়েবসাইটে নিজের প্রোডাক্ট বিক্রি করে আয় করা যায়,ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ইবুক বিক্রি করে আয় করা যায়।

শুরুতে ওয়েবসাইটে এত ইনভেস্ট করে,সেটা থেকে বিভিন্নভাবে আয় করে ইনভেস্টের টাকা টা উশুল করার পর,দরকার হলে চড়া দামে ওয়েবসাইট বিক্রিও করে দিতে পারেন।

(৬) ড্রপশিপিং

ড্রপশিপিং হচ্ছে নিজের ওয়েবসাইটে অন্য ইকমার্স ওয়েবসাইটের পন্য বেশি দামে বিক্রি করা।এরজন্য শুরুতে ভাল ডিজাইনের ওয়েবসাইট করতে হবে,যে ইকমার্স ওয়েবসাইট থেকে পন্য হোলসেল দামে নিতে হবে,সেই ওয়েবসাইটে ভাল সাপ্লায়ার খুজে বের করতে হবে,নিজের ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার জন্য বিজ্ঞাপন করতে হবে।নিজের ওয়েবসাইটে পেমেন্ট সেটআপ করতে হবে।আর এসবের জন্য বিভিন্ন পেইড টুলস ব্যবহার করতে হবে,যেসব টুলস দিয়ে অটোমেটিক কাজ করা যায়।আর যে ওয়েব ডেভলপার দিয়ে ওয়েবসাইট বানানো হবে ,সে সব কিছু সেটআপ করে আপনাকে এটা ব্যবহার শিখিয়ে দেবে।আর আপনি চাইলে এটার জন্য কিছু সহকারি কে বেতন দিয়ে রাখতে পারেন।

(৭) টিশার্ট ডিজাইন করে বিক্রি

অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস আছে,যেখানে আপনার ডিজাইন করা টিশার্ট আপলোড করতে হবে,আপনার ডিজাইন করা টিশার্ট যত সেল হবে,সেটার উপর আপনার একটা কমিশন থাকবে।আপনি ডিজাইনার না হলে প্রফেশনাল কাওকে দিয়ে এই ডিজাইন করে নিবেন,আর কোন ধরনের টিশার্ট বেশি বিক্রি হয়,টিশার্টের জন্য কিওয়ার্ড রিসার্চ,অর্গানিক ও পেইড মার্কেটিং এসব বিভিন্ন প্রফেশনাল ব্যক্তিকে দিয়ে করাতে পারেন।আর এই কাজ টা শেখার জন্য ২,৪মাস বিভিন্ন পেইড কোর্স থেকে ট্রেনিং নিতে পারেন।আমাজান এ থেকে বিভিন্নভাবে আয় করা যায়,এখানে টিশার্ট ডিজাইন নিয়ে একটা সেক্টর আছে,।এছাড়া আর কিছু টিশার্ট ডিজাইন মার্কেটপ্লেস আছে।এমেসবি একাডেমিতে টিশার্ট ডিজাইনের উপর খুব ভাল পেইড কোর্স আছে।কোর্সটি এনরোল করতে পারেন।

(৮) আমাজান কিন্ডল

আমাজান এ কিন্ডল বুক পাবলিশ করে আয় করতে পারেন।এখানে বই নিজে লিখতে না পারলে রায়টার দিয়ে বই লিখে সেটা আমাজান এ আপলোড করতে পারেন,বই এর কভার ডিজাইন সেটাও ডিজাইনার দিয়ে করতে পারেন।এটা নিয়েও এমেসবি একাডেমিতে কোয়ালিটি পেইড কোর্স আছে।কোর্সটি এনরোল করতে পারেন।

(৯) সিপিএ ও এফেলিয়েট মার্কেটিং

সিপিএ এফেলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য ওয়েবসাইট দরকার।তবে ওয়েবসাইট আছে,এরসাথে আরো কিছু মার্কেটিং স্ট্যটেজি দিয়ে সিপিএ ,এফেলিয়েট অফার প্রোমট করা যায়।

সিপিএ ও এফেলিয়েট অফার বিভিন্ন রেডিমেড পেইড ল্যন্ডিং পেজের মাধ্যমে পেইড প্রোমশন করতে পারেন।সেটা ফেসবুক পেজে ফেসবুক এডের মাধ্যমে,গুগল এডওয়ার্ক দিয়ে গুগল এডের মাধ্যমে,নেটিভ এডের মাধ্যমে,ইনফ্লুয়েন্স এডের মাধ্যমে,ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে,সলো এডের মাধ্যমে,মিডিয়া বায়িং এড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ।


Rabby Khan
khanrabby
325 Points

Popular Questions