মাঝে মাঝে আমি রাতে যখন ঘুমাই, তখন হঠাৎ কী যেন আমায় আটকে রাখে। নড়াচড়া করতে দেয় না। কিন্তু আমি অনুভব করি যে আমায় আটকে রেখেছে। কথাও বলতে পারি না। এমনটা কেন হয়?

2 Answers   7.4 K

Answered 1 year ago

আমি কসম করে বলতে পারি, এই রোগের চিকিৎসা দুনিয়ার কোন ডাক্তার দিয়ে সম্ভব নয় । কেউ বিশ্বাস করুক চাই না করুক । কারন, আমি নিজেত্ত এই সমস্যায় ভূগেছি দীর্ঘ দিন । যার করনে আমি একা রাতে অথবা দিনে ঘুমাতে পারি না । কেউ হাস্যকর মনে করবেন না । কারন, এই সমস্যাটি খুবই ভয়ানক । যারা ভুক্তভূগি তারাই শুধু বুঝবেন এটা কতটা কষ্ট এবং যন্ত্রনা দায়ক ব্যপার । আহামদুলিল্লাহ, আমার এই সমস্যাটি এখন অবশ্য ভালোর দিকে । তবে কিছু আমল করলে এই সমস্যা থাকে না । আমি নিজেই এর প্রমান ।

যেমন:

অযু করে ঘুমানো ।

রাতে ঘুমের আগে কিছু কোরআন তেলাত্তয়াত করা ।

আয়াতুল কুরছি পরে শরীরে ফু দিয়ে এবং শরীর মাছেহ করে ঘুমানো ।

বিসমিল্লাহর সহিত সূরা ইকলাস, সূরা ফালাক এবং সূরা নাস তিনবার করে পড়ে ঘুমানো ।

পবিত্র অবস্থায় ঘুমানো ।

এই কয়েকটি আমল করে ঘুমালে আশা করা যায় এই সমস্যা থেকে বাঁচা সম্ভব ।

এটা শয়তান জ্বীনের প্রভাবে হয়ে থাকে । আমাদের অধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক ক্ষেত্রেই ফেল, যা তারা নিজেরাত্ত বোঝে না ।

তার পরেত্ত ভালো হক্কানী আল্লাহ ত্তয়ালা আলেম সাহেবের কাছে থেকে এই বিষয়ে জেনে নেয়া যেতে পারে ।

সারা দুনিয়ার মানব জাতির উপকারের জন্য আমার এই লেখা । যাদি কোন বেয়াদবি বা ভুল হয় তবে তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ।

Suriya Prema
suriyaprema
300 Points

Answered 2 years ago

এটা হচ্ছে স্লিপিং প্যারালাইসিস বা বোবায় ধরা। স্লিপ প্যারালাইসিস হওয়ার পেছনে কিছু কারণকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বোবায় ধরার কারণ:

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব বা ছেড়ে ছেড়ে ঘুম হওয়া। অসময়ে ঘুমানো। অনেক সময় কাজের সময় নির্দিষ্ট না হলে, অথবা দূরে কোথাও ভ্রমনে গেলে এমন ঘুমের সমস্যা হতে পারে।

মাদকাসক্ত হলে অথবা নিয়মিত ধূমপান ও মদপান করলে।

পরিবারে কারও স্লিপ প্যারালাইসিস হয়ে থাকলে।

সোশ্যাল অ্যাঙ্কজাইটি বা প্যানিক ডিসঅর্ডার বা বাইপোলার ডিজঅর্ডারের মতো মানসিক সমস্যা থাকলে।

বোবায় ধরার লক্ষণ:


ডা. সামান্থা আফরিনের মতে এবং ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী স্লিপ পারালাইসিসের সাধারণ কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো হল:


বড় করে নিশ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়। মনে হবে যেন বুকের মধ্যে কিছু চাপ দিয়ে আছে। দম বেরোচ্ছেনা।

অনেকের চোখ খুলতে এমনকি চোখ নাড়াচাড়া করতেও সমস্যা হয়।

অনেকের মনে হয় যে কোন ব্যক্তি বা বস্তু তাদের আশেপাশে আছে, যারা তার বড় ধরণের ক্ষতি করতে চায়।

ভীষণ ভয় হয়। শরীর ঘেমে যায়।

হৃৎস্পন্দন ও শ্বাস প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায়। অনেকের রক্তচাপও বাড়তে পারে।

পুরো বিষয়টা কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। প্রভাবটি কেটে গেলে আগের মতো কথা বলা বা নড়াচড়া করায় কোন সমস্যা থাকেনা। তারপরও অনেকে অস্থির বোধ করেন এবং পুনরায় ঘুমাতে যেতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

এর চিকিৎসা:

স্লিপ প্যারালাইসিস আসলে গুরুতর কোনও রোগ নয়। মাঝে মাঝে নিজে থেকেই ভাল হয়ে যায়।

মনকে চাপমুক্ত রাখার পাশাপাশি ঘুমানোর অভ্যাসে ও পরিবেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আনলে অনেক ক্ষেত্রেই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা সাধারণ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন:

রাতে অন্তত ৬ ঘণ্টা থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা। এবং সেই ঘুম যেন গভীর হয়।

প্রতিদিন রাতে একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং সকালে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠার অভ্যাস করা। এমনকি ছুটির দিনগুলোতেও।

ঘুমের জন্য শোবার ঘরটিতে আরামদায়ক পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করতে হবে। যেন সেই ঘরে কোলাহল না থাকে, ঘরটি অন্ধকার থাকে এবং তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রায় থাকে, খুব বেশি না আবার কমও না। সম্ভব হলে ঘরে ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধি ছিটিয়ে দেয়া যেতে পারে।

ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে ভারী খাবার সেইসঙ্গে ধূমপান, মদ পান এবং ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন চা-কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত চার ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করার চেষ্টা করা।

ঘুমের সময় হাতের কাছে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ অর্থাৎ ঘুমের বাঁধা হতে পারে এমন কোন বস্তু রাখা যাবেনা।

দিনের বেলা দীর্ঘসময় ঘুম থেকে বিরত থাকতে হবে।

স্লিপ প্যারালাইসিস হলে নিজের মনকে প্রবোধ দিতে হবে যে ভয়ের কিছু নেই, এই পরিস্থিতি সাময়িক, কিছুক্ষণ পর এমনই সব ঠিক হয়ে যাবে। এই সময়ে শরীর নাড়াচাড়া করার চেষ্টা থেকে বিরত থাকতে হবে।

এসব নিয়ম মানার পরেও যদি বাড়াবাড়ির রকম ভাবে বোবায় ধরা হয় তাহলে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

Kanij Bonne
kanijbonne
539 Points

Popular Questions