২০২২ সালে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সমস্যার মূল কারণ কোনটি এবং কেন ?

1 Answers   9.2 K

Answered 2 years ago

একেবারে ইউক্রেন সংকটের শুরু থেকেই বলছি,

ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে রুশপন্থি হিসেবে মনে করা হতো। তবে তিনি মস্কোর সঙ্গে থাকার পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গেও সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এক বিশাল বাণিজ্য চুক্তি করতে যাচ্ছিলেন, তখন এর চরম বিরোধীতা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কেননা এই চুক্তি ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পেতে কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেত।

ওই সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করেন। সেই চাপে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বৃহত্তর অর্থনৈতিক চুক্তিটি প্রত্যাখ্যান করেন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ। তার এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের নভেম্বরে রাজধানী কিয়েভে বিক্ষোভের মাধ্যমে ইউক্রেনের সংকট শুরু হয়।

সেই বিক্ষোভে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দমননীতির পরও বিক্ষোভ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ।

ওই ঘটনার পরের মাসেই ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখলে নেয় রাশিয়া। ক্রিমিয়া অঞ্চলটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ার কেন দখলে নিতে হলো, এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে। এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ।

এই অঞ্চলটির প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ জাতিগতভাবে রুশ। ১৯৫৪ সালে সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভ এটি হস্তান্তর করেন তৎকালীন সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনের কাছে। কিন্তু ১৯৯১ সালে ইউক্রেন স্বাধীনের পর ক্রিমিয়া হাতছাড়া হয়ে যায় রাশিয়ার।

ব্রিটেনের চেয়ে প্রায় ৭০ গুণ বড় রাশিয়া সারা বছর সচল রাখার মতো উষ্ণ পানির গুরুত্বপূর্ণ বন্দর প্রায় নেই বললেই চলে। ক্রিমিয়াই ছিল সেই একমাত্র জায়গা। ক্রিমিয়ার সেভাস্তাপোলে নৌঘাঁটি কৌশলগত কারণে তাই রাশিয়ার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাল্টিক সাগরে প্রবেশের জন্য রাশিয়ার পথ হচ্ছে এই বন্দর।

তাই অঞ্চলটি দখলের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, তিনি ক্রিমিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ান নাগরিক এবং রুশ ভাষাভাষীদের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয় সবকিছু করবেন।

যাইহোক এই ঘটনার পর ইউক্রেনের ডনবাজ অঞ্চল রাশিয়া পন্থী বিদ্রোহীরা দখল করে।

এরপর থেকেই ইউক্রেন চাইছিল ন্যাটোতে যোগ দিতে । কিন্তু রাশিয়া এটা সরল চোখে দেখে নি। কেননা এর ফলে ন্যাটো রাশিয়ার নাকের ডগায় অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করতে পারবে।

এইবার রাশিয়া সীমান্তে অস্ত্র মোতায়েন করার মাধ্যমে পশ্চিমাদের কাছে প্রতিশ্রুতি চেয়েছিল যে তারা ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য না করে কিন্তু পশ্চিমারা এককথায় না করে দেয়।

ফলে আজকে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করল। গনমাধ্যমের খবর অনুযায়ী , এইপর্যন্ত ইউক্রেনের ৪০ জন ও রাশিয়ার ৫০ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো এই অবস্থার জন্য কে দায়ী?

এর উত্তর হলো রাশিয়া। কেননা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হলেও অন্য কোন স্বাধীন দেশকে দখল করা অগ্রহণযোগ্য।

কিন্তু এই কাজটাই বারবার বিভিন্ন শক্তিশালী দেশগুলোর করেছে। যুক্তরাষ্ট্র যেমন সিরিয়া, লিবিয়া,ইরাক, আফগানিস্তান, ভিয়েতনামে আগ্রাসন চালিয়েছিল ঠিক একই কাজ রাশিয়াও করল।

Rahat Ahmed
rahatahmed09
303 Points

Popular Questions