সুদ মুক্ত ভাবে কিভাবে টাকা জমা রাখতে পারি?

1 Answers   6.3 K

Answered 2 years ago

আপনার সুদ মুক্ত ভাবে টাকা জমানোর আগ্রহ দেখে ভালো লাগছে। সুদ্মুক্ত ভাবে টাকা জমানোর কিছু উপায় আছে। অনেক জনপ্রিয় একটা উপায় হলো টাকা ব্যাংকে বিশেষত শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে রেখে তার লভ্যাংশ গ্রহন না করা। অর্থাৎ, লভ্যাংশ ব্যাংক হতে না তোলা বা দান করে দেওয়া। তবে দান করার ক্ষেত্রে সাওয়াবের আশা করা যাবে না, যেহেতু সেই টাকার মালিক আপনি নন। কিন্তু এক্ষেত্রে দুইটি সমস্যা আছে। আপনার টাকা ঠিকই সুদি কারবারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আর দ্বিতীয় সমস্যা হলো, টাকার মান দিন যাওয়ার সাথে সাথে কমছে, অর্থাৎ, ১০ বছর আগে ১০০ টাকায় যদি ১০ কেজি চাউল কেনা যেতো, এখন হয়ত কেনা যাবে ৫ কেজ, অর্থাৎ টাকার মান কমছে। এটাকে বলে ইনফ্লেশন। তাই, আপনি যদি ব্যাংকে টাকা রাখেন এবং কোন লভ্যাংশ গ্রহন না করেন তাহলে দুইরকম ভাবে আপনার টাকা কমে যাবে,

১. যাকাত। আপনার সম্পদ যদি নিসাব পরিমাণের চেয়ে বেশি হয় তবে আপনাকে বার্ষিক ২.৫% যাকাত দিতে হবে, যার কারণে আপনার সম্পদ ক্রমশ হ্রাস পাবে।

২. ইনফ্লেশন। এটা আপনি সরাসরি দেখতে পারবেন না। আপনার এমনিতে মনে হতে পারে আগেও আমার ১০০ টাকা ছিল এখনো আমার ১০০ টাকাই আছে। কিন্তু আগের সেই ১০০ টাকা দিয়ে ১০ কেজি চাল কেনা গেলেও এখন ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫ কেজি চাল। অর্থাৎ আপনার টাকা প্রকৃতপক্ষে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। এটা উদাহরণ, হয়ত আপনার টাকা অর্ধেক হবে না, কিন্তু সময় যাওয়ার সাথে সাথে কমবে, এটা নিশ্চিত।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি স্বর্ণ কিনতে পারেন। কারেন টাকার মান নির্ধারন করা হয় স্বর্নের ওপর। টাকার মান যখন কমে, স্বর্নের মান তখন বাড়ে। অর্থাৎ, স্বর্নের আর্থিক মূল্য নির্দিষ্ট। স্বর্নের দাম হুট করে কমে যাবে এমন চান্স বেশ কম। স্বর্নের ওপর ইনভেস্ট করলে আপনার লস হওয়ার চান্স নেই বললেই চলে। স্বর্নের দাম বাড়লে আপনার টাকার আর্থিক মূল্য কিন্তু বেড়ে যাবে না, বরং টাকার মান কমে গিয়েছে।

এছাড়াও আপনি জমি কিনতে পারেন।এটা বেশ সেফ ইনভেস্টমেন্ট। তবে এটা লিকুইড Asset না। অর্থাৎ যখন ইচ্ছা এটাকে টাকাতে কনভার্ট করতে পারবেন না।

প্রথম সমস্যা আসলে সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আপনার সম্পদ নিসাব পরিমাণের থেকে বেশি হলে আপনাকে ম্যান্ডেটরি যাকাত দিতে হবে। এটা ইসলামের ফান্ডামেন্টাল বিলিফস গুলোর একটা। তবে এটাকে পাশ কাটানোর একটা উপায় আছে। সেটা হলো নিজে বিজনেস করা এবং নিজে না বুঝলে অন্যের ব্যবসাতে ইনভেস্ট করা। ব্যাবসাকে ইসলামে সবসময়ই অনুপ্রানিত করা হয়েছে। ব্যাবসা করলে আপনার হয়ত ১০-২৫% বা আরো বেশি লাভ হতে পারে, সেখান থেকে আড়াই শতাংশ যাকাত দেওয়া খুব একটা বড় ব্যাপার না।

তবে, ব্যাবসাতে একটা রিস্ক ফ্যাক্টর সবসময়ই থাকে। সেটা যদি আপনি ম্যানেজ করতে পারে, তবেই কেবল ব্যাবসাতে আসবেন। তবে, টাকা উপার্জন ব্যাতীত কেবল সঞ্চয় করলে আপনার সম্পদ ক্রমশ কমবে। এটা মেনে নিতে হবে।

Rumi Akter
Rumi
406 Points

Popular Questions