১৯৮৪ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকার দিলখুশায়/মতিঝিলে হোটেল পূর্বাণীতে একটা অনুষ্টান শেষে বার হতে গিয়ে দেখা হয়ে গেল ইশরাতের সাথে, ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে আমার ক্লাসমেট ছিল। আমি এমনিতেই একা একা থাকি, আর মেয়েদের থেকে চিরকালই খুব দূরে থেকেছি। চিনতে পারলাম যে সে একজন ক্লাসমেট, কিন্তু আর কিছুই জানিনা। খুব করে চেপে ধরলো আই-সি-বির ইনভেস্টমেন্ট একাউন্ট খুলতে। আই-সি-বি নতুন প্রতিষ্ঠান, আর ইশরাতের নতুন চাকরী। ক্লাসমেটের অনুরোধে ৪১০০ টাকা দিয়ে ৪১টা শেয়ার কিনলাম ওর অফিসে গিয়ে। আই-সিবির নিজের কোন ভবন ছিলো না, ভাড়ায় থাকতো ডি-আই-টি (এখনকার রাজউক)এর পাশের একটা সাত তলা ভবনে। সেই ১৯৮৪ সালে সাইক্লোস্টাইল করা ফরমে হাতে লিখে একটা রশিদ দিল। যথাসময়ে সেটা হারিয়ে ফেললাম আর পুরো ঘটনা একদম ভুলে গেলাম।
১৯৮৪ থেকে ২০২২, মাঝখানে কেটে গেছে ৩৮ বছর। হঠাৎ কি করে আমার স্ত্রী পুরাতন কাগজপত্রের চিপায় থাকা সেই রশিদ খুঁজে পায়। আই-্সি-বিতে গিয়ে খবর নিয়ে একদম তাজ্জবঃ আমার একাউন্টে জমা হয়েছে ২৯৮, ৬০০ টাকা। আমি টাকাটা তুলিনি। থাকুকনা ওদের পয়মন্ত হাতে, থাকুক বাড়তে। ৪১০০ টাকা কি করে ২৯৮৬০০ টাকা হয়, তাও কিনা সরকারী কোম্পানীর হাতে? কে জানতো এমন সম্ভাবনা? কেউ একটা পয়সা চায় নি, বরং সবাই অনেক ইজ্জত দিয়েছে।
ইশরাত অনেক বড় পদে কাজ শেষ করে অবসর নিয়েছে। দেখা হয়েছিল ক্লাসমেটদের এক পুনর্মিলনীতে, কিন্তু ওকে ধন্যবাদ জানাতে পারিনি, কারণ তখন এই একাউন্টের কথা মনেই ছিলো না।
abujahid publisher