Answered 2 years ago
আমার ব্যক্তিগত জীবনের একটা ঘটনা বলি। আমি তখন HP কোম্পানিতে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। বরাবরের মতই অফিস সেরে বাড়ি চলে গেলাম। পরদিন অফিসে এসেই শুনি আমাদের ম্যানেজার মহাশয় একেবারে হন্তদন্ত হয়ে অফিস এসেই নেট ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেছেন।
উদ্দেশ্য একটাই যে গতকাল তার জীবনে ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত ও অদ্ভুত ঘটনার ব্যখ্যা খোঁজা। তার কপালে চিকন ঘাম দেখেই বুঝতে পারছিলাম যে ঘটনা অত্যন্ত সিরিয়াস! তাই একটু ফাঁকতালে জিজ্ঞেস করলাম বিষয় কী??
এরপর যা শুনলাম তা আমাকে বেশ বিস্মিত করেছিল। (বিস্মিত হবার বিষয়টি পরে ব্যখ্যা করছি)
উনি আগেরদিন অফিস সেরে বাসায় গিয়ে তার সাধের মটোরোলা ফোল্ডিং ফোনটি চার্জে দিয়ে এসে পরিবার সমেত ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছিলেন। আর তখনি!! অকস্মাৎ শোবার ঘর থেকে বোম ফাটার মত আওয়াজ হলো আর সাথে সাথেই উনার সারা বাসা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে গেল (স্বভাবতই সার্কিটব্রেকারের কারনেই আর কোন মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটেনি)।
হন্তদন্ত হয়ে পরিবারের সকলে বেডরুমে গিয়ে দেখেন যে তার সাধের মোবাইল ফোন খানা সাত খন্ড হয়ে পড়ে আছে আর তার পাশেই থাকা দামী টেবিল ল্যাম্পটাও চূর্ণবিচুর্ণ হয়ে গেছে।
কিন্তু কেন মোবাইল চার্জে থাকা অবস্থায় বিস্ফোরিত হলো??
সে ব্যাখ্যাই এখন করছি।
উনার তৎকালীন আধুনিক মোবাইলে অত্যাধুনিক লিথিয়াম ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছিল। যা অত্যন্ত স্পর্শকাতর (অন্তত মাত্রাতিরিক্ত গরম হলে পরে)। আর সেই চার্জিত অবস্থায় ব্যাটারি গরম হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তার উপর যদি মোবাইলের চার্জ কন্ট্রোল সার্কিট নিষ্ক্রিয়/নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তো পোয়াবারো! আর ঠিক তখুনি যদি কোন ফোন কল আসে আর তারফলে মোবাইল ভাইব্রেট হতে শুরু করে তখন তা সাক্ষাৎ যম হয়ে না দাঁড়ালেও বোমারু আচরণ করে।
আর ঠিক এই ঘটনার কারণেই উনার মোবাইল বা বলা যায় মোবাইলের ব্যাটারি বার্স্ট হয়ে গেছিল।
তবে সুসংবাদ হচ্ছে এমনতর ঘটনা মোটোরোলা কোম্পানির বেশ কিছু ঘটবার পরে তারা তাদের সেটে উপযুক্ত সেফটি প্রদান করে। যেকারনে দেখে থাকবেন হয়ত কিছুটা পুরানো টাইপের মোটোরোলা সেট কে (C-13, C-15) আপনি চার্জে বসালে সেগুলোতে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ভাইব্রেশন মোড অফ হয়ে যায়।
আর হ্যাঁ, আধুনিক মোবাইলে আরো অত্যাধুনিক সুবিধা সংবলিত করার কারনে মোটামুটি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে বর্তমানে এমন ভয়ংকর পরিস্থিতি হবার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।
তবুও সাবধানের মার নেই ভেবে এমন টি না করারই পরামর্শ থাকবে।
ahmedsopno publisher