Answered 2 years ago
যায় না বললে ভুল হবে, বলা যেতে পারে উপযোগী না। স্মার্টফোনে আপনি অনেক কাজ করতে পারবেন যা কম্পিউটারে বছরের পর বছর ধরে মানুষ করে আসছে। আমি সেসব আলোচনা না করে বরং স্মার্টফোন কি কি কাজে উপযোগী না তা নিয়ে আলোচনা করি।
কিবোর্ডঃ আপনি হয়তো ভাববেন আপনি অনেক দ্রুত টাইপ করতে পারেন মোবাইল ফোনে কিন্তু অনেক প্রফেশনাল কাজের জন্য একটি ফুল সাইজ কিবোর্ড আপনার লাগবেই। যেমনঃ কোডিং।
মাল্টিটাস্কিংঃ স্মার্টফোনে মাল্টিটাস্কিং সম্ভব কিন্তু একটি কম্পিউটারের মত একাধিক উইন্ডো ওপেন করে কাজ করা সম্ভব না। (কিছু ফোনে সম্ভব কিন্তু তা মোটেও কম্পিউটারের মত সুবিধাজনক না)
ইন্টারফেসিংঃ স্মার্টফোনে আপনি নানা ধরনের ইউএসবি ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। (ওটিজি দিয়ে সাধারণ কিছু ডিভাইস সাপোর্ট দেয়া গেলেও ব্যবহার করার জন্য কম্পিউটারের মত সুবিধা দেয়না)
প্রসেসিং পাওয়ারঃ একটি স্মার্টফোনের প্রসেসর RISC বেজড হয় এবং প্রায় সব স্মার্টফোনের চিপ আর্কিটেকচার ARM। ARM প্রসেসর লো পাওয়ার কঞ্জিউম করে এবং ছোটো ছোটো কাজ করানোর জন্য তৈরি। লো টু মিড রেঞ্জের স্মার্টফোনের প্রসেসর গুলো কম্পিউটারের মত বিশাল অপারেটিং সিস্টেম রান করতে পারেনা। তাছাড়া আর্কিটেকচারেরও ভিন্নতা রয়েছে। কম্পিউটারে সাধারণত x86_64 আর্কিটেকচারের প্রসেসর ব্যবহার করা হয় যেগুলো SISC বেজড। প্রচুর পাওয়ার কঞ্জিউম করে সেই সাথে এগুলো প্রচুর শক্তিশালীও বটে।
গ্রাফিক্সঃ স্মার্টফোনে SoC (সিস্টেম অন অ্যা চিপ) ব্যবহার করা হয়। এর মানে একটি সিঙ্গেল চিপের মধ্যেই সিপিউ, জিপিউ, নেটওয়ার্ক সহ অন্যান্য চিপ ইন্ট্রিগ্রেট করা থাকে। এটা করা হয় পাওয়ার কঞ্জাম্পশন কমিয়ে আনার জন্য এবং সেই সাথে মাদারবোর্ডের আকার ছোটো করার জন্য। তাই স্মার্টফোনের গ্রাফিক্স চিপ গুলো কম্পিউটারের এক্সটারন্যাল গ্রাফিক্স চিপের মত শক্তিশালি না। তাই আপনি চাইলেই স্মার্টফোনে কম্পিউটারের মত গ্রাফিক্স ইন্টেন্সিভ কোনো কাজ করতে পারবেন না। যেমনঃ হাই এন্ড গেইম খেলা, ভিডিও রেন্ডারিং, কন্টেন্ট ক্রিয়েটিং, ৩ডি এনিমেশন ইত্যাদি।
ডিসপ্লেঃ কম্পিউটারের ডিসপ্লে স্মার্টফোনের চেয়ে অনেক বড় এবং অনেক কাজের জন্য উপযোগী। যেমন আমরা কেউই কম্পিউটারে কোডিং, ভিডিও এডিটিং, ওয়ার্ড / স্প্রেড শিটে লিখালিখি, ডিজাইনিং এসব করতে চাইবো না। এসব কাজের জন্য বড় আকারের স্ক্রিন লাগবে।
আপগ্রেডেবিলিটিঃ স্মার্টফোনের কোনো কিছু ইউজার আপগ্রেডেবল না। আপনি যে কনফিগারেশনের ফোন কিনবেন ২ বছর পরে আপনার ডিভাইসের র্যাম কম মনে হলেও আপগ্রেড করার সুযোগ থাকবেনা। কিন্তু সকল ডেক্সটপ কম্পিউটারে এবং অধিকাংশ ল্যাপটপেই ইউজার আপগ্রেডিবিলিটি অপশন থাকে।
স্টোরেজঃ স্মার্টফোনের ম্যাক্সিমাম র্যাম এবং পার্মানেন্ট মেমরির ক্ষমতা একটি কম্পিউটারের তুলনায় অনেক কম। আর চাইলেও সেরকম দেয়া সম্ভব না বর্তমান টেকনোলজিতে।
অপারেটিং সিস্টেমঃ স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম আর কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। স্মার্টফোনে আপনি সার্ভার সেটআপ করতে পারবেন না। (টেকনিক্যালি পারবেন তবে অনেক সার্ভিসই কাজ করেনা)। এছাড়াও স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম খুবি লাইট ওয়েট এবং লো পাওয়ার কঞ্জিউম করবে এমনভাবে বানানো। অল্প রিসোর্স ব্যবহার করেই অপারেটিং সিস্টেম গুলো রান করে। কার্নেল এবং আর্কিটেকচার ও ভিন্ন তাই চাইলেই আপনি ডেক্সটপের অপারেটিং সিস্টেমকে স্মার্টফোনে সরাসরি ইন্সটল করতে পারবেননা।
এপ্লিকেশন সফটওয়্যারঃ বেশিরভাগ প্রফেশনাল সফটওয়্যার গুলোই কম্পিউটারের জন্য তৈরি করা এবং এটা স্বাভাবিক। এতক্ষণের আলোচনায় আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
স্মার্টফোনকে যে কম্পিউটারের মত শক্তিশালি করে তোলা যাবেনা এমন না। অবশ্যই যাবে। তবে বর্তমান টেকনোলোজি আমাদের এর বেশি অফার করতে পারছেনা। তাছাড়া স্মার্টফোন হাতে এবং পকেটে বহনযোগ্য ডিভাইস তাই এর ব্যবহারের উপরে নির্ভর করে এর গঠন এবং কাজ নির্ধারন করা হয়েছে।
rahatahmed09 publisher