মুসলিমদের জন্য কেন গান হারাম সেটা বুঝার জন্য আপনাকে ইসলামের ইতিহাস নিরপেক্ষ ও নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে।
ইসলামি নিয়ম কানুনের ভিত্তি হল কোরান আর হাদিস। কোরান সংকলিত হয়েছে মুহম্মদ সঃ এর মৃত্যুর দুই বছর পর আর হাদিস তার মৃত্যুর একশ বছরেরও পর।
হাদিস সংকলন শুরু হয় উমাইয়া খলিফা ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের আমলে।
মুহম্মদের মৃত্যুর মাত্র ৯ বছর পর ওসমান; যাঁর হাত ধরে পরবর্তীতে উমাইয়া খলিফারা ইসলামী খেলাফতে চালকের আসনে বসেন। ক্ষমতার জেরে হজরত আলীর সাথে মুয়াবিয়া (উসমানের কাজিন) এবং হাসানের (মুহম্মদ সঃ এর নাতি) সাথে এজিদের যুদ্ধ হয়। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা সকলেই জানেন। উমাইয়া খলিফা ওলীদ ইবনে আব্দুল মালিক ক্ষমতা ধরে রাখতে কাবা আক্রমণ করেন। যুদ্ধে কাবা ধ্বংস হয়।
তখনকার সাধারণ মানুষ উমাইয়া খলিফাদের ঘৃণা করত। তারা খুতবা দিতে গেলে খুতবা শুনতে চাইত না৷
এদের মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ। মানুষ তাকে পছন্দ করত।
আল্লামা বালাযুরি যিনি ছিলেন আব্বাসী আমলের ঐতিহাসিক তিনি তাঁর বইয়ে একমাত্র ওমরের নামের আগেই আমীরুল মুমিনিন শব্দ ব্যবহার করতেন।
ইসলামে গান নিষিদ্ধের যেসব হাদিস পাওয়া যায় তা সবই বনু উমাইয়া আমলে তৈরি। আপনি কুরানে গানের বিরুদ্ধে কোনো আয়াত দেখাতে পারবেন না।
তৎকালীন গীতিকার, গায়ক, কবিরা তাদের গানে গানে উমাইয়াদের সমালোচনা করত। তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ধর্মের চেয়ে বড় অস্ত্র আর কী হতে পারে? গোয়েবলসরা ত ঐ যুগেও ছিল। এসব হাদিস খলিফাদের সপক্ষে প্রচারিত হয়। ক্রমে ক্রমে সেগুলো টেক্সটে স্থান পায়৷
মুসলিমদের সমস্যা হল তারা মোল্লাদের কথার উপর ভরসা করে বসে থাকেন৷ নিজেরা একটু নির্মোহভাবে ইতিহাস পাঠ করলে অনেক গোঁমর ফাঁস হয়ে যেত।
তথ্যসূত্র:
খেলাফতে বনু উমাইয়া— কাজী জয়নুল আবেদিন
হাদীসের ইতিহাস অনুসন্ধান- আল্লামা মুরতাজা আসকারী
fardinashik publisher