Answered 2 years ago
মাছ কিনতে গেলে বা একদরের ছাড়া প্রায় যেকোন জিনিশ কিনতে গেলে মনে রাখবেন যিনি বিক্রেতা আছেন, তিনি বিক্রি অনেক দিন ধরে করে আসছেন। প্রতিদিন আপনার মত অনেক ক্রেতার সাথে নেগোসিয়েশন করে যাচ্ছেন।
তার কাছে এটা গেইমের মত। আপনাকেও সেইরকম ভাবে ব্যাপারটাকে দেখতে হবে। দামাদামি করতে এখানে লজ্জা পাবার কিছু নেই।
বিক্রেতা অবশ্যই কিছু সাইকোলজিক্যাল ট্রিক ব্যবহার করেন। মাছের বাজারের বিক্রেতারা এক্ষেত্রে একেকজন এক্সপার্ট।
আপনার প্রথম কাজ হল, মাছের বাজারের বিক্রেতাদের এই দক্ষতা বা পারসুয়েশন/ নেগোসিয়েশনের জ্ঞানকে স্বীকার করা।
এরপর, আপনি নেগোসিয়েশনে কিছু জিনিশ এপ্লাই করতে পারেন।
প্রথমত, উনি দাম বলার পর, জিজ্ঞেস করবেন, সর্বনিম্ন কত রাখতে পারবেন? বা একদাম বলেন?
এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে চুপ থাকবেন।
এটি কমন টেকনিক তাই বিক্রেতা আগেই দাম বাড়িয়ে বলে থাকেন।
তাই আপনাকে কয়েকবার এই প্রশ্ন করতে হতে পারে।
বিক্রেতা এক্ষেত্রে আপনাকেই প্রশ্ন করতে পারেন, আপনি একদাম বলেন, কত'তে নিতে চান?
শুরুতেই নিজে দাম বলার আগে বিক্রেতা যদি আপনাকে এই প্রশ্ন করেন আপনি কত তে নিতে চান বা আপনার বাজেট কত, উত্তর দিবেন না।
নেগোসিয়েশনের পর্যায়ে, দাম বলতে হলে, কম দাম থেকে শুরু করেন। কারণ এখান থেকে ধীরে আপনি বাড়াতে পারবেন।
দাম বলার সময় এমন দাম বলতে চেষ্টা করবেন, যা অন্যরা বলে না।
যেমন শেষ ৩৯২ টাকা দিব।
আমি শেষ দাম ৫৯৫ টাকা দিতে পারব।
বিক্রেতা এই ধরণের দাম সাধারণত শুনে না। সে অফগার্ড হয়ে যেতে পারে।
দাম বলার পর বিক্রেতার মুখের রিয়েকশন লক্ষ করবেন।
খেয়াল করলে দেখবেন, বিক্রেতারা নিজেরা দাম বলার পর আপনার মুখের দিকে তাকায়। আপনার রিয়েকশন দেখে বুঝার চেষ্টা করে।
আপনি যদি দেখেন বিক্রেতার মুখের রিয়েকশন কঠিন, ধরে নিতে পারেন সে দাম কমাবে না। কিন্তু ইজি রিয়েকশন হলে ধরে নিবেন দাম কমানোর জায়গা তার আছে।
একইভাবে বিক্রেতা দাম বললে আপনি মুখে রিজিড রিয়েকশন দেখান, এমন ভাব যে এই দামে আপনি নিতেই পারবেন না, অসম্ভব।
মাছের কোয়ালিটি খারাপ বা এর খুত ধরতে থাকবেন। কানকো মনে হচ্ছে লাল না, ফ্যাকাসে লাগছে, রঙ দেয়া কি না, ইত্যাদি ইত্যাদি।
কারণ সত্যি এরকম হয়ে থাকলে, বিক্রেতা ভয় পাবে আপনি হয়ত বুঝে গেছেন খুত। এতে সে দাম কমাতে পারে।
মাছ ভালো থাকলেও এটা দাম কমানোর একটা উপায়।
এরপর বিক্রেতার সাইকোলজিক্যাল হিশাব নিকাশে বিভ্রান্তি আনার চেষ্টা করবেন। বলবেন এই মাছের সাথে ঐগুলা সহ কত দাম হবে?
সে হিশাব করে বলবে।
তখন আরও কিছু যোগ করবেন ও আগের যোগ করা গুলি বাদ দিয়ে দাম জিজ্ঞেস করবেন।
এইভাবে করলে বিক্রেতা যে প্রাইস ভেবে দামাদামি করছিল তা ঝামেলায় পড়ে যাবে।
দামাদামির এক পর্যায়ে, আপনি যেগুলা যোগ করেছিলেন সেগুলা বাদ দিলে, আপনার কিনতে চাওয়া মাছের দাম আগের চাইতে কমে পেতে পারেন।
এমনভাবে দামাদামি করবেন যে, আপনার কোন তাড়া নেই। আজ মাছ না কিনলেও হবে। এদিক দিয়ে যাচ্ছিলেন তাই বাজার ঘুরে যাচ্ছেন। বিক্রেতা যদি বুঝতে পারে আজ আপনার মাছ কিনতেই হবে, তাহলে দাম কমাবে না।
নেগোসিয়েশনে যে ডেসপারেট থাকে সে হারে।
দামাদামি করার আগে মাছের বাজার একবার চক্কর দিবেন। দেখবেন কীরকম মাছ বিক্রি হচ্ছে, অন্যেরা কীরকম কিনছেন। এতে ঐদিনের বাজার সম্পর্কে আইডিয়া হবে।
Ripon Ahmed publisher