Answered 3 years ago
আমি একজন গর্বিত ভারতীয়। আমার জন্ম মুসলিম পরিবারে। ছেলেবেলায় প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি পিতৃতুল্য সঞ্জীব স্যারের কাছে। তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী।তাঁর অনুপ্রেরণাই আমাকে জ্ঞানের জগতে প্রবেশ করিয়েছেন। তিনি জাতে ব্রাহ্মণ হলে কী হবে, সব ধর্মগ্রন্থের জ্ঞান ছিল তাঁর নখদর্পণে। তিনিই উৎসাহিত করেছিলেন সব ধর্মগ্রন্থ পড়ার জন্য। সংস্কৃত ভাষাও শিখেছিলাম ওনার প্রেরণায়। তিনি শুধু আমার গুরু ছিলেন না। তিনি হলেন আমার প্রেরণা, আমার সাহস, আমার ভক্তি ও শক্তির আধার। তিনি সর্বদা বলতেন তোদের ধর্মের প্রথম বচনই হলো "ইকরা, বে ইসমে রাব্বিকা"। মানে "পড়ো, তুমি তোমার প্রভুর নাম নিয়ে "।আরো ভালো করে বলতে গেলে ইসলামের প্রথম নির্দেশই হলো প্রথম জ্ঞান অর্জন করো, বোঝো তারপর মানো।কোরআন শুধু মুসলমানদের সম্পত্তি নয়, সে সাক্ষ্য বহন করছে স্বয়ং কোরআন। কোরআন সমগ্র মানব জাতির জন্য উন্মুক্ত জ্ঞান ভাণ্ডার, সেটাও জেনেছিলাম ওই শিক্ষকের কাছে।
পরে পুরাণ, বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, বাইবেল থেকে শুরু করে হাদিস, ফেক্বাহ সভ্যতার বিবর্তন সবই পড়ার সুযোগ আসে মাতৃভূমির উদার নিয়ম নিতীর ফলে। মানুষকে মানুষ হবার সুযোগ দেয় আমার মাতৃভূমি ভারত।
আমার মাতৃভূমি আমার কাছে গর্ব। একজন সনাতন ধর্মের মানুষ প্রথম দীক্ষা দিয়েছিলেন মানুষ হবার জন্য। এমন দেশ আপনি কোথায় খুঁজে পাবেন বলুন। যেখানে মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরু দোয়ারা,প্যাগোডা সবের প্রার্থনায় আকাশ বাতাস বিশুদ্ধ। হ্যাঁ, আমি গর্বিত ভারতীয় হয়ে জন্মানোর জন্য।
ভারত আমার গর্ব। ভারত আমার গরিমা। আমায় পুর্ণ বাক্স্বাধীনতা দিয়েছে আমার মাতৃভূমি। তাই আজ আরও কিছু লিখবো….
আমার পরিচয় প্রথমে মানুষ, দ্বিতীয় ভারতীয় মুসলিম।
আমার দেশ আমাকে সহিষ্ণুতা শিখিয়েছে।
আমার দেশ আমাকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হওয়ার অধিকার দিয়েছে।
আমার স্কুল পাঠক্রমের মান খুবই নিম্ন। কোনো এক জেদের বসে ইচ্ছা করে ফেল করে বিদ্যালয় ছাড়ি। তার পরও নিজের মতো করে পড়াশোনা চালাই। সেটাও সম্ভব করেছে আমার দেশ।
আমরা, মানে সত্যিকার ভারতীয়রা আজও মনে প্রানে বিশ্বাস করি… আমরা একটাই জাতি, আমরা সবাই ভারতবাসী।
ভগৎ সিং, ক্ষুদিরাম বসু, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, গান্ধীজী, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি নজরুল, স্বামী বিবেকানন্দ, এ পি জে আবদুল কালামদের মতো মহামানবেরা সকল ভারতবাসীর আদর্শ।
tonmoyshek publisher