Answered 2 years ago
কিছুকাল আগেও ব্রিটিশরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভাল ছিল কিন্তু বর্তমানে তা আর নেই।
লন্ডনে চারটি কমিউনিটি কিচেনের সামনে ক্ষুধার্থ মানুষের ভিড় ক্রমাগত বাড়ছে। প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার লন্ডনবাসিকে তাজ খান প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি কিচেন্স খাদ্য সরবরাহ করছে।
সিঙ্গেল মাতা মিজ রুজি একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কাজ করেন। তিনি প্রতি সপ্তাহে কমিউনিটি কিচেন থেকে তাঁর এবং তাঁর সন্তানের জন্য খাবার সংগ্রহ নিয়ে যান। তিনি বলেন খাদ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম দ্রুত বাড়ছে কিন্তু তিনি যে বেতন পান তাতে চলে না। কমিউনিটি কিচেনের সরবরাহ খাদ্য তার জীবনে কিছুটা স্বস্তি এনেছে।
কমিউনিটি কিচেনের পরিচালক তাজ খান বলেন, বিভিন্ন সুপার মার্কেটে যে সমস্ত খাদ্যের মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে আসছে, যেগুলো তারা দু'তিন দিন পর ফেলে দেবে তা আমরা সংগ্রহ করে নিয়ে আসি এবং এখান থেকে এক দিনেই সেগুলো বিতরণ করে দেই। আমরা সুপার মার্কেটগুলোকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, বর্তমান অর্থনৈতিক জটিল পরিস্থিতিতে মানুষকে ক্ষুধা থেকে বাঁচাতে সবাই মিলে চেষ্টা করতে হবে এবং খাদ্যের ক্ষেত্রে একটি দানাও অপচয় না করার পলিসিতে যেতে হবে।
মিস্টার কুপার দক্ষিণ ইংল্যান্ডে তার ছোট দুটি ছেলে মেয়েসহ বসবাস করেন। তিনি একটি দোকান চালান। আগে সর্বদাই তার গৃহে পর্যাপ্ত খাদ্য থাকতো কিন্তু বর্তমানে তিনি দুর্বিষহ খাদ্য সংকটে পড়েছেন। প্রায়শ ছেলে মেয়েকে খাওয়ানোর পর আর "হার্ড ফুড" অবশিষ্ট থাকেনা। তিনি কেবলমাত্র সামান্য চিপস এবং এক কাপ কফি খেতে পারেন। তিনি বলেন, প্রচণ্ড শীতের ভেতরেও রুম হিটার চালু করা তার জন্য এখন বিলাসিতা।
তাজ খান জানান লন্ডনের অনেক অধিবাসীর পক্ষে এখন হার্ড ফুডের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় না। তিনি ভলেন্টিয়ারদের সহযোগিতা নিয়ে বিনা মূল্যে হার্ড ফুড খাওয়ানোর জন্যও একটি কিচেন খুলেছেন। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এ বিষয়ে তাজ খানকে প্রয়োজনীয় আর্থিক এবং প্রশাসনিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন।
মেয়র সাদিক খান বলেন আমি নিজেও অত্যন্ত দুঃখবোধ করি, কারণ এক সময়ের ধনী, সমৃদ্ধ ব্রিটিশ জাতির অনেকে এখন দৈনন্দিন খাদ্য সংগ্রহের জন্য সংগ্রাম করছে। প্রতি চারটি শিশুর মধ্যে একটি শিশু বর্তমানে তিন বেলার পরিবর্তে দুই বেলা খাবার খেয়ে চালাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে কি হতে যাচ্ছে তা আমার জানা নেই।
খাদ্য এবং জ্বালানির দাম দ্রুত বেড়ে যাওয়ার ফলে ব্রিটেনে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়া লোকের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর যাদের ছোট সন্তান রয়েছে তারা আরও দ্রুত দরিদ্রসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে।
rahatahmed09 publisher