লোভ-লালসা মানুষের অন্তরের মারাত্মক ব্যাধি। সীমাহীন লোভ-লালসা মানুষকে তার সামর্থ্যের বাইরে ঠেলে দেয়। তার বিবেক-বুদ্ধি লোপ করে তাকে দুর্নীতি ও পাপের পথে পরিচালিত করে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জবরদখল, ঘুষ-দুর্নীতি, মারামারি, হানাহানি, সন্ত্রাস, বোমাবাজি, অপহরণ, গুম, খুনখারাবিসহ অধিকাংশ সামাজিক অনাচার বা বিপর্যয়ের পেছনে লোভ-লালসার বিরাট প্রভাব রয়েছে। তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) লোভ-লালসাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বলেছেন, ‘তোমরা লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকো, কেননা এ জিনিসই তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করেছে এবং পরস্পরকে রক্তপাত ঘটানোর ব্যাপারে উসকিয়ে দিয়েছে। লোভ-লালসার কারণেই তারা হারামকে হালাল সাব্যস্ত করেছে।’ (মুসলিম)
যদি বৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের পরও মানুষের মনে তৃপ্তি না আসে, তাহলে বুঝতে হবে যে তার মনে লোভ বাসা বেঁধেছে। লোভী ব্যক্তি নিজের অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চায় না। হাতে যা আছে তাতে সুখী না থেকে অন্যায়ভাবে আরও বেশি কিছু পাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। অতিরিক্ত কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ও অন্যের বস্তু আত্মসাৎ করার প্রবণতা ইসলামসম্মত নয়। লোভাতুর দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তির জীবনে কখনো শান্তি আসতে পারে না। লোভের বশবর্তী হয়ে কিছু মানুষ ধর্ম-কর্ম ভুলে নিজের জীবনের সর্বনাশ ডেকে আনে। লোভ-লালসা মানুষকে অন্ধ করে তার বিবেক-বুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে তাকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং ভালো-মন্দ, পাপ-পুণ্য বিচারের ক্ষমতা নির্মূল করে ফেলে। তাই লোভ মানুষের চরম শত্রু, জীবনের বিনাশ সাধনই এর কাজ।
লোভ-লালসা নিয়ন্ত্রণ ও দমন করতেই হবে, নইলে মানুষের নৈতিকতার বিকাশ, সৎ ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন করা সম্ভব হবে না। দুর্নীতিবাজ লোভাতুর ব্যক্তি কখনো পরোপকার বা জনকল্যাণকর কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয় না। লোভ-লালসা বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যেমন অর্থ-সম্পদ, মান-সম্মান, প্রভাব-প্রতিপত্তি, ক্ষমতা, পদমর্যাদা, প্রসিদ্ধি ও সুখ্যাতি লাভের প্রবল লোভ মানব চরিত্র গঠন ও সংশোধনের পথে বিরাট অন্তরায়। এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে অপর কারও ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, তোমরা তার লালসা করো না।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩২)
তথ্যসূত্রঃ- প্রথম আলো।।
bivorshaim publisher