বিয়ে করতে যাচ্ছি কী পরামর্শ দিবেন?

1 Answers   10.4 K

Answered 2 years ago

রাসূল (সা.) বলেন- যে বিবাহ করার ইচ্ছা করে, সে যেন দ্বীনকে প্রাধান্য দেয়। অন্য হাদিসে এসেছে, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদের বিয়ে করা হয়- সম্পদ, বংশমর্যাদা, সৌন্দর্য ও দ্বীনদারি। সুতরাং তুমি দ্বীনদারিকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে (সহিহ বুখারি)।

মনের ভালোবাসা মুখে প্রকাশ করা

হজরত খাদিজা (রা.) সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আমার মনে তার প্রতি ভালোবাসা ঢেলে দেওয়া হয়েছে’ (মুসলিম)। হজরত আয়েশা (রা.)-কে বলেছেন, ‘সবার চেয়ে আয়েশা আমার কাছে এমন প্রিয়, যেমন সব খাবারের মধ্যে সারিদ (আরবের বিশেষ এক ধরনের খাদ্য) আমার কাছে বেশি প্রিয়’ (সহিহ বুখারি)। তাই স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কথা মুখে প্রকাশ করুন।

নিজেকে পরিপাটি রাখা

পুরুষরা তাদের সঙ্গিনীকে সুন্দরভাবে দেখতে পছন্দ করে। ঠিক একইভাবে তারা তাদের সঙ্গীকেও সুন্দরভাবে দেখতে পছন্দ করে। রাসূল (সা.) বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীদের জন্য এমনই পরিপাটি থাকা পছন্দ করি, যেমন আমি তাদের ক্ষেত্রে সাজগোজ করে থাকতে পছন্দ করি’ (বাইহাকি, হাদিস : ১৪৭২৮)।

স্ত্রীর প্রতি সব সময় আন্তরিক থাকা

স্ত্রীর সঙ্গে সব সময় আন্তরিক আচরণ করতে হবে। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) ভালোবেসে কখনো কখনো আমার নাম হুমায়রা বা লাল গোলাপ বলে ডাকতেন (ইবনে মাজাহ)। তিনি আরও বলেন, পাত্রের যে অংশে আমি মুখ রেখে পানি পান করতাম তিনি সেখানেই মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে পছন্দ করতেন (মুসলিম)।

স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা

স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করা পারিবারিক সুখের অন্যতম চাবিকাঠি। তার পাওনাগুলো পরিপূর্ণভাবে আদায় করতে হবে। তার অধিকার বুঝিয়ে দিতে হবে। তার নিত্যদিনের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা পুরা করতে হবে। রাসূল (সা.) বলেন- তোমাদের মধ্যে সেই ভালো যে তার পরিবারের কাছে ভালো। আর আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের চেয়ে উত্তম (আত-তিরমিজি)।

স্ত্রীর মনোরঞ্জন

পারিবারিক শান্তির জন্য স্ত্রীর মনোরঞ্জন অপরিহার্য। রাসূল (সা.) আপন স্ত্রীদের সঙ্গে বিনোদনমূলক আচরণ করেছেন। আয়শা (রা.) এক সফরে নবী (সা.)-এর সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি তার সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করে তার আগে চলে গেলাম। অতঃপর আমি মোটা হয়ে যাওয়ার পর (অন্য আরেক সফরে) তার সঙ্গে আবারও দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম, এবার তিনি (রাসূল সা.) আমাকে পেছনে ফেলে দিয়ে বিজয়ী হলেন। তিনি বলেন, এ বিজয় সেই বিজয়ের বদলা (আবু দাউদ)।

একে অপরের কাজে সহযোগিতা

নবীজি (সা.)-এর প্রিয়তমা স্ত্রী হজরত আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়, নবীজি কি পরিবারের লোকদের তাদের ঘরোয়া কাজে সহযোগিতা করতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, নবীজি ঘরের লোকদের তাদের কাজে সহযোগিতা করতেন এবং নামাজের সময় হলে নামাজের জন্য যেতেন (সহিহ বুখারি)। সুখী জীবনের জন্য সুযোগ পেলেই পারিবারিক কাজে সহায়তা করতে হবে।

পরিবারের সঙ্গে অধিক সময় কাটানো

হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে দু-জাহানের মুক্তির পথ কী, তা জানতে চাইলাম। উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.) তিনটি উপদেশ দিলেন। ১. কথাবার্তায় আত্মসংযমী হবে। ২. পরিবারের সঙ্গে তোমার অবস্থানকে দীর্ঘ করবে। ৩. নিজের ভুল কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হবে (তিরমিজি)।

সঙ্গিনীর সঙ্গে পরামর্শ করা

জীবনের যে কোনো বিষয়ে জীবন সঙ্গিনীর মতামতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে। নবীজি শুধু ঘরোয়া বিষয়ই নয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীদের মতামত নিতেন। ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ নামক ইসলামি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপটে নবীজি তার স্ত্রী উম্মে সালমা (রা.)-এর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন। পরবর্তী সময় যা অতি কার্যকরী বলে বিবেচিত হয় (বুখারি)।

আল্লাহর কাছে দোয়া

পরিবারে সুখ-শান্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। কীভাবে দোয়া করতে হবে আল্লাহ আমাদের তা শিখিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করো এবং আমাদের মুত্তাকিদের জন্য আদর্শস্বরূপ করো (আল কুরআন ২৫/৭)।

Full Khatun
fullkhatun
231 Points

Popular Questions