Answered 2 years ago
১) ওরা প্রথম শ্রেণী থেকে সাধারণ জ্ঞান ও কম্পিউটার পড়ে,আমরা graduation এর পর পড়ি!
২) ওরা পাশকোর্স এ graduation করার সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটার ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়,আমরা এম এ, বি এড,পি এইচ ডি, পোস্ট ডক এর মোহে আকৃষ্ট হয়ে থাকি।
৩) ওরা টার্গেট করে ইউপিএসসি,সিজিএল আই এ এস,আইপিএস,আমাদের লক্ষ্য ও মোক্ষ এস এস সি বা সি এস সি।
৪) ওরা দু-তিন জনের গ্রুপ করে দিল্লি গিয়ে একটা ঘরে অতি কষ্টে বাস করে,মেসে সারাদিন পড়াশোনা করে,সামান্য রুটি আচার আলুচোখা দিনের পর দিন খেয়ে আকাশ বা ঐরকম কোনো নামী কোচিং সেন্টারে পড়ে।যা করে জান প্রাণ বাজি রেখে করে,কারণ পিছনে কোনো ঠেকা নেই! আমরা ফর্ম পূরণ করি কিন্তু সিরিয়াসলি ১০০ জনের মধ্যে তিনজন পড়ি।আমরা রাজ্যের বাইরে বেরুই না, সি-টেট,ইউপিএসসি দিই না। ইংরেজিতে কাঁচা অথচ হিন্দি শিখব না বলে বাপের নামে কিড়ে করে বসে থাকি! আমরা জানি চাকরি না পেলে বাবার পেনশন ও গ্র্যাচুইটির টাকা আছে। আর সমযোগ্যতার না হলেও গ্রামের নন ম্যট্রিক বাঙালী মেয়ে বিয়ে করা কষ্টসাধ্য নয়!
৫) ওরা আমাদের মতো রাজনীতি বোঝে না বা বুঝতে চায় না।আমরা সর্বগ্রাসী রাজনীতি খুব পছন্দ করি।আমরা বাবমায়ের জন্য বার্ধক্য ভাতা আর প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় মুফতে একটা বাড়ি পেলেই সন্তুষ্ট! দাদা দিদিদের পিছনে ঘুরঘুর করবো।
৬) ওদের সূক্ষ্ম বুদ্ধি কম আর বাস্তব বুদ্ধি বেশি।তাই ওরা প্রেম না করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে (পণে সব খরচ উঠিয়ে নিয়ে) সামাজিক বিবাহ করে (পণ বা যৌতুক নেওয়া কে সমর্থন করছি না কোনোভাবেই!)। আমরা ক্লাস এইট থেকে কবিতা লিখতে শুরু করে বেকার অবস্থায় আর একটি বেকারের সারা জীবনের দ্বায়িত্ব নিয়ে নিই বাবার সম্পত্তির উপর ভরসা করে।
৭) ওরা চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পরীক্ষাও দেয়।আমরা গ্রেড দেখি, বেতন কাঠামো দেখি,বাংলার মধ্যে পোস্টিং হবে কি না বিচার করি প্রস্তুতিতে সময় ব্যয় না করে!
৮) ওদের দেহাতের ছেলেরাও পশ্চিমবঙ্গের গ্রামের স্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসে বাংলার ব না জেনে।(নিজের চোখে দেখা!) আমরা বেড়াতে চিকিত্সার জন্য বা শ্রমিকের কাজ করতে পশ্চিম বা দক্ষিণ ভারত যেতে পারি কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিতে নয়!
৯) আমরা সাহিত্য চর্চা করি বাবা! ওদের মতো প্রতিরক্ষা বা আধা সামরিক বাহিনীতে কাজ করা আমাদের পোষায় না!
১০) ওরা ওপরমহলের সমর্থন পায় আমরা পাই না- সম্পূর্ণ সত্য নয়।তাহলে রেল,এল আই সি,স্টেট ব্যাঙ্কে এত বাঙালী থাকতো না!
এই আমরা আমাকে বাদ দিয়ে নয়। সুতরাং আমি নিজেও ওই দোষে দুষ্ট ছিলাম।তবে জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে অনুভব করেছি যা তাই লিখলাম।চাকরি একটা পেয়েছি ঠিকই কিন্তু এই সত্যগুলি আগে অনুভব করলে হয়তো আরো অনেক আগে পেতাম! সুতরাং প্রাদেশিকতা দিয়ে দয়া করে নিজেদের ত্রুটি ঢাকতে আসবেন না।কারণ তাতে আমি চুপ করে থাকলেও বাস্তব পালটে যাবে না!ধন্যবাদ।
Hurairafaika publisher