Answered 2 years ago
যদিও বিদেশে পড়াশুনা কতটা কঠিন সেটা নিজের উপর নির্ভর করে তারপরও আমি বলবো যে বিদেশে পড়াশুনা করতে হলে কিছু কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত।
আমার দেখা উপমহাদেশ থেকে আসা বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীই স্ট্রাগল করে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে বিভিন্ন এক্সটার্নাল প্রবলেম। আপনি যখন একটা অচেনা দেশে যাবেন, তখন আপনি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন যেগুলোর সঙ্গে আপনি অপরিচিত। আর এই চ্যালেঞ্জগুলো মুকাবিলা করতে আপনাকে একজন স্থানীয় ছাত্র কিংবা ছাত্রীর চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট করতে হবে যেটা আপনার পড়াশুনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে ফাইনান্সিয়াল সমস্যা। বিদেশে টিউশন ফি এবং লিভিং কষ্ট অনেক বেশি। তাই যারা স্কলারশীপ ম্যানেজ করতে পারে না তারা বিভিন্ন অড জব করে। এগুলোর বেশীরভাগই শারীরিকভাবে কষ্টকর কাজ হয়ে থাকে। সারাদিন দাড়িয়ে দাড়িয়ে কাজ করার পর বাসায় এসে পড়াশুনা করার এর এনার্জি থাকে না। তৃতীয় সমস্যাটি একটু অদ্ভুত কিন্তু এটি খুবই কমন একটি সমস্যা। বিদেশে আসার পর অনেকেই প্রথম দিকে একটু একাকীত্বে ভুগে। আর ওই একাকীত্বের সময়টাতে তারা তাদের নিজ দেশে কোনো ছেলে কিংবা মেয়ের সাথে অনলাইনে কিংবা ওভার দ্যা ফোন এ একটি সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। তারপর একসময় লং ডিসটেন্স এর কারণে সম্পর্কটি প্যারাময় হয়ে উঠে। তখন লেখাপড়া গোল্লায় যায়।
এতো গেলো এক্সটার্নাল প্রবলেমের কথা। এখন কিছু প্রবলেমের কথা বলবো যেগুলো পড়াশুনার সাথে সরাসিভাবে সম্পর্কিত। বাংলাদেশের হাতেগোনা দুই একটা ইউনিভার্সিটি ছাড়া কোনো ইউনিভার্সিটিতেই একাডেমিক রাইটিং এর স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করা হয় না। ফলে এবিষয়টির সাথে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীই অপরিচিত থাকে। আর এজন্য বিদেশে আসার পর তারা প্রথম ধাক্কাটা খায় যখন তাদের তাদের কোনো একটা টার্ম পেপার প্লেইজারিজমের কারণে বাতিল হয়ে যায়। তাছাড়া বাংলাদেশে বেশিরভাগ ইউনিভার্সিটিতে তাদের প্রোগ্রামের কোর্সগুলোর সিলেবাস অনেক ছোট থাকে। বিদেশে ভালো কোনো ইউনিভার্সিটিতে পড়লে একই কোর্সের সিলেবাস দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ বড় থাকবে। বাংলাদেশে অনেক ইউনিভার্সিটিতে মিড টার্ম এবং ক্লাস টেস্ট থাকে, যেটার কারণে সিমেস্টার ফাইনালে টোটাল মার্কস অনেক কম থাকে। আমি সব দেশের কথা বলতে পারবো না। আমি জার্মানিতে পড়াশুনা করেছি। তাই এখানকার কথা বলতে পারবো। এখানে কোনো মিড টার্ম কিংবা ক্লাস টেস্ট নেই। সিমেষ্টার শেষে আপনাকে একবারে বিশাল সিলেবাসের ১০০ মার্কের পরীক্ষা দিতে হবে। তাছাড়া এখানে কোর্সগুলোর তে পাশের হার বাংলাদেশের মতো এত বেশি থাকে না। STEM প্রোগ্রামগুলোর কোর্সগুলোতে পাশের হার ৩০% থেকে ৪০% এর মত হয়ে থাকে কারণ এখানে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় আপনাকে যাচাই করার পরিবর্তে তারা আপনাকে চ্যালেঞ্জ করবে। আর মাঝে মাঝে কিছু কিছু পাগলা প্রফেসরের সন্ধান পাবেন যাদের কোর্সে পাশের হার ১০% এরও কম থাকবে।
তারপরও আমি বলবো যে বিদেশে পড়াশুনা করার সক্ষমতা থাকলে অবশ্যই করা উচিত। কারণ পড়াশুনা শেষ করতে পারলে আপনার জন্য অনেক সুযোগ থাকবে।
suriyamimpi publisher