Answered 2 years ago
এ এক সাঙ্ঘাতিক খেলা। শরীরে দড়ি বেঁধে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে শূন্যে ঝাঁপ দেওয়া। তাই আডভেঞ্চার স্পোর্টসের মধ্যে বাঞ্জি জাম্পিংকে অন্যতম সেরা বলা যায়। যাঁরা পাখির মতো উড়তে চান অথচ হৃৎপিণ্ড দুর্বল নয়, তাঁরা এই ঝাঁপ দিয়ে দেখতে পারেন।
বাঞ্জি জাম্পিং মৃত্যুর মতো অনুভূতি এনে দিতে পারে। ভাবুন তো কয়েকশ বা কয়েক হাজার মিটার ওপর থেকে আপনি নিচে নেমে আসছেন। কেমন লাগবে সে অভিজ্ঞতা? তবে ভয়ডর ভুলে একবার ঝাঁপিয়ে পড়লে পরবর্তী মুহূর্তগুলোও কিন্তু সারাজীবন মনে রাখার মতোই। অভিকর্ষজ ত্বরণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাটিতে পড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে দড়িতে আটকে গেলে মনে হবে সেটাই পৃথিবীর সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক মুহূর্ত!
ফিরে দেখা
১৯৭৯ সালের ১ এপ্রিল ব্রিস্টলের ক্লিফটন সাসপেনশন ব্রিজের ২৫০ ফুট (৭৬ মি) উঁচু থেকে ঝাঁপ দেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ডেঞ্জারাস ক্লাবের দুই সদস্য ডেভিড কিরকে ও সাইমন কিলিং এবং পেশাদার ক্লাইম্বার জিওফ টেবিন। সেটাই ছিল প্রথম আধুনিক বাঞ্জি জাম্পিং। কিছুদিনের মধ্যেই এই ধরনের ঝাঁপ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয় তবে আমেরিকার গোল্ডেন গেট ব্রিজ ও রয়েল জর্জ ব্রিজ থেকে বাঞ্জি জাম্পিং চলতে থাকে। ১৯৮২ সাল থেকে এই ঝাঁপ মোবাইল ক্রেন ও গরম এয়ার বেলুন থেকে হতে শুরু করে।
নিউজিল্যান্ডের এ জে হ্যাকেটকে দিয়ে সংগঠিত ভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাঞ্জি জাম্পিং শুরু হয়। তিনি ১৯৮৬ সালে অকল্যান্ডের গ্রিনহিত ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দেন। পরবর্তী বছরগুলিতে এ জে হ্যাকেট ব্রিজ ও নানা কাঠামো (যেমন, আইফেল টাওয়ার) থেকে প্রচুর ঝাঁপ পরিবেশন করেন। ১৯৮০ সাল থেকে কয়েক লক্ষ সফল বাঞ্জি জাম্পিং-এর ঘটনা ঘটেছে। আর এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে জাম্প পরিচালনার জন্য বাঞ্জি অপারেটরদের কঠোরভাবে নির্দিষ্ট মানদণ্ডগুলি মেনে চলা। আর তার ফলে বাঞ্জি জাম্পিং-এর জনপ্রিয়তাও ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে।
উচ্চতম লাফ
২০০৫ সালের আগস্ট মাসে এ জে হ্যাকেট চীনের ম্যাকাউ টাওয়ারের ২৩৩ মিটার (৭৬৪ ফুট) উচ্চতা থেকে স্কাই জ্যাম্প করে বিশ্ব রেকর্ড করেন। তবে এটিকে বাঞ্জি জাম্পিং বলা চলে না।
অবশ্য পরের বছরের ১৭ ডিসেম্বর ম্যাকাউ টাওয়ার থেকে একটি প্রকৃত বাঞ্জি জাম্পিং পরিচালনা করা হয়, যা গিনেস বুক অফ রেকর্ডস অনুসারে ‘বিশ্বের উচ্চতম বাঞ্জি জাম্প’ হয়ে ওঠে।
ভারতে
ভারতের বেশ কয়েকটি স্থানে বাঞ্জি জাম্পিং-এর ব্যবস্থা আছে। যেমন,
উত্তরাখণ্ডের হৃষিকেশ (৮৩ মিটার বা ২৭২ ফুট উঁচু থেকে লাফানোর ব্যবস্থা। এই মুহূর্তে এটাই ভারতের উচ্চতম বাঞ্জি জাম্পিং-এর স্থান)
মহারাষ্ট্রের লোনাভালা (১৫০ ফুট উচ্চতা থেকে লাফাতে হয়)
কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু (১৩০ ফুট উঁচু মোবাইল ক্রেন থেকে)
নয়া দিল্লী (১৩০ ফুট উঁচু ক্রেন থেকে)
গোয়া (আঞ্জুনা সৈকতে ৮০ ফুট উচ্চতা থেকে)
ছত্তিশগড়ের জগদলপুর
নতুন সংযোজন
হিমাচল প্রদেশের মানালিতে খুব শিগগিরই চালু হতে চলেছে বিশ্বের সর্বোচ্চ বাঞ্জি জাম্পিং। ১০,৫০০ ফুট উচ্চতায় গভীর খাদে এই জাম্পের ব্যবস্থা করা হবে। মানালির এই বাঞ্জি জাম্পিং সাইটের দেখাশোনা করবে অটল বিহারী বাজপেয়ী ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যালায়েড স্পোর্টস।
humayonahmed publisher