Answered 2 years ago
গত সপ্তাহে এক চাচাতো ভাই আসলেন গ্রাম থেকে। ওনার নাকি বুকে খুব ব্যথা। ইসিজি, ইকো, ইটিটি থেকে শুরু করে রক্ত পরীক্ষা এমনকি এক্স রে সব করালাম। সব কিছু নরমাল। কার্ডিওলজিস্ট দেখালাম। উনি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দিলেন। এতো পরীক্ষার পর ও উনি সন্তুষ্ট হলেন না, যাবার সময় বলে গেলেন- এতো পরীক্ষানিরীক্ষা করালাম, কিন্তু রোগটা ধরা পড়লো না। ওনার তো খুশী হওয়া উচিত ছিল, অবস্থা দেখে মনে হলো, বড় কোনো রোগ ধরা পড়লে হয়তো মনে শান্তি পেতেন।
প্রশ্ন শুনে মনে হয় যেন যদি বলতাম- হ্যা, মোবাইলে গেমস খেললে বাচ্চার কোনো ক্ষতি হবে না। তাহলে যেন শুনে শান্তি পেতেন ।
আমরা সবাই জানি বাচ্চাদের মোবাইলে গেমস খেলতে দেয়া ঠিক না। বেশিক্ষন টিভির সামনে থাকা ঠিক না। কিন্তু আমরা কি তা করতে পারছি?
যদি বলি বাচ্চার হাতে মোবাইল দিবেন ই না, এটা কি আর করতে পারবেন? প্রয়োজন কিছু টেকনিক, আসেন আলোচনা করি।
১) বাচ্চাদের সামনে নিজে মোবাইল টেপাটিপি বন্ধ রাখুন। বাচ্চারা যা দেখবে তাই তো করবে। আপনি খেতে বসে, টিভি দেখতে বসে, সামনে মানুষের সাথে কথা বলতে বলতে মোবাইল টিপেন, বাচ্চা ভাবে না জানি কি মধু এই জিনিষে।
২) এক্সট্রা মোবাইল রাখা বন্ধ রাখুন। একটির বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার ছাড়ুন। প্রয়োজনে বাটন মোবাইল ব্যবহার করুন। দেখা যায় আপনার দুটি স্মার্টফোন, নতুনটা আপনি দেখছেন, পুরানোটা বাচ্চার হাতে চলে যাচ্ছে।
৩) কিছু নিয়ম তৈরি করুন। যেমন- খাবার সময়, ঘুমাতে যাবার আগে মোবাইল ধরবেন না।
৪) বাচ্চাকে মজার মজার বোর্ড গেমসে ব্যস্ত রাখুন। গল্পের বই কিনে দিন, তাকে পড়ে শোনান। আপনার ছোটবেলার গল্প শোনান, তখন যে মোবাইল ছিল না তাকে জানান, আপনার দুষ্টুমিগুলো শেয়ার করুন।
৫) বাচ্চাকে সাথে নিয়ে কাজ করুন। বাচ্চাকে সাথে নিয়ে ঘর পরিষ্কার করুন। তাকে নিয়ে বাজার করতে যান, তাকে জ্যান্ত মাছ চেনান, তাজা ফলমূল দেখান।
৬) বাচ্চাকে গল্পের ছলে বোঝান। বেশি গেমস খেললে ভারী কাচের চশমা পড়তে হবে। আর চশমা ইজ নট এ কুল থিং!!
৭) প্রয়োজনে বাচ্চাকে ডেস্কটপ দিন। মোবাইল, ল্যাপটপ বা ট্যাব না। তাহলে আপনার নজরদারীতে থাকবে।
মজার কথা বলি- গত সপ্তাহে চোখটা দেখতে অপথ্যালমলজিস্ট কলিগের কাছে গেলাম। দেখি তার দুই বাচ্চা ,৪/৫ বছর বয়স। দুজন দুই ট্যাবে মগ্ন। চোখে মোটা মোটা চশমা।
এই হলো আমাদের অবস্থা।
stshopon publisher