Answered 2 years ago
প্রচলিত ইসলামের বিকৃত রূপরেখা😥😥
ধর্মীয় কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ কি জায়েজ ? (একটি বিশ্লেষণ)
--
মহান আল্লাহর বাণি :
:
"নিশ্চয় যাহারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা গোপন করে এবং তৎপরিবর্তে নগন্যমুল্য গ্রহণ করে, ইহারাই তারা যাহারা নিজেদের পেটে আগুন ছাড়া কিছুই ভক্ষন করে না, আল্লাহ পরকালে তাদের সাথে কথা বলবেন না,পবিত্র করবেন না..।" (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৭৪
"তারাই সুপথের বিনিময়ে কুপথ এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করেছে, নরকের আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল।" সূরা বাকারা ২:১৭৫)
"
-
"তোমরা তাদের অনুসরন কর যাহারা তোমাদের কাছে (ধর্মীয় কাজের বিনিময়ে) কোন পারিশ্রমিক চাই না এবং যাহারা সুপথপ্রাপ্ত।" (সূরা ইয়াসিন, আয়াত- ২১)
-
"(হে নবী) আপনি বলুন, আমি ইহার (কোরান প্রচার করে,উপদেশ দেওয়ার) বিনিময়ে পারিশ্রমিক চাই না..।" (সূরা আনআম, আয়াত- ৯০)
--
# discreption : দ্বীনের কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা কতটা অন্যায় তাহা উপরের আয়াতগুলো দেখলেই বোঝা যায়। সূরা বাক্বারার ৪১ নং আয়াতে আল্লাহর আয়াত কে নগন্য মুল্যে বিক্রয় করতে নিষেধ করা হয়েছে তথা ধর্ম-ব্যবসা বা ইবাদতের কাজের বিনিময়ে সামান্যতম পারিশ্রমিক গ্রহণও নিষেধ করা হয়েছে।
-
পার্থীব সম্পদ নিঃসন্দেহে আখেরাতের তুলনায় নগন্য।
-
আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ এর একটি হাদিসে বলা হয়েছে ; "দুনিয়াবি কোন বস্তু লাভের জন্য যাহারা দ্বীনি ইলম অর্জন করে তাহারা জান্নাতের গন্ধও পাবে না" (মিশকাত- ২১৪)।
-
সূরা আনআমের ৯০ নং আয়াতে দেখা যায়, রাসূল সঃ বলেন ; "আমি তোমাদের কাছে কোন বিনিময় চায় না..।"
-
সুতরাং, ''পারিশ্রমিক চাইনা'' এটা বলা রাসুল সঃ এর আদর্শ গুলোর মধ্যে একটি বড় আদর্শ ! অথচ ধর্মব্যবসায়ীদের রাসূল সঃ এর এই আদর্শের ধারে কাছেও নেই !
-
সমস্থ নবী রাসুলগনই ধর্মের কাজ করতে যেয়ে বলেছেন "আমরা ইহার বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না"।
:
প্রমাণ দেখুন : ইউনূস- ৭২,, হুদ- ২৯,৫১,, ইউসুফ- ১০৪,, মুমিনুন- ৭২,, শুআরা- ১০৯,১২৭,১৪৫,১৬৪,১৮০,, সাদ- ৮৬,, শুরা- ২৩ ইত্যাদি।
-
সুতরাং, স্পষ্ট হয়ে গেল, দ্বীনি কাজের বিনিনিময়ে পাররিশ্রমিক গ্রহণ না করা সকল নবী রাসূল সঃ এর একটা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
-
সূরা ইয়াসিন এর ২১ নং আয়াতে, যে পারিশ্রমিক গ্রহণ করেনা এবং সঠিক পথে আছে তাহাকে অনুসরণ করতরতে বললা হয়েছে।
-
যাহারা পারিশ্রমিক গ্রহণ করে তাহারা ভন্ডদের অন্তর্ভূক্ত। (সুরা সাদ এর ৮৬ আয়াতের মর্ম)।
-
সব মিলিয়ে এটাই বলা যায় - ইবাদাতের কাজ করে পারিশ্রমিক নেওয়ার পক্ষে শরিয়ত সম্মত কোন যুক্তি নেই ! বরং নিজের হাতে অন্যান্য দুনিয়াবী কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতে হবে।
-
পার্থীব কাজ করে রিজিকের ব্যবস্থা করা সম্পর্কে কিছু দলিল : বোখারি,, সূরা জুমআ- ১০,, নিসা- ২৯,, নাহল- ১৪,, বানি ইসরাঈল- ১২, ৬৬,, কাসাস- ৭৩,, রূম- ২৩, ৪৬,, ফাতির- ১২,, জাসিয়া- ১২ ইত্যাদি আয়াতবলি !
---
হাদিস:
-
(মিশকাত ২৮৬০) "উবাদা বিন সামিত রাঃ বলেন, আমি বললাম ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমি এক ব্যক্তিকে কোরান শিক্ষা দিয়াছি, সে আমাকে একটা ধনুক হাদিয়া দিয়াছে যাহা নগন্য মুল্য। সুতরাং, আমি কি উহাতে করে জিহাদে তীর মারতে পারি? তিনি বললেন, যদি তুমি দোযখের শিকল গলায় পরতে ভালোবাস তাহলে উহা (ধনুক) গ্রহন করতে পার"। আবু দাউদ,ইবনে মাজাহ।
উক্ত হাদিসঅনুপাতেই ইমাম আবু হানিফা রঃ, ইমাম জুহুরি ও ইসহাক বিন রাইওয়াই বলেন ইবাদতের কাজের বিনিময়ে পাররিশ্রমিক গ্রহণ নাজায়েজ ! অর্থাৎ কথিত হানাফি মাযহাবেও এটা নাজায়েজ ধর্তব্য !
( মিশকাত ৬১৭) "উসমান বিন আবুল আ'ছ রাঃ বলেন, আমি বললাম ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি আমাকে আমার সম্প্রদায়ের ইমাম নিযুক্ত করেন। হুজুর বলিলেন,আচ্ছা তুমি তাহাদের ইমাম হলে। তবে ইমামতিতে তাহাদের সর্বাপেক্ষা দুর্বলদের খেয়াল রাখবে এবং এমন মুআজ্জিন নিযুক্ত করবে যে আজানের বিনিময়ে পারিশ্রমিক নিবেনা"। আহমদ,আবু দাউদ,নাসাঈ।
খেয়াল করুন : যে আজান সবার উপর ফরজ নই তাহাতেই যদি পারিশ্রমিক না নেওয়া যায় তাহলে ইমামতিতে কিভাবে জায়েজ হয় ?
এছাড়া বায়হাকি'র একটি হাদিসে রয়েছে, "যে কোরান পড়িয়া মানুষের কাছে টাকা চাবে কিয়ামতে তাহার চেহারাই হাড় হবে, মাংশ থাকিবেনা !" ( মিশকাত, হাদিস- ২১১৩)
এতসব আয়াত হাদিস থাকার পরও বর্তমান সময়ের বিজ্ঞদের একটা বিশাল অংশ নামায পড়িয়ে,ওয়াজ নসিহত ইত্যাদি ধর্মীয় কাজ করে পয়সা উপার্জনকে side income করিয়াছেন। অথচ পৃথীবির সমস্থ নবী রাসুল পার্থীব কাজ করিয়া আয় রুজগার করিতেন ! কোরান হাদিস পড়লে যাহা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তারপরও, যদি কোন দায়ী সমস্যা বা অভাবে পতিত হয় এবং উপার্জনের কোন ব্যবস্থা না থাকে তাহলে যাকাত, উশর, ফিতরা আদায় করার মাধ্যেমে "বায়তুল মাল" গঠন করে সেখান থেকে minimum অভাবটুকু মিটাইতে পারে, অবস্য বিলাশিতার জন্য নয়। তাওবা : ৬০। যাহা খোলাফায়ে রাশেদিনদের খেলাফতকালের ইতিহাস দেখলেই বোঝা যায় !
কিন্তুু কোন অবস্থাতেই ধর্মীয় কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা যায় না। এটা অতিব অন্যায় ও গর্হিত কাজ।
---
জাঝাকুমুল্লাহ্ খায়ের।
rahamanshajidur publisher