Answered 2 years ago
তাকাশি হায়াকাওয়াকে আমরা কোনদিন ভুলবো না। বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করতেন তিনি। ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে বিধ্বস্ত বাংলাদেশের জন্য টোকিওর রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদা তোলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেন ও কাজ করেন স্বাধীন বাংলাদেশকে জাপানের স্বীকৃতির ব্যাপারে। তাকাশিকে বঙ্গবন্ধু একটা বাঘের মাথা উপহার দিয়েছিলেন ১৯৭৩ সালে জাপান সফরে। সংরক্ষণের জন্যে তাকাশির পরিবার বাঘের মাথাটি জাপানে বাংলাদেশ এম্বাসিকে উপহার দিয়েছেন ২০১৭ সালে।
জাপান বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রথম দিকের একটি দেশ। ১৯৭২ সালের ১০ ই ফেব্রুয়ারী জাপান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। জাপানের সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রতিবছর, শতাধিক বাংলাদেশী জাপানে পড়াশোনার জন্য জাপান সরকারের বৃত্তি লাভ করে এবং সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ এই বৃত্তির অন্যতম বড় গ্রহীতা দেশ।
বাংলাদেশে অভিবাসী শ্রমিকদের নতুন গন্তব্য হিসাবে যুক্ত হয়েছে জাপান।
কালের কণ্ঠ লিখেছে —
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা-গোমতী দ্বিতীয় সেতু নির্মাণে সময় ও অর্থ বাঁচিয়ে ‘চমক’ দেখালো জপানিরা। এক মাস সময় হাতে থাকতেই সেতুটির নির্মাণ শেষ করেছে তারা। কেবল তাই নয়, ‘চমক’ দেখিয়েছে তিনটি সেতুর মোট নির্মাণ ব্যয় থেকে বেঁচে যাওয়া ৭৩৮ কোটি টাকা সরকারকে ফেরত দিয়েও।
এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে গড়াই ব্রিজ নির্মাণের কাজ (১৯৯০ সালে) নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করা হয়েছিল। এরপর নির্ধারিত সময়ের আগে পুরাতন মেঘনা ও গোমতী সেতুর কাজ শেষ করা হয়েছিল যথাক্রমে ১৯৯১ ও ১৯৯৫ সালে। সবগুলো কোম্পানিই ছিল জাপানের। বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ের আগে প্রকল্পের কাজ শেষ করার ইতিহাস একমাত্র জাপানিদেরই। আর কারও নেই। ১৯৯৫ সালের পর এই কাজটা তারাই করল।[1]
জাপান এখন বাংলাদেশের জন্য নবম বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য।
বাংলাদেশে আড়াই শতাধিক জাপানী সংস্থা রয়েছে। সবগুলোই যে ভালো বলা যাবে না, যেমন, জাপান টোব্যাকো।
জাপানের সাথে আমদানি প্রবৃদ্ধির তুলনায় বাংলাদেশ বেশি রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে।
জাপান বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (BIG-B) প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশে শিল্পবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে চায়। প্রকল্পটি মাতারবাড়িতে একটি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং একটি নতুন গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণকে অন্তর্ভুক্ত করারও লক্ষ্য নিয়েছে।
জাপান সরকার নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলায় অবস্থিত জাপানী অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছে।
বিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সময় ধরে জাপান ছিল মিয়ানমারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করে রোহিঙ্গা সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান পেতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে জাপান মধ্যস্থতা করতে পারে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ছিল ৫৮.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মিয়ানমারে ছিল ৩৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের ব্যর্থতার কারণেই হয়। জাপান আমদানি করে $৬৭০ বিলিয়ন ডলারের, যার মধ্যে বাংলাদেশ কেবল ০.২ শতাংশ(তারপরও ১ বিলিয়নের উপরে)।
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সাত জাপানি নাগরিকের করুণ মৃত্যু হয়েছিল। এটাই আমাদের বড় দুঃখ।
rofiqahmed publisher