Answered 2 years ago
অনেকেই বাড়ির একটি নাম রাখেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নামগুলো কাব্যিক ধরণের হয়। স্বপ্নের নীড়, মায়ার বাঁধন, নিবিড় সন্ধ্যা, ইত্যাদি। মাঝে মাঝে নামগুলো মানুষের নাম হয়। সাধারণত লোকজন নিজের মায়ের নামে বা স্ত্রীর নামে বাড়ির নাম রাখে। ছবিতে তেমন একটি নাম দেখতে পাচ্ছেন - রোকেয়া মনজিল । রোকেয়া নামক এক মহিলার নামে এই বাড়িটির নাম রাখা হয়েছে।
খুব চিন্তাভাবনা করে বলুন - এমন নাম রাখার কারণে, রোকেয়া বেগম কি ওই বাড়ির মালিক হয়েছেন?
না, রোকেয়া বেগম ওই বাড়ির মালিক নন। ওই বাড়ির মালিক হলেন সেই ব্যক্তি, যার নামে বাড়িটি রেজিস্ট্রেশন করা। সাইনবোর্ড এর উপরে রোকেয়া বেগমের নাম থাকলেও, দলিল পত্রে মালিকের নাম লেখা আছে।
বাড়ির মালিক চিনেছেন, এবার দেশের মালিক চিনবেন। দেশের মালিক কে, তার উপরে ভিত্তি করে, বোঝা যায় সেই দেশে কোন তন্ত্র (শাসন) চলে।
রাজতন্ত্র : দেশের মালিক রাজামশাই। নিজের বাবার কাছে উত্তরাধিকার সূত্রে দেশের মালিকানা পেয়েছেন। ভবিষ্যতে নিজের ছেলেকে দেশের মালিকানা দিবেন। দেশটা তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। রাজার ইচ্ছাই দেশের আইন।
ইসলামিক তন্ত্র : দেশের মালিক আল্লাহ। আল্লাহর দেওয়া আইন চলে। আল্লাহর পক্ষে একজন মানুষ (খলিফা) দেশ পরিচালনা করে। খলিফা কথাটার অর্থ প্রতিনিধি।
গনতন্ত্র : দেশের মানুষ জনগণ। কোটি মানুষ মিলে দেশ শাসন করা যায় না, তাই নেতা (জন প্রতিনিধি) নির্বাচন করে। প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী দেশের মালিক নন, তারা দেশের ম্যানেজার। বেশিরভাগ মানুষ যেটা চায়, সেটাই দেশের আইন।
যদিও সঠিকভাবে পালন করা হয় না। কিন্তু, বাংলাদেশ একটি সংসদীয় গনতান্ত্রিক দেশ। নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা একসাথে দেশ চালায়। তারা একসাথে সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে।
আমাদের জাতীয় পশু বাঘ, জাতীয় পাখি দোয়েল, জাতীয় ফুল শাপলা। ঠিক তেমনই - জাতীয় ধর্ম ইসলাম।
বাংলাদেশ একটি গনতান্ত্রিক দেশ। তবে, মুসলমানরা সংখ্যায় বেশি। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নাম দিয়ে রেখেছে। এমন নাম দেওয়ায়, বেশিরভাগ মানুষই খুশি। কিন্তু, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ইসলামের কোন গুরুত্ব নেই।
সেই দেশটা ইসলামিক দেশ, যেখানে ইসলামিক আইন চলে। বাংলাদেশে গনতান্ত্রিক আইন চলে, ইসলামিক আইন চলে না। ব্যাপারটা, ওই রোকেয়া বেগম এর মতন। নাম তার, কিন্তু তিনি মালিক নন। শুধুমাত্র রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নাম দিয়ে রেখেছে। কিন্তু, আসলে দেশ চলে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে।
tonmoyshek publisher