Answered 3 years ago
আমরা নাক দিয়ে শ্বাস নিই। তারপর বাতাসকে পাঠিয়ে দেই ফুসফুসে কার্বনডাইঅক্সাইড-অক্সিজেন বিনিময়ের জন্য। পোকামাকড়ের কিন্তু নাক বা ফুসফুস নেই। তাহলে ওরা কি শ্বাসকার্য চালায় না? দমে আটকে কি মারা যাবে সব পোকা?
জীববিজ্ঞানে পোকামাকড় বলতে বুঝি আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণি। এই পর্বের প্রাণিদের শ্বাসকার্য চালানোর জন্য নাক, ফুসফুস না থাকলেও যন্ত্রাংশ অবশ্যই রয়েছে। শরীরের পার্শ্বীয় দেশে রয়েছে অনেকগুলো ছিদ্র, যার নাম স্পাইরাকল।
ছিদ্রগুলো অনেক সূক্ষ্ম, খালি চোখে নজরে পড়বে না। আমাদের ক্ষেত্রে নাসারন্ধ্র দিয়ে যেমন বাতাস ঢুকে, ওদের ক্ষেত্রে এই স্পাইরাকল দিয়ে বাতাস ঢুকে।
স্পাইরাকলের পর থেকে শুরু হয়ে শরীর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ট্রাকিয়া।
ট্রাকিয়ার শাখা প্রশাখাসহ স্পাইরাকল মিলেই তৈরি করেছে পোকামাকড়ের শ্বসনতন্ত্র, যা ট্রাকিয়ালতন্ত্র নামেও পরিচিত। ট্রাকিয়ালতন্ত্র ব্যবহার করেই এরা কার্বনডাইঅক্সাইড পরিবেশে ছেড়ে দেয়, অক্সিজেন গ্রহণ করে।
বুঝতেই পারছেন নিশ্চয় আমাদের শ্বসনতন্ত্রের সাথে ওদেরটাই তেমন কোন মিল নেই।
এবার আসি আপনার প্রশ্নের উত্তরে। ফলের মধ্যে থাকা পোকামাকড় অক্সিজেন গ্রহণ কীভাবে করে?
বেশ কিছু পোকামাকড়ের শ্বসনতন্ত্র পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে, মাছের মতো বলতে পারেন। বিশেষত লার্ভা অবস্থায়। মশার কথা জানেন নিশ্চয়, ওরা কিন্তু পানির মধ্যে থেকে দিব্যি অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকে। ফলের মধ্যে কিন্তু বেশির ভাগই থাকে পোকামাকড়ের লার্ভা। ফলের ভিতরের পানির পরিমাণ নিয়ে নিশ্চয় ধারণা আছে? আচ্ছা, আমের কথায় ধরা যাক। পাকা আমের শতকরা ৮৩% পানি কিন্তু। কাঁচা আম নিয়েও ঘাবড়ানোর কিছু নেই। একটু পিষেই দেখুন না পানি বের হয় কিনা!
দ্রবীভূত অক্সিজেন নিতে না পারলেও সমস্যা নেই। ফলের পৃষ্ঠদেশ দিয়েও অক্সিজেনের বিনিময় হয়। সেখান থেকেও সে অক্সিজেন নিয়ে নিতে পারবে, সাথে ভেতরটা খুঁড়ে সে সুন্দর চ্যানেল তৈরি করবে যা বাতাসের যাতায়াতে বেশ কাজে দিবে।
শেষমেশ, উপরের দুইটা পদ্ধতিও তার কাজে না লাগলে সুন্দর করে গর্ত খুঁড়ে বাইরের সাথে লিংক করে দিবে। এবার নিশ্চয় আর কোন আপত্তি নেই?
আশাকরি দ্বিধাদ্বন্দ্ব দূর হয়েছে।
shuvanahmed publisher