পানি এবং বাতাস ছাড়া কিভাবে আগুন নেভানো যায়?

1 Answers   7.4 K

Answered 2 years ago

পানি বা বাতাস ছাড়াই মূলত কিভাবে আগুন নেভানো উচিত।

কারণ এতে আগুন আরও বেড়ে যেতে পারে।

আগুন নিভানোর জন্য আগে জানা উচিত তা কিসের আগুন। এতে আগুন নিভানো আরও ফলপ্রসূ হয় এবং দুরঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কম থাকে।

কোন আগুন কিভাবে আগুন নেভাবেন...

অগ্নিকাণ্ড চার (৪) ধরনের হয়ে থাকে- কঠিন আগুন, তরল আগুন, গ্যাসীয় আগুন ও ধাতব আগুন। কেউ কেউ বৈদ্যুতিক আগুন নামে আরেকটি ধরনের উল্লেখ করেন। আসলে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুন রূপান্তরিত হয়ে কঠিন, তরল, গ্যাসীয় বা ধাতব আগুনেই পরিণত হয়ে থাকে।

(১) কঠিন পদার্থের আগুন (Solid fire) : কঠিন পদার্থের আগুন, যেমন- কাঠ, বাঁশ ইত্যাদির আগুন।

(২) তরল পদার্থের আগুন (Liquid fire) : তরল পদার্থের আগুন, যেমন- তেল, পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদির আগুন।

(৩) গ্যাসীয় পদার্থের আগুন (Gas fire) : গ্যাসীয় পদার্থের আগুন, যেমন- গ্যাস লাইন, গ্যাসের চূলার আগুন ইত্যাদি।

(৪) ধাতব পদার্থের আগুন (Metal fire) : ধাতব পদার্থের আগুন, যেমন- সোডিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদির আগুন।

অগ্নি নির্বাপণ (Fire Fightting)

অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা হচ্ছে আগুনের ধরন বুঝে তা নেভানোর ব্যবস্থা নেয়া। আগুন জ্বলার ক্ষেত্রে আবশ্যক তিনটি উপাদানের কথা আমরা আগেই জেনেছি- দাহ্যবস্তু, অক্সিজেন ও তাপ। আগুনের সূত্রপাত ঘটে যাওয়া মানে দাহ্যবস্তু আগুনে আক্রান্ত হয়ে গেছে। অতএব তখন বাকি যে দুটো উপাদান অক্সিজেন ও তাপ, তার যেকোন একটি উপাদানকে অপসারণ বা বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নি নির্বাপণ প্রক্রিয়া পরিচালিত করতে হয়। কোন্ উপাদানটিকে অপসারণ করতে হবে তা নির্ভর করে আগুনের ধরনের উপর।

(১) কঠিন পদার্থের আগুন (Solid fire) নির্বাপণ : এ ধরনের আগুনের ক্ষেত্রে অক্সিজেন বা তাপ এর যে কোনো একটি উপাদানকে অপসারণ বা বাধাগ্রস্ত করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। পানি ছিটিয়ে দাহ্যবস্তুর তাপমাত্রা কমিয়ে এ আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাছাড়া ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার, ফোম, কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস ব্যবহার করে দাহ্যবস্তুতে অক্সিজেন সরবরাহে বাঁধা প্রদান করেও আগুন নেভানো যায়।

(২) তরল পদার্থের আগুন (Liquid fire) নির্বাপণ : এ ধরনের আগুনের তাপ অপসারণের সুযোগ নেই বলে পানি দ্বারা তা নেভানো যায় না। বরং তৈলাক্ত তরলের আপেক্ষিক ওজন পানির চেয়ে হালকা বলে পানি ব্যবহার করলে পানিতে ভেসে এ আগুন আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে দাহ্যবস্তুতে অক্সিজেন সরবাহে বাধাগ্রস্ত করাই আগুন নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায়। তাই এ আগুনে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস ও ফোম বেশি কার্যকর। ড্রাই পাউডার দ্বারাও নেভানো যায়।

(৩) গ্যাসীয় পদার্থের আগুন (Gas fire) নির্বাপণ : এ ধরনের আগুনে পানি অকার্যকর। ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার, ফোম, কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়।

(৪) ধাতব পদার্থের আগুন (Metal fire) নির্বাপণ : ধাতব পদার্থের আগুন পানিতে নেভানো যায় না। ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার, ফোম, কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস ব্যবহার করেই এ আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এ ধরনের আগুনে পানি ব্যবহার হিতে বিপরীত ঘটে, আগুনের তীব্রতা বহুগুণে বেড়ে যায়। কারণ, ধাতব পদার্থে পানি (H2O) রাসায়নিক বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন (H) ও অক্সিজেনে (O2) রূপান্তরিত হয়। উৎপাদিত হাইড্রোজেন (H) নিজেই জ্বলে আর অক্সিজেন (O2) আগুন জ্বলতে সাহায্য করে।


Ajit Kumar
ajitkumar
262 Points

Popular Questions