Answered 2 years ago
বাংলাদেশের কোনো এইরকম কোনো মিত্রের দরকার নেই।৷
একটি দেশ, বা মহাদেশের উন্নতির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একটি, শান্ত পরিবেশ এবং পরিস্থিতি। যুদ্ধ কিংবা যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি, কিংবা সর্বক্ষণ আতঙ্কগ্রস্ত থাকা গণমাধ্যমের মুনাফার জন্য খুব ভালো সুযোগ হলেও তা একটি দেশ কিংবা একটি দেশের মানুষের জন্য কখনই ভালো না।
আর কোনো দেশের সাথে ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া মানে, সে দেশের যেকোনো কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে একই ভাবে নিজেও প্রভাবিত হওয়া। একটি ছোট্ট হাইপোথিটিক্যাল উদাহরণ দিয়ে বলি-
কোনো কারণে, এই মুহূর্তে যদি ইসরায়েল আরব বিশ্বের সাথে যুদ্ধে জড়ায়, তবে ভারত বাধ্য হবে ইসরায়েলের পক্ষ নিতে। তখন হয়তো আরব বিশ্ব ভারতের আচরণে নাখোশ হয়ে তেল রপ্তানী বন্ধ করে দিবে। তখন ভারতের বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাবে, আর তেলের দাম বেড়ে যাওয়া মানে মোটামুটি সব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া। এরও এক ডিগ্রি উপরে উঠে ভারত সরকার যদি যুদ্ধে কোনোভাবে ইসরায়েলকে সাহায্য করার জন্য কোনো সৈন্য বা কিছু পাঠায়, স্বাভাবিক ভাবেই পাকিস্তান তা ভালো চোখে দেখবে না, এবং পাকিস্তান হয়তোবা সামরিক কৌশলগত অবস্থান নিবে এবং ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যার সর্বোচ্চ ফায়দা লুটবে এই দুই দেশের গণমাধ্যম এবং রাজনৈতিক নেতারা।
ভারতের এই যুদ্ধে আসলে অংশ নেবার কোনো দরকারই ছিল না, সে নিজের মত করেই, নিজের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চালিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু একটি ঘনিষ্ঠ মিত্র তাকে হয়ত বাধ্য করবে এরকম কোনো পরিস্থিতির মধ্যে ঢুকে পড়তে।
ঠিক একই জিনিস পাকিস্তান-চীনের ক্ষেত্রেও হতে পারে।
বাংলাদেশের মূলনীতি হচ্ছে কারও সাথে শত্রুতা নয়। তারমানে আদতে বাংলাদেশ কোনো ঘনিষ্ঠ মিত্র তৈরি করবে না বরং সবার সাথেই সুসম্পর্ক রাখবে।
এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, বাংলাদেশকে তার ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশের অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো কূটনৈতিক পদক্ষেপের ফলভোগ করতে হবে না।
এটাও ঠিক যে, এই নীতির কারণে বাংলাদেশের চরম বিপদে বাংলাদেশের পাশেও তারমানে কেউ হয়তো দাঁড়াবে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না, এমনটা হবে। কারণ বাংলাদেশের আশেপাশে যেই চীন, ভারত কিংবা বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা আছে, তাদের কেউ একজন বাংলাদেশের প্রতি অবৈধ আগ্রাসন চালালে বাকি দেশ গুলি তা হতে দিবে বলে মনে হয় না, কারণ বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারত এবং চীন উভয়েরই স্বার্থ সংক্রান্ত ব্যাপার-স্যাপার আছে।
আর যদি কেউ পাশে না দাঁড়ায়, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ বাংলাদেশের সেনাবাহিনী পৃথিবীর অন্যতম প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী, তাদের একটি বিশাল অংশ জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীতে কর্মরত।
zahirahmed publisher