পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না। এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার ভিতর কী করা যায়, যাতে নিজের পরিবারকে চালিয়ে নিতে পারি?

1 Answers   8.9 K

Answered 2 years ago

প্রথম ধাপঃ

81 এর মাদারবোর্ড দিয়ে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকার মধ্যে একটি কম্পিউটার কিনুন। যদি কম্পিউটার ব্যবহার করতে না পারেন, তাহলে কম্পিউটার কেনার পরে বাড়িতে নিজে বসে ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট, ইমেজ এডিটিং আর ইন্টারনেট ব্রাউজিং শিখে নিন। ১ মাস সময় লাগবে। কোন কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে ৫-১০ হাজার টাকা দিয়ে এসব আজাইরা টাইপ কোর্স করার দরকার নাই। বাড়িতে বসে নিজে নিয়মিত কম্পিউটার ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যেই শিখে যাবেন। শেখার পরে দ্বিতীয় ধাপে যাবেন।


২য় ধাপঃ

কম দাম দিয়ে একটি প্রিন্টার কিনুন। দাম পড়বে ৬,০০০ টাকা।
কমদামি একটি ফটোকপি মেশিন কিনে নিন, দাম - ৪০,০০০ টাকা।

এছাড়া অন্যান্য খরচ ধরি - ১০,০০০ টাকা।

এখনো পর্যন্ত মোট খরচ, ২০,০০০+৪০,০০০+১০,০০০+৬,০০০= ৭৬ হাজার বা আনুমানিক ৮০,০০০ টাকা।


৩ ধাপঃ

আপনার এলাকায় অবশ্যই স্কুল কলেজ আছে। বা পাশের এলাকায় আছে।
এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করুন যার আশেপাশে তেমন কোন কম্পিউটারের দোকান নাই। আর থাকলেও ১ বা সর্বোচ্চ ২ টা।
খুব ভালো হয় যদি কোন কম্পিউটারের দোকান না থাকে। যে স্কুলের পাশে আছে, সে স্কুল বাদ দিয়ে অন্য স্কুল খুঁজে বের করুন। অবশ্যই পাবেন।

তবে বাজার থেকে খুব বেশি দূরে, যেখানে লোক যাতায়াত নাই, এমন ধরনের স্কুল বাছাই করলে বিপদে পড়বেন।


৪র্থ ধাপঃ

আশা করি বুঝে গিয়েছেন এখন কি বলব আমি।

হ্যাঁ, এবার সেই পছন্দ করা স্কুলের পাশে একটা দোকান ভাড়া নিন। যত কমে পারবেন নিয়ে নিবেন।

এডভান্সড ২০,০০০ টাকা দোকানে দিবেন।
চেয়ার টেবিলে ১০,০০০ খরচ করে, বাকি ৪০,০০০ টাকা ব্যাংকে রেখে দিন।
(আর যদি ব্যাংকে এক্সট্রা কিছু টাকা থাকে, তাহলে এই টাকা দিয়ে আরও কলম, পেন্সিল, ফাইল, কাগজ, এই ধরনের জিনিস কিনবেন। পাশাপাশি, একটা UPS আর একটি পুরাতন ভ্যানের ব্যাটারি কিনে নিবেন।)

তবে অবশ্যই ব্যাংকে কিছু টাকা জমা রাখবেন। কেননা, যেকোন এক্সিডেন্টে নিজেকে সাপোর্ট দেবার সক্ষমতা থাকা উচিত।

আর আপনার মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে সেই ছবি এডিট করে ছবি তোলার কাজটাও সেরে নিবেন। প্রথমে ক্যামেরার দরকার নাই।


এখন বলি কেন আমি এই ব্যবাসার কথা বললাম।

  1. স্কুল কলেজের পাশে এই ধরনের ব্যবসার খুব চাহিদা রয়েছে। কেননা, নোটস, প্রশ্ন, সাজেশন, ইত্যাদি নিয়মিত দরকার পড়ে।
  2. ছাত্রছাত্রী + স্যারদের থেকে অনেক কাজ পাওয়া যাবে।
  3. বিভিন্ন রেজাল্ট প্রকাশিত হলে অনেক ছাত্রছাত্রী আসবে, যেহেতু স্কুলের পাশে।
  4. ছবি তোলার দরকার পড়লে আপনি সে সার্ভিস টাও দিতে পারবেন।
  5. বিভিন্ন চাকরির আবেদন করে দিবেন, তাহলে বাইরে থেকেও মানুষ আসবে।

এক কথায়, এখান থেকে বেশ ভালো একটা লাভজনক অবস্থায় যেতে পারবেন।


এবার বলি ভবিষ্যত পরিকল্পনাঃ

  1. লভ্যাংশ থেকে প্রথমেই একটি ক্যামেরা কিনে নিবেন। ডিজিটাল হলেও সমস্যা নাই। পরে না হয় DSLR কিনে নিলেন।
  2. DSLP কেনার পরে বিভিন্ন বিয়ের ইভেন্টও কাভার করতে পারবেন। যদি আপনার ছবি তোলার দক্ষতা না থাকে তাহলে যে ভালো ছবি তুলে কিন্তু ক্যামেরা নাই এমন কাউকে ঠিক করবেন।
  3. বিয়ে জন্মদিনের ছবি তোলার পাশাপাশি ধীরে ধীরে ভিডিওর কাজও করতে পারবেন।
  4. ব্যবসা আরও বড় হলে বিভিন্ন প্রোডাক্ট যেমন চার্জার, ইয়ারফোন, এই ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করবেন।
  5. সব থেকে বড় কথা যেভাবেই হোক নিজের ব্যবসাকে বড় করার দায়িত্ব আপনার, ব্যবসা বড় করতে পারলে আপনি হিরো, না পারলে always জিরো।

আর যদি এই কাজ করতে লজ্জা লাগে তাহলে একটা সত্য কথা বলি।

আমার নানা এখন একজন কোটিপতি। তবে একসময় তিনি ফুটপথে বসে কাপড় বিক্রি করতেন। টাকার অভাবে নিজের বড় ছেলের চিকিতসা করাতে পারেন নাই, অসুখে ভুগে ভুগে না খেয়ে মারা গিয়েছেন আমার বড় মামা। বর্তমানে তার বাড়ির মূল্যই ১.৫ কোটির উপরে। তার একাধিক জমি, দোকান, ব্যাংকের হিসাব তো অনেক পরের কথা।

মনে রাখবেন, কাজ ২ ধরনের হয়ঃ সৎ কাজ আর অসৎ কাজ।

সৎ পথে থাকলে আর যথাযথ পরিশ্রম করতে পারলে কেউ থেমে থাকবে না।


Mostofa
mostofa
452 Points

Popular Questions