জীবনে যখন ব্যর্থতার পর ব্যর্থতাই আসে তখন কী করা উচিত?

1 Answers   12.6 K

Answered 2 years ago

শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, কিন্তু এঅবস্থায় কোন আশাবাদী পরামর্শের তুলনায় আপনার মনোবল ফিরিয়ে আনতে অনেক বেশি কার্যকরী যেটা হতে পারে সেটা হলো একটি নিরাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি।

আজকের দুনিয়ায় সর্বত্রই আশাবাদের জয়গান― আমাদের সর্বক্ষনই বোঝানো হচ্ছে আমরা চাইলে সব পারি, অথবা কিছু পেরে থাকলে আরো ভালোভাবে তা পারতে পারি। আপোষের কোনো প্রশ্নই নেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমাদের জীবনে আজ এতই সুবিধা এনে দিয়েছে যে নিতান্ত ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার অভাব বৈ কোনো কিছুতে সাফল্য না পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না এরকম একটা ধারণা আমাদের মনে বদ্ধমূল করে দেওয়া হচ্ছে।

মুস্কিলটা হয়েছে এখানেই―অতিরিক্ত আশাবাদ আমাদের মনে এত প্রত্যাশার জন্ম দিচ্ছে যে কোন কিছুতে প্রত্যাশামত ফল না হলেই সেটাকে নিজেদের গাফিলতি ধরে নিয়ে আমরা চূড়ান্ত হতাশার সম্মুখীন হচ্ছি। ভেবে দেখা গেলে, হতাশার মূলে রয়েছে আশাবাদ।

আমরা মনে করি, হতাশা বা ব্যর্থতাকে যারা মেনে নিতে পারেনা তাঁরাই বুঝি নিরাশাবাদী হয়। আসলে পুরো উল্টোটা; সবচেয়ে আশাবাদী ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি হতাশাজনিত তিক্ততা বা রাগ পোষণ করেন। কারণ তাঁরা সবসময়ই কল্পনা করবেন "এর থেকে ভালো হতে পারত।"

নিরাশাবাদীরা বরং অনেক বেশি সচেতন যে জীবন আমাদের প্রত্যাশার ধার ধারে না এবং ব্যর্থতা প্রত্যেকের জীবনে অবশ্যম্ভাবী ও সেটাকে মেনে নিয়েই আমাদের চলা উচিত। তাই অফিসে যেতে গিয়ে ট্রাফিকে আটকে পড়ার দরুন রাগ হলে বা কোনো পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে যদি মুষড়ে পড়েন, তবে আপনি আদতে এমন একটা দুনিয়ায় বাস করার আশা রাখছেন যেখানে আপনি কখনোই ট্রাফিকে আটকে পড়বেন না বা কোনো পরীক্ষাতেই ফেল করবেন না।

নিরাশাবাদ এটা বলে না যে "আপনি অনিবার্যভাবে অকৃতকার্য হবেন" বরং শুধু বলে "আপনি অকৃতকার্য হতে পারেন এবং কখনো না কখনো হবেনও, কিন্তু তাতে কোনো মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না বা পৃথিবী রসাতলে চলে যাবে না। সব যেমন ছিল, তেমনই থাকবে।"

Sakib Uddin
Sakib23
297 Points

Popular Questions