Answered 2 years ago
ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন আছে, তবে আমরা যে ছাত্ররাজনীতি করি তাকে ছাত্ররাজনীতি বলা যায় না, এটা সম্পূর্ণ অসুস্থ রাজনীতি।
ঢাবির প্রফেসর কামরুল হাসান মামুন স্যারের কথাগুলো পড়ুন:~
"বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিটাকে যদি দুষ্ট জাতীয় রাজনীতি গেড়াকল থেকে মুক্ত করা যেত দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর লেখাপড়ার জন্য আদর্শ পরিবেশ গড়ার সুযোগ তৈরী হতো। এইখানে একটা কলেজের ছবি দিলাম।
এইবার বলুন এইটাকে কি কোন কলেজ বলা যায়? কিছুদিন আগে ঢাকার বাহিরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি লেকচার দিতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি প্রতিটা ভবন ব্যানার পোস্টারে ঢেকে গিয়েছে। আমি যখন লেকচার দিচ্ছিলাম তখন ঢাকা ঢোল পিটিয়ে বিরাট মিছিল দেখলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জণ হলেও প্রায়ই দেখা যায় বিশাল বিশাল ব্যানার। এইরকম চিত্র কি বাংলাদেশ ব্যতীত বিশ্বের আর কোথাও পাবেন?
বিশ্বের অন্য দেশের মত আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরাও যদি আদর্শভিত্তিক ছাত্রদের জন্য রাজনীতি করতো শিক্ষকদের অনেক কর্মঘন্টা বেঁচে যেত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯টি আবাসিক হল আছে। তার মানে ১৯ জন প্রভোস্ট এবং কম পক্ষে ১০০ জন আবাসিক শিক্ষক এই হলগুলো পরিচালনা করেন। এইটা টোটাললি একটা নন-একাডেমিক কাজ। দুষ্ট রাজনীতি থাকার কারণে শিক্ষকদের এমন সমস্যার সমাধান করতে হয় যা একটি সভ্য দেশে কল্পনাই করা যায় না। বিশ্বের অধিকাংশ ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল চালায় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। আর সত্যিকারের সভ্য দেশে সিনিয়র ছাত্ররাই পার্ট -টাইম জব হিসাবে হল চালায়। কিন্তু আমাদের দেশে এই দুষ্ট রাজনীতির কারণে ছাত্র হয়ে ছাত্রদের মারার মত ঘটনার ঘটে বলে শিক্ষকদের এইসব অযাচিত কাজে জড়ানো হয়। অথচ শিক্ষার্থীরা সুন্দর সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করলে তারাই তাদের হল চালাতে পারতো। এইসব দুষ্ট রাজনীতির কারণে ভিসি প্রোভিসিদেরও দিবসের বড় একটা সময় কিছু অযাচিত ছাত্র সমস্যার সমাধানে ব্যয় করতে হয় যেইসব সমস্যা পৃথিবীর কোথাও exist-ই করে না। গত কিছুদিন আগে কোন এক টেলিভিশন চ্যানেলের সুবাদে আবরার হত্যার পর বুয়েটের পরিবেশের আমূল পরিবর্তন তুলে ধরা হয়েছে। আসলেই তাই। বুয়েটের কর্তৃপক্ষের পক্ষে এখন অনেক কাজই অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।
ছাত্ররা যদি নানা সামাজিক ও ছাত্রদের নানা সমস্যার রাজনীতি করতো এর মাধ্যমে তারা সত্যিকারের নেতৃত্ব শিখতো। বর্তমান ছাত্ররাজনীতি নেতৃত্বতো শেখায়ই না বরং অসততা ও মাস্তানি শেখায়। দেখা গিয়েছে বর্তমানে ক্লাসের সবচেয়ে খারাপ ছাত্ররাই ছাত্রনেতা। তারা বারবার ফেল করে। তারা যেহেতু নেতা তাদের পাশ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য তাদেরকে নিয়ম পরিবর্তন করে হলেও বিশেষ বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। একই কথা বলা চলে শিক্ষক রাজনীতির ক্ষেত্রে। শিক্ষক রাজনীতিতে যেই শিক্ষকরা নেতৃত্ব দেয় গড়ে তারা হলো শিক্ষকদের মাঝে খারাপ মানের শিক্ষক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব যেহেতু তাদের হাতেই চলে গিয়েছে এই নেতৃত্বে আমাদের ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশাও করা যায় না।"
ahmedhelin publisher