Answered 2 years ago
আমি চীনের তিয়ানজিন ইউনিভার্সিটি তে আন্ডারগ্রেজুয়েটে পড়াশোনা করছি। আমি যখন চীনে যাই, আমি ভেবেছিলাম দেখবো চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা একটি দেশ যেখানে সবাই মাথা মুড়ানো কুংফু মাস্টার। কিন্তু চীন আমাকে অবাক করে ছাড়লো। চারিদিকে উঁচু উঁচু অট্টালিকা, পরিপাটি রাস্তাঘাট, অনেকটা যেন ইউরোপের একটা শহরে চলে এসেছি।
চীনে আমার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস হলো আমার ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস। তিয়ানজিনের সবুজ ঘেরা এলাকায় সুন্দর সুন্দর লাল ইটের বিল্ডিং গুলো। আর আমার সাথে পড়া সহপাঠীরাও খুব চমৎকার।
চাইনিজ কালচার
একটা নতুন দেশে কেউ গেলে সে প্রথম যে জিনিসটার মুখোমুখি হয় তা হলো কালচারাল শক। নতুন কালচারের কারণে নিজেকে অনেকটা অসহায় মনে হয়। মানিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়। তাই আমাদের ভার্সিটি চাইনিজ কালচার নামক একটা কোর্স রেখেছে। এক কোর্সটিতে আমরা চাইনিজ কালচার সম্পর্কে শিখতে পেরেছি, আবার নিজের দেশকেও রিপ্রেজেন্ট করতে পেরেছি। উপরের ছবিটিতে চায়নার সংস্কৃতির অংশ হিসেবে রঙবেরঙ এর মুখোশ বানিয়ে সব বন্ধুরা মিলে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছি।
থাওপাও
চীনে আমার আরেকটি প্রিয় জিনিস হলো থাওপাও (Taobao), এটা একটা অনলাইন শপিং সাইট। এমন কোনো জিনিস নেই যা এই সাইটে পাওয়া যায়না।
প্রতি বছর নভেম্বরের ১১ তারিখ চায়নার সবচেয়ে বড় শপিং ফেস্টিভাল। এদিন নাইকি, এডিডাস, জেক এন্ড জোন্স এর মত বড় বড় ব্র্যান্ডের জিনিসের উপর বিশাল মূল্যছাড় দেয়া হয়। আমি ২০১৯ এর শপিং ফেস্টিভালে প্রায় ৩০ হাজার টাকার শপিং করেছিলাম। পরে অবশ্য এক মাস রোজা রাখতে হয়েছিল।
মান্দারিন
যদিও আমাদের মেজর ইংরেজিতে, আমাদের ভার্সিটি আমাদেরকে মান্দারিন শিখানোর জন্য একটা চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স রেখেছিল। সত্যি বলতে প্রথম দিকে খুব কষ্ট হয়েছিল এই কোর্স করতে। যদিও ধীরে ধীরে মানিয়ে নিই, আর তখন চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ শিখা বেশ মজাদার হয়ে উঠেছিল।
চাইনিজ খাবার
চীনে যাবো আর চীনের বিখ্যাত খাবার গুলো চেখে দেখবোনা তা কি করে হয়? চীনাদের হাজারো রকম মজাদার খাবার রয়েছে। মোটামুটি অনেক খাবার ই চেখে দেখেছি। মুসলিমদের জন্য চাইনিজ খাবারের সমস্যা হলো কোনটা হালাল আর কোনটা হালাল না এটা আগে থেকে না জানলে বুঝা খুব কঠিন। এজন্য আমাদের ভার্সিটি মুসলিমদের জন্য আলাদা করে একটি হালাল ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করেছে।
চীনাদের খেলাধুলা
খেলাধুলায় চীনারা অনেক এগিয়ে। অলিম্পিকের অনেকগুলো ইভেন্টকে তো তারা নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে। আমাদের ভার্সিটিতে একটি ইনডোর স্পোর্টস ফ্যাসিলিটি, একটি আউটডোর স্টেডিয়াম আর একটি জিমনেশিয়াম আছে। আমরা বন্ধুরা প্রায় সময়ই ব্যাডমিন্টন কিংবা বাস্কেটবল খেলি।
আমাদের লাইব্রেরি
আমাদের ভার্সিটিতে রয়েছে বিশ্বমানের একটি লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরিতে যেমন রয়েছে পড়াশোনার অত্যাধুনিক ব্যবস্থা, তেমনি রয়েছে ঘুমানোর জন্য আরামদায়ক অনেকগুলো সোফা। আমি লাইব্রেরিতে নিয়মিত য। তবে পড়ার জন্য নয়, ঘুমানোর জন্য।
chamok publisher