Answered 2 years ago
অবাক হলেন? চিতা আর চিতাবাঘ এতদিন একই শব্দ জেনে আসছিলেন আর আজ শব্দ ও প্রাণী দুটি যে ভিন্ন তা জেনে অবাক হলেন?
হুম, আসলেই চিতা আর চিতাবাঘ আলাদা দুটি প্রজাতির প্রাণী।
এদের মাঝে রয়েছে স্পষ্টত কিছু পার্থক্য। সব পার্থক্য আলোচনা করে পোস্ট বড়ো না করে চলুন প্রধান কিছু পার্থক্য জানা যাক।
পার্থক্যসমূহ:
১।
★
চিতা/Cheetah-এর বৈজ্ঞানিক নাম
Acinonyx jubatus (Schreber, 1775)।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণিবিন্যাস:
Kingdom: Animalia
Phylum: Chordata
Class: Mammalia
Order: Carnivora
Suborder: Feliformia
Family: Felidae
Subfamily: Felinae
Genus: Acinonyx
Species: A. jubatus
Binomial name: Acinonyx jubatus
(Schreber, 1775)
★
আর চিতাবাঘের বা Leopard এর বৈজ্ঞানিক নাম Panthera pardus (Linnaeus, 1758)।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস:
Kingdom: Animalia
Phylum: Chordata
Class: Mammalia
Order: Carnivora
Suborder: Feliformia
Family: Felidae
Subfamily: Pantherinae
Genus: Panthera
Species: P. pardus
Binomial name:
Panthera pardus (Linnaeus, 1758)
২।
চিতার মাথা ছোটোখাটো।
অন্যদিকে লেপার্ড/চিতাবাঘের মাথা মধ্যম আকৃতির ও কিছুটা চিকন। বা বলতে পারেন চিতার চেয়ে বড়ো আকৃতির।
৩।
চিতার নাকের দুই পাশে চোখের নিচ হতে কালো টিয়ার মার্ক (Tear mark) রয়েছে, মনে হবে চিতার চোখ থেকে কালো ধারায় অশ্রু গড়িয়ে মুখের দুইপাশে এসে শেষ হয়েছে।
আর লেপার্ড/চিতাবাঘের এই Tear mark নেই। কমেন্টে দেওয়া চিত্রে দেখুন।
৪।
চিতার গায়ে গোলাপের মতো আকৃতির রোজেট থাকে না। চিতার গায়ে থাকে কালো ডট বা কালো বিন্দু। আর এসব বিন্দুগুলোর ভেতর কোনো খালি স্থান নেই।
লেপার্ড/চিতাবাঘের গায়ের কালো ছোপগুলো দেখতে গোলাপের পাপড়ির মতো, এদেরকে তাই রোজেটও বলা হয়। রোজেটের ভেতরে ফাঁকা স্থান আছে, নেহাত কালো ডট নয়।
কমেন্টের চিত্রে দেখুন।
৫।
চিতা সবচেয়ে দ্রুতগামী প্রাণী, চিতাবাঘ নয়। চিতা ৮০ থেকে ১২৮ কি.মি./ঘণ্টা (৫০-৮০ মাইল প্রতি ঘণ্টা) গতিতে ছুটতে পারে।
আর চিতাবাঘ প্রায় ৫৮ কি.মি./ঘণ্টা গতিতে ছুটতে পারে।
৬।
চিতার পাগুলো অনেক লম্বা, যে কারণে তারা এত দ্রুত দৌড়াতে পারে। তাছাড়া এর তুলনামূলক পাতলা গড়ন ও লম্বা লেজও এর দ্রুতগামী হওয়ার জন্য সুবিধা করে দেয়।
অন্যদিকে চিতাবাঘের গড়ন হচ্ছে অনেকটা মেছোবাঘ এর মতো, রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর ছোটো সাইজও বলতে পারেন। এর লেজ চিতার চেয়ে লম্বা হয়ে থাকে।
৭।
চিতার পেটের দিকে তাকালে মনে হবে এরা কয়দিন ধরে খায় না। চিতার পেট রোগা, আর চিতাবাঘের পেট বেশ হৃষ্টপুষ্ট ও ভরা।
৮। প্রাপ্তিস্থান:
চিতাবাঘ চিতার চেয়ে বিশ্বে বেশি বিস্তৃত।
ভারতের জলপাইগুড়ির জঙ্গল, আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের জঙ্গলেও বোধহয় পাওয়া যায়। এছাড়া Sub-Saharan Africa, Southern Russia, Central Asia, Indian subcontinent, Southeast ও East Asia তে এদের দেখা মিলে।
৯।
চিতা শিকার করে দিনের বেলা, কিন্তু চিতাবাঘ শিকার করে রাতে।
১০।
চিতাবাঘ:
কাধ: পুরুষের সাধারণ 60–70 cm
স্ত্রী: 57–64 cm
এদের মাথাসহ দেহের দৈর্ঘ্য ৯০ -- ১৯৬ সেন্টিমিটার ও লেজ ৬৬ থেকে ১০২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ভর: পুরুষ ৩৭-৯০ কেজি
স্ত্রী ২৮-৬০ কেজি
ভৌগোলিকভাবে সাইজে ভিন্নতা দেখা যায়। এগুলো গড় মাপ।
পুরুষ চিতাবাঘের শরীর মাদী চিতাবাঘের তুলনায় বৃহদাকার। চিতাবাঘের কান গোলাকৃতি।
চিতাবাঘের উপপ্রজাতি ৮টার মতো।
চিতা:
কাঁধ: 67–94 সে.মি. (26–37 ইঞ্চি)
এদের মাথা থেকে দেহের দৈর্ঘ্য
1.1 মিটার থেকে 1.5 মিটার (3 ft 7 ইঞ্চি থেকে 4 ft 11 ইঞ্চি)।
প্রাপ্তিস্থান: শুধু আফ্রিকা আর ইরানে এদের দেখা মেলে।
ভর: 21 থেকে 72 কেজি (46 থেকে 159 lb) এবং লেজ 60–80 সে.মি. (24–31 ইঞ্চি) পর্যন্ত হয় সাধারণত।
চিতার উপপ্রজাতি: ৪টা
A. j. hecki,
A. j. jubatus,
A. j. soemmeringii,
A. j. venaticus
১১। চিতা চিতাবাঘের মতো গর্জন দিতে পারে না।
১২। গাছে ওঠার ক্ষেত্রেও চিতার চেয়ে চিতাবাঘ বেশি দক্ষ। চিতাকেও গাছে উঠতে দেখা গেলেও তাদের থাবার নখগুলো গাছে ওঠার চেয়ে দৌঁড়ের জন্য বেশি দক্ষ। চিতাবাঘ এদিকে গাছে ওঠার দিক দিয়ে বেশ বিখ্যাত।
salmon publisher