Answered 2 years ago
এর সত্যি উত্তরটা বাংলাদেশীদের পছন্দ হবে না। বরাবরের মতন আরেকটি গালিগালাজ এবং আক্রমণের থ্রেড হবে। তারপরেও, দেখা যাক বাংলাদেশে কেন ভারতের বাঙালিরা কাজ করতে যান। বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টরে অত্যন্ত হাইলি স্কীল্ড লোকজনের খুবই অভাব। এ কথা আমি বলছি না, বলছে প্রথম আলো'র বিভিন্ন লিঙ্ক। ১। বিমা কোম্পানিগুলোর দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে মাঠ পর্যায়ে ২।
‘পর্যটনশিল্পের প্রসারে দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন। এ খাত থেকে সুফল ঘরে তুলতে
হলে বেশি করে দক্ষ পর্যটনকর্মী তৈরি করতে হবে। আমাদের দেশে পর্যটনশিল্পে
এখনো প্রচুর বিদেশি কাজ করে, যেখানে আমাদের দেশীয় লোকবলের কাজ করার সুযোগ
রয়েছে। ৩।
‘শোনেন, মশিউল সাহেব, আমার প্রতিষ্ঠানে কিছু লোক দরকার। এক লাখ, দেড় লাখ
টাকা বেতন দেব, দুই মাস ধরে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিচ্ছি, কিন্তু লোক পাচ্ছি
না।’ ‘বলেন কী? দেশে লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত বেকার ছেলেমেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর আপনি এত টাকা বেতন দিতে চেয়েও লোক পাচ্ছেন না?’ ‘না,
সত্যিই পাচ্ছি না। ইন্টারভিউ দিতে আসে, অনার্স–মাস্টার্স পাস করা তরুণেরা
ইন্টারভিউ দিতে আসে, কিন্তু কিচ্ছু জানে না। ঢাকা ভার্সিটি থেকে ইংলিশে
মাস্টার্স করে আসছে, দুইটা সেনটেন্স শুদ্ধ করে ইংলিশ লিখতে পারে না। কথা
বললে মনে হবে আইকিউ লেভেল এত কম! দুনিয়ার কোনো খোঁজখবরই রাখে না।’ ৪। প্রথম আলো: বর্তমানে এ শিল্প কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়? আর
এন পাল: বর্তমানে দক্ষ লোকের অভাব এ শিল্পের বড় সমস্যা। দক্ষ লোকের সংকটে এ
খাতে মানসম্পন্ন ফ্রিজ বানানোর কাজ বিঘ্নিত হয়। যেমন কপার ঠিকমতো লাগানো
না হলে ভালোমতো কাজ করে না ফ্রিজ। আবার ফ্রিজের জন্য যে ধরনের লোক দরকার,
সেই ধরনের দক্ষ লোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দিতে পারছে না। তাই আমাদের
কর্মীদের চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ দিতে হচ্ছে। ফ্রিজশিল্পের জন্য প্রতিবছর ১০
হাজার দক্ষ লোক দরকার। ৫। দেশের উচ্চশিক্ষিত যুবদের মধ্যেও দক্ষতার অভাব রয়েছে ৬।ব্যাংকে দক্ষ আইটি কর্মকর্তার অভাব আছে এই
লিঙ্কগুলো পর্যালোচনা করলেই দেখতে পাবেন সবার মেইন বক্তব্য একই। বাংলাদেশে
দক্ষ অর্থাৎ এক্সপার্ট লোকের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় কম, খুবই কম। এবারে আসি ভারতের বাঙালি এবং অন্যান্য দের কথায়। ১।
গুগল, আমাজন এবং ফেসবুকের চাকরির পরীক্ষায় সফল এই বাঙালি যুবক বছরে মাইনে
পাবেন ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ইনি সদ্য কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এ
গ্রাজুয়েট, এবং টেকনোলোজিতে ভারতের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ আইআইটি
কিংবা এনআইটি'র ছাত্রও নন। অতি সাধারণ ঘরের ছেলে। কিন্তু লক্ষ্যটা বিবেচনা
করুন। বিশাখ
মণ্ডল বলেন, করোনা মহামারিকালে গত দুই বছর তিনি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে
ইন্টার্নশিপ করেন। সেই সুবাদে তিনি তাঁর পাঠ্যক্রমের বাইরের জ্ঞান অর্জনের
সুযোগ পান। এই বিষয়ই তাঁকে চাকরির সাক্ষাৎকারে ভালো করতে সাহায্য করেছে। বিশাখ
মণ্ডলের বাড়ি বীরভূম জেলায়। জেলার একটি সাধারণ পরিবারে তাঁর জন্ম, বেড়ে
ওঠা। বিশাখ মণ্ডলের মা শিবানী। তিনি গ্রামীণ শিশুযত্ন কেন্দ্রের
(অঙ্গনওয়াড়ি) একজন কর্মী। লক্ষ্যটা
দেখেছেন? করোনাকালে বাড়ি বসে আপনি যখন সময় কাটানোর জন্য প্রেম করছেন, মুভি
দেখছেন, কোরাতে ভারতকে গালিগালাজ করছেন কিংবা ফেসবুকে সময় নষ্ট করেছেন, এই
যুবকটি তখন ইন্টার্নশিপ করছে। অর্থাৎ নিজেকে দক্ষ হিসেবে প্রতিপন্ন করছেন,
পাঠ্যক্রমের বাইরের জ্ঞান অর্জন করছেন। তুলনা করুন, এই যুবকের সাথে, এই প্যারাটা, ৩ নম্বর লিঙ্ক থেকে। অনার্স–মাস্টার্স
পাস করা তরুণেরা ইন্টারভিউ দিতে আসে, কিন্তু কিচ্ছু জানে না। ঢাকা
ভার্সিটি থেকে ইংলিশে মাস্টার্স করে আসছে, দুইটা সেনটেন্স শুদ্ধ করে ইংলিশ
লিখতে পারে না। কথা বললে মনে হবে আইকিউ লেভেল এত কম! দুনিয়ার কোনো খোঁজখবরই
রাখে না।’ তাহলে, বুঝতেই পারছেন, কেন বাংলাদেশে ভারতের বাঙালি এবং অন্যান্যরা চাকরি করতে আসে। উল্টোদিকে,
ভারতে শ্রমিকের কাজ, রিকশা চালাতে, সাইকেল দোকানে পাংচার সারাতে,
দিনমজুরের কাজ করতে আসে কিংবা ঘরের কাজ করতে আসে বাংলাদেশীরা। মূল মন্ত্র
হচ্ছে ওই দক্ষতার অভাব।
Aniket publisher