Answered 2 years ago
ভারতের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রতন টাটা সম্প্রতি জার্মানি গিয়ে এক রেস্তোরায় খাবার নষ্টের অপরাধে ৫০ ইউরো জরিমানা গুনেছেন। এই সামান্য অর্থ জরিমানা হয়তো রতন টাটার জন্যে বড় কোনো বিষয় নয়, তবে সেই দিন রেস্তোরায় গিয়ে যা শিখেছেন তিনি তা সত্যিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।
ওই দিনের বর্ণনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তুলে ধরেছেন রতন টাটা। রতন টাটার ওই পোস্ট ঢাকাটাইমসের পাঠকের জন্যে হুবহু অনুবাদ করে দেয়া হলো:
বিশ্বের অন্যতম শিল্পোন্নত দেশ জার্মানি। অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন যে ওই দেশের নাগরিকরা খুবই বিলাসবহুল জীবনযাপন করে।
সম্প্রতি সহকর্মীকে নিয়ে হামবুর্গে একটি রেস্তোরায় গিয়েছিলেন ভারতের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী রতন টাটা সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান প্রচুর টেবিলই খালি। একটি টেবিলে চোখ আটকে যায় রতন টাটার। ওই টেবিলে বসে তরুণ এক রুটি খাচ্ছিলো। কিন্তু তাদের খাওয়ার আয়োজন ছিল খুবই সামান্য। মাত্র দুটি ডিস এবং দুই বোতল বিয়ার।
রতন টাটা অবাক হয়ে বলেন, ‘কত সাধারন খাবারে জীবনের কত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এরা দুজন। আসলেই কী রোমান্টিক!’
অপর আরেকটি টেবিলে বসেছিলেন কয়েকজন বয়স্ক নারী। তাদের অর্ডার অনুযায়ী খাবার নিয়ে এসে প্রত্যেকের প্লেটে সমান ভাবে ভাগ করে দেন ওয়েটার। এবং তারা প্রত্যেকেই চেটেপুটে প্লেটের সব খাবার শেষে করেছেন। খাবার নিয়ে কোনো রকমের বিলাসিতা ছিলো না তাদের মধ্যে।
এবার নিজের কথা বললেন রতন টাটা। যেহেতু তারা খুব ক্ষুধার্থ ছিলেন সেজন্যে বেশ অনেকটা খাবার অর্ডার করেছিলেন রতন টাটার সহকর্মী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রায় এক-তৃতীয়াংশ খাবারই ছুঁয়েও দেখা হলো না তাদের।
এরপর রতন টাটা এবং তার সহকর্মী যখন রেস্তোরা থেকে বেরুনোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল ওই সময়ে এক বয়স্ক নারী বিরক্ত হয়ে তাদের বললেন, তোমাদের খাবার নষ্ট করা উচিত হয়নি।
সহকর্মী ওই নারীকে উত্তর দিলেন, ‘আমরা টাকা দিয়ে খাবার কিনেছি। খাবার নষ্ট করবো, নাকি খাবো এটাতে তোমার মাথা ঘামানোর কী আছে?
এই উত্তরে বেশি ক্ষেপে গেলেন ওই নারী। সঙ্গে থাকা আরেকজন ততক্ষণাৎ ফোন বের করে কাকে যেন ফোন দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা সংস্থার পোশাক করা এক ব্যক্তি এসে হাজির হলেন। ওই ব্যক্তি সব কিছু শুনে রতন টাটা এবং তার সহকর্মীকে ৫০ ইউরো জরিমানা করে বসলেন। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যান রতন টাটা।
তারপর সেই কর্মকর্তা রাগান্বিত সুরে কর্মকর্তাকে বললেন, ‘তুমি তোমার টাকায় খাবার কিনলেও, সম্পদ তো সমাজের। বিশ্বের অনেক মানুষ সম্পদের অভাবে রয়েছে। সুতরাং সম্পদ নষ্ট করার কোনো অধিকার তোমার নেই।’
ahmedbee publisher