কেউ যদি মৃত্যুর পূর্বে কাউকে দায়ী করে নোট লিখে যান তাহলে তার কী ধরনের শাস্তি হতে পারে? আর যদি সে আদতে দায়ী না হয়?

1 Answers   13.6 K

Answered 3 years ago

"আমার মৃত্যুর জন্য নীল পরী নীলাঞ্জনা দায়ী"। একথা লিখে কুদ্দুস বয়াতি যদি ফ্যানের সাথে ঝুলে পরে, অথবা তার রক্তাক্ত লাশ বিছানায় পরে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায় তাহলে পুলিশ প্রথমেই এই নীলাঞ্জনাকে খুঁজবে তাতে কোন সন্দেহ নাই।

এটা বাংলাদেশ সাক্ষ্য আইনের ৩২ ধারা মোতাবেক ডায়িং ডিক্লারেশনের মর্যাদা না পেলেও ডায়িং নোট হিসাবে প্রথাগত ভাবে সাময়িক বিশ্বাসযোগ্যতা পায়।

কেন পায়? পায়, কারণ ধরে নেওয়া হয়, যে লোকটির মৃত্যু আসন্ন সে মৃত্যুর পূর্বে মিথ্যা কথা বলতে পারে না। সে যা লিখে গেছে সেটাকে সত্য ধরে নিয়েই তদন্ত চলে।

এখন মৃত্যুটা কিভাবে হলো সেটার উপর নির্ভর করে, এই ডায়িং নোট কতটা গুরুত্ব পাবে।

যদি এটা আত্মহত্যা জনিত মৃত্যু হিসাবে প্রমাণিত হয় তবে এই ডায়িং নোট দিয়ে নীলাঞ্জনাকে ফাঁসানো যাবেনা। যদি না সে তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।

আত্মহত্যার প্ররোচনার ব্যাখ্যা একটু বিশাল। উদাহরণ দিয়ে বলে বিষয়টা সংক্ষিপ্ত করে দিতে চাই।

নীলাঞ্জনার সাথে বয়াতির প্রেম ছিল, নীলাঞ্জনা প্রেমে প্রতারণা করায় বয়াতি ঝুলে পড়লো। এটা প্ররোচনা নয়।

কিন্তু ঝুলে পরার জন্য বয়াতিকে দড়ি এনে দিল- এটা প্ররোচনা।

যাইহোক ডায়িং নোটকে অকাট্য প্রমাণ হিসাবে নেয়ার সুযোগ নেই। পুলিশকে সামঞ্জস্যতাপূর্ণ এভিডেন্সও কালেক্ট করতে হবে।

পুলিশ যদি প্রমাণ করতে পারে বয়াতির আত্মহত্যা নীলাঞ্জনার প্ররোচনাতেই ঘটছে, তবেই আদালত ডায়িং নোটকে বিবেচনা করবেন।

সেক্ষেত্রে নিলাঞ্জনার ৬ মাস- থেকে ২ বছরের সাজা হতে পারে।

বয়াতির মৃত্যু যদি খুন জনিত হয় তবে নীলাঞ্জনার যতটুকু অপরাধ প্রমাণ হবে ততটুকুর জন্য ১০ বছর মেয়াদ থেকে যাবজ্জীবন কিম্বা ফাঁসির হুকুম পর্যন্ত হতে পারে।

আর মিডিয়া বা সোশাল মিডিয়া যদি এই হ্যান্ডনোটের ছবি পেয়ে যায় তাতে নীলাঞ্জনা দোষী না নির্দোষ তা প্রমাণের আগেই নীলাঞ্জনার জীবন হেল হয়ে যাবে।

Mohon Ali
Mohon Ali
661 Points

Popular Questions