কল্পনা করুন, যদি রাশিয়ার কায়দায় ভারত বাংলাদেশ দখল করার জন্য ভারতীয় সামরিক বাহিনী হামলা করে, তখন কত কোটি বাংলাদেশী হাতে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করবে ও কোন কোন দেশ বাংলাদেশকে সাহায্য করবে?
0
0
1 Answers
14.3 K
0
Answered
1 year ago
কুরুচিকর প্রশ্নে কুরুচিকর উত্তর। সুরুচিবান লোকজন পড়বেন না। পড়লেও লুকিয়ে লুকিয়ে পড়বেন।
কল্পনার সীমা নাই। গল্পের গরু গাছে উঠে।
কিন্তু কী কারণ, কেমন পরিস্থিতি এগুলো জানা না থাকলে কাল্পনিক ঘটনারও উত্তর দেওয়া কষ্টকর। আমি ধরে নিচ্ছি ভারত এবং বাংলাদেশের সরকার থেকে শুরু করে সামরিক ও বেসামরিক সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে উভয় রাষ্ট্রেই প্রতিটি স্তরে একে অপরের প্রতি ভীষণ অনাস্থা এবং বৈরিতা জমেছে। এমনকি দুই দেশে একজনও কান্ডজ্ঞান সম্পন্ন লোক বাকি নাই যে কিনা এরকম একটা ঘটনা থামানোর ক্ষমতা রাখে। বাস্তবে এমন ঘটা অসম্ভব, তবু কল্পনার খাতিরে ধরলাম ঘটেছে। এবং এক পর্যায়ে ভারত বাংলাদেশে আক্রমন করেছে। এমন অবস্থায় কী ঘটতে পারে?
কোন দেশ বাংলাদেশকে সাহায্য করবে না। বাংলাদেশ সাগরে ডুবে নাই হয়ে গেলেও বাকি বিশ্বের কিচ্ছু আসে যায় না।
কোন ভিনদেশি মুসলিম ভাই আসবে না, তুর্কি সিরিয়ালের কোন নায়ক আসবে না, ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার ফুটবলার আসবে না, মাঝে মাঝে চোখ রাঙ্গানি দেওয়া পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলো আসবে না, চীন, জাপান ইত্যাদি তো হিসাবেরই বাইরে। সুদূর অতীতে ইস্রায়েলিরা খানিকটা আবেগি ছিল। ৭১ এ একবার বিপদে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়ে অপমানিত হয়েছে, ওরাও আসবে না। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ইন্টার্নেটে কিছু লোক প্যাঁ-পোঁ করতে পারে। বাস্তবে শূন্য অবদান রাখবে।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করবে। যতক্ষণ পারে প্রতিরোধ করবে।
বাংলাদেশের বেসামরিক প্রশাসন থেকে খুব বেশি আশা করা যাচ্ছে না। তাদেরকে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয় একটা আক্রান্ত অঞ্চল, ধরলাম সীমান্তবর্তী একটা থানা, থেকে সব বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার, সেই কাজেও গাফিলতি করবে এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ এই পরিস্থিতিতেও চুরি-চামারি করার সুযোগ ছাড়বে না। একটা গোটা জেলার দায়িত্ব দিলে আরও বড় তামাশা দেখবেন।
সাধারণ নাগরিকদের বিশাআআআআআআআল অংশ, আক্রমণকারীদের সাথে সখ্যতা করবে। যারা তারস্বরে চিৎকার করে সারাদিন ভারতকে গালাগাল করে তারাও এই দলে থাকবে। মাদ্রাসার হুজুরেরাও থাকবে এই দলে। অনেকেই নিজের হিন্দি ভাষাজ্ঞান প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লাগবে। হুজুরেরা আনুষ্ঠানিক উর্দু শিক্ষার কল্যানে অনেকেই সঠিক ব্যকরনে হিন্দি ইত্যাদি বলে হিন্দিভাষী হানাদারদের মন জয় করবে। বাংলার মাটিতে আবারও রাজাকার বাহিনীর মত সংগঠন দেখার সুযোগ হবে, তবে তার নাম অন্য কিছু হবে। হুজুরদের একাংশ হঠাৎ খুঁজে পাবে কোরানে আছে হিন্দু/সনাতন ধর্ম প্রকৃতপক্ষে ইসলাম ধর্মের সাথেই কিভাবে জানি সম্পর্কিত। এমনকি দুই একজন গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ইসলামের নবী মুহম্মদ ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন, তারও নিদর্শন হাদিস খুঁজে বের করবে। এবং এই ব্যপারটা যে বিজ্ঞানসম্মত তার প্রমাণও তারা কোরান থেকে বের করে দেখাবে। কারণ কোরান মূলত একটি বিজ্ঞান গ্রন্থ হিসেবেই তারা মানে।
সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে খুবই নগণ্য সংখ্যক বাংলাদেশি, দেশের জনসংখ্যার ১% হয়ত হবে না, স্বেচ্ছায় যুদ্ধে অংশ নিতে এগিয়ে আসতে পারে। যদি সামরিক বাহিনী এদেরকে কাজে লাগানোর সুযোগ পায়, হয়ত প্রতিরোধ একটু দীর্ঘ হবে। এই ১% এর মধ্যে হিন্দু, মুসলিম, আস্তিক, নাস্তিক, ভাত খেকো, বার্গার খেকো, লুঙ্গি, ধুতি, দাড়ি, টিকি সব দেখবেন। কারণ ক্রাইসিসের সময় প্রাকৃতিক নিয়মেই কিছু লোক অনেক তুচ্ছ ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠতে পারে। কিন্তু কে কখন জঞ্জাল ফেলে উঠে আসবে আগে থেকে বলা যায় না। দেশ, সমাজ রাজনীতি নিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় যার কোন আগ্রহ নাই, সে এগিয়ে এসে অনেক বড় দায়িত্ব নিতে পারে। সারাদিন বড় বড় কথা বলা মানুষ লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যেতে পারে। বাঙ্গালিদের মধ্যে উভয় ধরনের স্বভাব বিদ্যমান।
কল্পনার সীমা নাই। গল্পের গরু গাছে উঠে। আমি এক পাল গরু তাল গাছে তুলে দিলাম। ঐ দেখা যায় তাল গাছ, ঐ আমাদের গাঁ। তাল গাছটা আমার।
—
সম্পাদনা ১
এই উত্তরে মন্তব্য দিতে লোকজন বাল উপড়ে আঁটি বানাবে অনুমান করেছিলাম, অনুমান সত্য প্রমাণিত হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশ থেকেই বাল ফেলার লোক এসে গেছে।
যারা প্রথম উত্তরটা পড়ছেন, অনুরোধ করি মন্তব্যগুলোও পড়বেন। উত্তরের চেয়ে মন্তব্যে বিনোদন বেশি।
Aniket publisher