Answered 2 years ago
শাহরুখ খান একজন অত্যন্ত দক্ষ অভিনেতা যিনি নায়ক হবার চক্করে পড়ে, নিজের অভিনয়ক্ষমতার প্রতি সুবিচার করে উঠতে পারেননি।
আমি ব্যাক্তিগত ভাবে শাহরুখ খানের অভিনয়ের ভক্ত। তবে আমি এটাও স্বীকার করি, যে শাহরুখ যে উচ্চতার অভিনয় করার ক্ষমতা রাখেন, সেই উচ্চতার অভিনয় খুব বেশী ছবিতে করার সুযোগ পাননি।
যদি নব্বইএর দশকে ফিরে যাই, তাহলে কিন্তু শাহরুখ বেশ কিছু অন্যরকম অভিনয় করেছেন যেগুলো যথেষ্ট প্রশংসার দাবী রাখে। এই ছবিগুলোর মধ্যে বাজিগর (১৯৯৩) বা ডর (১৯৯৩) বাণিজ্যিক সাফল্য বেশী পেলেও, কভি হাঁ কভি না (১৯৯৪), আনজাম (১৯৯৪), এর মতো ছবিগুলো অনেকাংশেই উপেক্ষিত। এই ছবিগুলোতে শাহরুখের অভিনয় সময়ের থেকে এগিয়ে ছিল - বললেও অত্যুক্তি হবে না। এই সময়ের অনেক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনয় দেখলে চোখে জল আসে … এতটাই মধ্যমানের সে অভিনয়। উদাহরণস্বরূপ ২০০০ সালের অনিল কপুর (পুকার ছবির জন্য) এবং ১৯৯৮ সালের অজয় দেভগন (জখম ছবির জন্য), এই দুটো পারফরমেন্সের কথা বলা যায়।
তারপরে ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ে, শাহরুখ, স্বদেশ (২০০৪), চক দে ইন্ডিয়া (২০০৭), বীর-জারা (২০০৪), পহেলি (২০০৫), মাই নেম ইজ খান (২০১০) -এরকম বেশ কয়েকটা ভালো ছবি করলেও, শেষ অবধি শিকে ছেঁড়েনি। এই প্রতিটা ছবিতেই শাহরুখের অভিনয় দক্ষতা চোখে পড়ে। এর মধ্যে উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে শাহরুখ খানকে স্বদেশ ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার না দিয়ে দেওয়া হয় সেইফ আলি খানকে, তাও আবার হাম তুম ছবির জন্যে।
কি লজ্জা ! কি লজ্জা ! আরো লজ্জাজনক ব্যাপার হল, সেবছর জাতীয় পুরস্কার, এর বিচারক দের অন্যতমা ছিলেন শর্মিলা ঠাকুর, সেইফ এর মাতাদেবী, স্বয়ং!
লালমোহন বাবুর ভাষায় বলতে গেলে, ব্যাপারটা হাইলি সাসপিশাস !
২০০৬-৭ সালের আশপাশ থেকে বলিউডেও টুকটাক অন্যরকম ছবি হওয়া শুরু হয়। তারই ফলস্বরূপ আজকাল আয়ুষ্মান খুরানা (আন্ধাধুন) বা মনোজ বাজপেয়ীর (ভোন্সলে) মতো চরিত্রাভেনাতারাও আজকাল জাতীয় পুরস্কার অর্জন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এটা মানতেই হবে, ২০১০ এর পরবর্তী সময়ে শাহরুখের চলচ্চিত্র-নির্বাচনের ব্যাপারে যত কম বলা যায় ততই ভালো। এরই মধ্যে ডিয়ার জিন্দেগি ছবিতে শাহরুখ ফাটিয়ে অভিনয় করলেও, সেটাকে 'লিড চরিত্র' বলা যায় কিনা সেটা বলা মুশকিল।
শাহরুখ এখনও জাতীয় পুরস্কার পান নি ঠিকই, কিন্তু ভালো চলচ্চিত্র নির্বাচন করতে পারলে পাবার সময় এখনও পেরিয়ে যায় নি। ঘটনাচক্রে, অমিতাভ বচ্চন কিন্তু নিজের ৪ টে জাতীয় পুরস্কারের মধ্যে ৩ টেই পেয়েছেন বয়সকালে — নিজের অভিনয় জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসে — ব্ল্যাক (২০০৫), পা (২০০৯), আর পিকু (২০১৪) এই তিন ছবির জন্য।
bivorshaim publisher