একজন বাংলাদেশী হিসেবে আরেকজন বাংলাদেশীকে আপনি কী বলতে চান?

1 Answers   7.4 K

Answered 2 years ago

জাতির অসভ্যতা দেখেন:

আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের চমৎকার খবরঃ

ইতালির এক শহরে রিফিউজি ক্যাম্পে ৩২ জন বাঙালী ইতালিতে আশ্রয় প্রার্থী হয়ে বসবাস করছে, ক্যাম্প মানে ফোউর স্টার হোটেল। তাদের সব কয়জনই বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া হয়ে অনেক অত্যাচার জুলুম সহ্য করে সাগর পথে ইতালিতে প্রবেশ করেছে।

এদের প্রত্যেকের আশ্রয় প্রার্থনার মামলার আমি আদালতের টেরোটোরিয়াল এবং কমিশনে দুভাষীর দায়িত্বে ছিলাম, মানে আদালত আমাকে হায়ার করেছিলো। এমন কি এদের S.E.C-3 করার সময়েও সবার দুভাষী আমি ছিলাম। যে কারনে এদের প্রত্যেকের মামলার বিবরন আমার জানা। এবং এদের প্রত্যেকের মামলায় বিবরনিতে লিখেছে, তাহারা দেশে অসহায়, নিরুপায়, সর্বস্ব হারা। দেশে না খেয়ে থাকতে হয় বলে চুরাই পথে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে এসেছে জীবন বাঁচাতে। অতএব মানবিক কারনে হলেও ইতালির অথোরিটি যেন তাদেরকে আশ্রয় দেয়।

গত ৩/৪ দিন আগে ব্রাজিলের খেলা দেখার সময়ে এই ৩২ বাঙালী দুই দলে বিভক্ত হয়ে প্রথমে হাতাহাতি, পরে লাঠি সুঠা নিয়ে মারামারি করে দুইজন বাঙ্গালীর মাথা ফাটিয়েছে। ক্যাম্পের সিকিউরিটি এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে অবশেষে পুলিশ কল করেছে। তো পুলিশ এসে তাদেরকে আটক করে।

উক্ত ক্যাম্পের ডাইরেক্টর হলেন একজন ইটালিয়ান মহিলা, নাম ডিয়ানা। তিনি আমাকে নিজের ছেলে মনে করেন। ডিয়ানা পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ করেছে, "আমি না পৌছা পর্যন্ত যেন ওদেরকে কোর্টে চালান না দেয়।

ডিয়ানা আমাকে কল করার পর আমি ওখানে পৌছলে ডিয়ানা আমাকে বিস্তারিত খুলে বলল । তিনি আমাকে বললেন, সে এই কারনেই পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ করেছে কারন তিনি জানতেন এরা ঘরবাড়ি জমিজমা বিক্রি করে ঋণ করে অনেক কষ্টের মাঝে দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছে। তো, দেশে ফিরে গেলে এরা পরিবারসহ প্রচুর ক্ষতির সম্মুখে পড়বে।

ডিয়ানা তৎক্ষণাৎ আমাকে নিয়ে থানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন। থানায় পৌঁছে লকআপের কাছে পৌছতেই উক্ত বাঙালী ভাইয়েরা প্রচুর কান্না শুরু করে দিয়ে দুহাত তুলে করোজুড়ে মিনতি করে বলছে, ভাইয়া আমাদেরকে বাঁচান, এমন ভুল জীবনে আর করবো না।

তো, আমি আর ডিয়ানা পুলিশ কমিশনারের অফিস কক্ষে গেলাম। অনেক কথার মাঝে বয়স্ক কমিশনার অনেক দুঃখ করে আমাকে বলল, রুজি রুটি খুঁজতে এতো কষ্ট করে এই দেশে এসে ভিনদেশের ফুটবল খেলা নিয়ে স্বজাতির মাথা ফাটায় ক্যামনে, তা আমাকে একটু বুঝাইয়া বল।

-আমার কোন উত্তর জানা ছিল না। রাগে দুঃখে বললাম, আমি কেন, আমার বাপ দাদা চৌদ্দ গোষ্ঠী কবর থেকে উঠে এসেও তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না।

কমিশনার আমার লজ্জা ঘৃণা আর ক্ষোভের চেহারা দেখে আমাকে বুঝার চেষ্টা করছিলো। এর পরেই নাকে খত দিয়ে ওদেরকে লকআপ থেকে নিয়ে এসে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে ডিয়ানাকে বললাম, এখানে আর আমার এক মিনিটও দাড়িয়ে থাকার ইচ্ছে হচ্ছে না, আমি গেলাম বলে নিজের বাসার পথে রওয়ানা দিলাম

নাজ জাইন, ইতালি।

বাংলাদেশীদের সম্বন্ধে আর কি বলব? নিজেরাই বুঝে নিন।


Abu Toha
abutoha02
108 Points

Popular Questions