Answered 2 years ago
চলে আসুন, বিশ্বের সেরা শহরগুলোর একটিতে। গ্রাম্য পরিবেশে বড় হয়েছেন থেকে লন্ডনে আসছেন শুনেই ভালো লাগছে।
১। প্রতি বাক্যে দরকার মত প্লিজ আর থ্যাঙ্ক ইউ বলবেন।
২। কারো সাথে কথা বলার সময় চোখে চোখ রাখবেন, অন্য কোথাও না বা অন্যদিকে না
৩। ইংরেজি নিয়ে চিন্তা করবেন না। ভুল হোক বলতে, এরা এতে অভ্যস্ত। আস্তে আস্তে শিখে যাবেন।
৪। সবসময় দরজা খুলে ভেতরে গেলে পেছনের জনের জন্য দরজা খুলে ও ধরে রাখবেন (যদি আপনার ২ হাত দূরত্বে পেছনে কেউ থাকেন)
৫। চলন্ত সিঁড়ি বা এসক্যালেটরে সর্বদা ডানদিকে দাঁড়াবেন, ওভারটেক করতে হলে বামদিক দিয়ে। কিন্তু ভুলেও উল্টোটা মানে বামদিকে দাঁড়িয়ে আর ডানদিক দিয়ে ওভারটেক করবেন না।
৬। গাড়ি চালানো শিখুন যত জলদি পারবেন। এতে বেশ কিছু পার্ট টাইম জব (উবার ইটস, ডেলিভারু, জাস্ট ইট) অপরচুনিটি পাবেন যা গাড়ি না চালাতে জানলে হবে না
৭। কাউকে চুমো খেতে দেখলে রাস্তাঘাটে হাঁ করে তাকিয়ে থাকবেন না - যদি মনে করেন জোর জবরদস্তি করছে কেউ তাহলে হীরো হতে যাবেন না, পুলিশ এ ফোন করবেন। পুলিশ আপনাকে হ্যারাস করবে না এটা মনে রাখবেন।
৮। আইন ভাংবেন না। স্টুডেন্ট ভিসায় ২০ ঘন্টার বেশী কাজের পারমিট নেই, ২০.১ ঘন্টা করলেও ধরা পড়তে পারেন এবং সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ভিসা পেতে, পাল্টাতে সমস্যা হবে। ট্রেনে টিকেট না কেটে উঠবেন না। গাঁজা, মারিজুয়ানা এইসব দ্রব্য থেকে ২০০ হাত দূরে থাকবেন
৯। পড়াশোনা করতে আসছেন, টাকা কামাতে নয় এটা মাথায় রাখবেন। ভালো রেজাল্ট হলে প্রচুর টাকা কামাতে পারবেন সারাজীবনে এটা মাথায় রাখুন। কিন্তু ছাত্রজীবনে টাকা কামানোর চিন্তা করলে পড়াশোনায় ফাঁকি হবে, হবেই। তাহলে সারাজীবনের জন্য পস্তাবেন।
১০। এখানে ফাঁকি দিলে কেউ তা নিয়ে বকাবকি করবে না। সময় নষ্ট করলে তা নিয়েও না। কারণ সেই ফাঁকিতে আপনিই পড়বেন, অন্য কেউ না।
১১। প্রফেসরদের সাথে সম্মান দিয়ে কথা বলুন কিন্তু তাঁদের সাথে মিশে যান ভালোভাবে। মনে রাখবেন ওনারা রাগী হোক আর যাই হোক, মানুষ এবং ছাত্রদের ভালোই চান।
১২। পার্টি করবেন। কিন্তু মাত্রায়। আমি ছাত্রাবস্থায় মাসে একদিন পার্টিতে যেতাম রুটিন মেনে। নাইটক্লাবে প্রতি তিনমাসে একবার। বিদেশে এসেছেন, টেস্ট করবেন সব কিছুই বাট অ্যাডিক্টেড হবেন না।
১৩। সিগারেট জাতীয় নেশার বস্তু ছাড়বার এটাই বেস্ট সময়। লন্ডনে সিগারেটের দাম অনেক বেশি
১৪। কোনও সাদা/কালো/ইয়েলো/ব্রাউন/রেড/ব্লন্ড/ব্রুনেট/জিঞ্জার ছেলে বা মেয়েকে পছন্দ হলে, পিছু নেবেন না বা স্টক করবেন না। বন্ধুর মত মিশুন, সময় সুযোগ করে বলে দিন সাহস করে। মেয়েদের টোন টিটকিরি করবেন না, এখানের মেয়েরা ওসব শুনে মাথা নিচু করে চলে যাবার মত নয়। পিটুনি দেবে।
১৫। শুধুমাত্র নিজের এলাকার বা দেশের মানুষের সাথে ঘাপ্টি মেরে বসে আড্ডা দেবেন না। সব দেশের সব রকমের মানুষের সাথে মিশুন।
১৬। লন্ডনের পেটীকোট লেন, হোয়াইটচ্যাপেল আর অল্ডগেট ইষ্ট ঘুরতে আসবেন। বিশেষ করে সোম থেকে শনি মনে হবে বাংলাদেশেই আছেন।
EDIT:
১৭। বাসে ওঠা বা নামার সময় হুড়োহুড়ি করবার দরকার নেই। লোকাল লন্ডন বাস, লাইনে দাঁড়ানো সবাইকে না নিয়ে বা না নামিয়ে ছাড়বে না (এটা কিন্তু দূরপাল্লার বাসের কথা বলছি না, মানে লন্ডন থেকে ম্যাঞ্চেস্টার যাবার বাস টাইমলিই ছাড়বে, ওয়েট করবে না)। বেশীরভাগ বাসে ওঠা ও নামার জন্য আলাদা দরজা থাকে, কিন্তু যদি দরজা একটিই হয় তবে আগে নামতে দিন। বাস এর দরজা খুললেই লাফ দিয়ে আগে উঠে পড়বেন না। আর বাসে উঠে টিকেট কাটতে একজ্যাক্ট চেঞ্জ রাখতে হবে, তবে ৯৯% মানুষই কন্ট্যাক্টলেস ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড ইউজ করে।
১৮। প্রথমে এসেই এন এইচ এস মানে এখানের ডাক্তারি সার্ভিসে নাম নথিভুক্ত করবেন। অনলাইনে অ্যাপ্লাই করবেন ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স নাম্বার এর। আর যোগাড় করবেন একটা অ্যাড্রেস প্রুফ মানে যে খানে থাকবেন তার একটা ডকুমেন্টারি প্রমাণ। এইগুলো পেলেই যাবেন ব্যাঙ্কে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে। ছাত্র যে, তা প্রমাণে ইউনির থেকে একটা কাগজ আর আইডী কার্ড নিয়ে যাবেন। ওরাই ডেবিট কার্ড অফার করবে, কন্ট্যাক্টলেস কিনা চেক করে, নিয়ে নেবেন।
১৯। পকেটে ক্যাশ ৫-১০ পাউণ্ডের বেশি রাখবেন না। পকেটমারে (এবং সুন্দরী দেখতে) লন্ডন ভর্তি।
২০। সমস্ত কাগজ, পাসপোর্ট, ব্যাঙ্কের কার্ড সব কিছুর ফটোকপি নিজের সুটকেসে রাখবেন। মানিব্যাগে একটা সাদা কাগজে লেখা আপনার নাম, ঠিকানা, ব্লাড গ্রুপ, ইমারজেন্সী কন্ট্যাক্টের (দের) নাম ও ফোন নাম্বার (লোকাল কারো হলে সবচেয়ে ভালো) এবং আপনি কোনও মেডিসিন নিয়মিত সেবন করেন কি না তার বিবরণ রাখবেন। কোনও মেডীসিনে অ্যালারজি থাকলে সেটাও লিখতে ভুলবেন না। মানিব্যাগে পাসপোর্টের একটা ফোটোকপিও রাখতে পারেন যদ্দিন না ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন।
shuvanahmed publisher