Answered 2 years ago
ভাই সৌরভ তালুকদার-
ব্যবসা দু‘প্রকার।
ক) ক্যাপিটেল ইনটেনসিভ (পুঁজি ঘন); এবং
খ) লেবার ইনটেনসিভ ( শ্রম ঘন)।
(ক) প্রচুর পুঁজির সন্নিবেশ ঘটিয়ে ব্যবসা করাকে ক্যাপিটেল ইনটেনসিভ ব্যবসা বলে। এ ধরণের ব্যবসায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করার জন্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় । এ সকল ব্যবসায় শ্রমের গুরুত্ব কমে যায়। আপনি ইউটিউবে চার্চ দিলে এমন বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/কারখানা দেখতে পাবেন, যেখানে কাঁচামাল প্রবেশ থেকে ফিনিস গুডস- সবকিছুই স্বংক্রিয় মেশিনে তৈরী হয়। এরকম ব্যবসাকে ক্যাপিটেল ইনটেনসিভ ব্যবসা বলে। তবে ক্যাপিট্যাল ইনটেনসিভ ব্যবসার ‘মা‘ হল লেবার ইনটেনসিভ ব্যবসা। প্রথমে - লেবার ইনটেনসিভ দিয়ে শুরু করতে হয়।
(খ) লেবার ইনটেনসিভ ব্যবসার প্রধান উপকরণই হল শ্রম/শ্রমিক। শ্রমিক তার সরাসরি শ্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে স্বল্প পুঁজিতে উক্ত ব্যবসা করে থাকে।
আপনার যেহেতু পুঁজির পরিমান খুব কম সেক্ষেত্রে আপনি শ্রমঘন ব্যবসা করতে পারেন।
শ্রমঘন ব্যবসার আবার অনেক ভাগ আছে:
ক) প্রযুক্তি নির্ভর শ্রমঘন- ব্যবসা।
খ) প্রযুক্তিহীন শ্রমঘন ব্যবসা।
গ) সীমীত ঝুঁকির শ্রমঘন ব্যবসা।
ঘ) অসীম আয়ের শ্রমঘন ব্যবসা।
ঙ) উদ্যোক্তা -বিকাশমান শ্রমঘন ব্যবসা। ইত্যাদি।
যেমন - আপনি যদি একবারেই ঝুঁকি গ্রহণে আগ্রহী না হোন তবে ইসলামিক ব্যাংক বা অন্য কোন অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা রাখতে পারেন। কোন ঝুঁকি ব্যতীত আপনার আয় বাড়তে থাকবে- তবে সেটা খুবই কম। কিন্তু কোন ঝুঁকি নেই।
আপনি যদি উদ্যেক্তা বিকাশমান ব্যবসা করতে চান - তবে আপনি পরিবহন জাতীয় ব্যবসা করতে পারেন- যেমন, আপনি উক্ত টাকায় ২ টা ভ্যান ক্রয় করতে পারেন। ধীরে ধীরে আপনার ভ্যান সংখ্যা বাড়বে আয়ও বাড়বে।
স্বল্প পুঁজির জন্য স্ট্রীট শপ-ব্যবসা খুবই লাভজনক। কারণ এখানে ক্রেতা অসংখ্য এবং মুনাফা সীমাহীন। কিন্তু এ ব্যবসায় স্বয়ং নিজেকে শ্রম বিনিয়োগ করতে হবে। যেহেতু স্বল্প পুঁজি এবং প্রযুক্তিবিহীন তাই শ্রমিক পাওয়া দু:স্কর হয়ে যাবে। কারণ, আপনার শ্রমিকটি যখন বুঝবে, আমি আমার কয়েক মাসের বেতন জমিয়ে এমন একটি ব্যবসা শুরু করতে পারি, তখন সে নিজেই উদ্যোক্তা হয়ে যাবে। যেমন- একটি ছটপটির ভ্যান।
আবার, ছোট স্থীর জাতীয় ব্যবসা করা যায় (ছোট দোকান)- এ সকল ব্যবসায় ভবিষ্যতে অধীক উপার্জনের সুযোগ নেই।
তবে, যে ধরণের ব্যবসাই করেন না কেন, আপনাকে স্থীর সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং এর উপর আস্থা রাখতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে।
আপনি ইচ্ছে করলে উক্ত টাকা দিয়ে একটি ব্র্যান্ড ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যেমন ধরুন, দই - মিষ্টির ব্যবসা। বা অন্যকোন মুখরোচক ব্যবসা। এসকল ব্যবসায়ও প্রচুর মুনাফা হয় এবং কালক্রমে আপনি নিজেই একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আপনি যদি উচ্চভিলাসী হন, তবে, উদ্যোক্তা শ্রেণী বা নিজে কোন কিছু উতপাদন ব্যবসা করা উচিত। যা ভবিষতে একটি শিল্প সংস্থায় রূপান্তরিত হতে পারে।
এখানে অনেকগুলো কথা বললাম। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকে- আপনার ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ পরিমাণ পুঁজি বিনিয়োগ করেও বড় কিছু হওয়া সম্ভব।
সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাকেই- এবং সুচিন্তিত ভাবে।
munnikhatun publisher