Answered 2 years ago
আমাদের শরীর অনেক আগে থেকেই একটু একটু করে জানান দেয়। শরীর যদি কোন বুদ্ধিমান মানুষের হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ সতর্ক হয়ে যায়। ডাক্তার দেখানো এবং নিয়ম মেনে ঔষধ খেয়ে চটপট সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু শরীর যদি কোন অলস , ড্যাম কেয়ার , অহঙ্কারী ( যৌবনের অহংকার ) বা নির্বোধ মানুষের হয় ( যা কিনা পৃথিবীর পঁচানব্বই শতাংশ ) তাহলে তো শরীর গেল।
ধরো কিছুদিন থেকে রামের পেট ভালো যাচ্ছে না। গ্যাস হচ্ছে, অ্যাসিডিটি হচ্ছে । তলপেটের ডানপাশটায় একটু ব্যাথাও। রাম কি করবে ? নিজেই একটা ঔষধ খেয়ে নেবে। ভাববে …ও কিছু না। অমুক দিন ওটা খেয়েছিলাম তো তাই মনে হয় পেট গড়বড় করছে। তাই রাম কিছুদিন একটু সহজপাচ্য খাওয়া খাবে। ঠিক হয়ে যাবে। কিছুদিন পর আবার পেটে ব্যথা সাথে অল্প জ্বর। গা গুলিয়ে এক দুবার বমি হবে। রাম আবার সেই ঔষধ খেলো ( ডাক্তারী না পড়লে কি হয়েছে ? রাম তো এক্কেবারে ডাক্তারেরও বাপ ঠাকুরদা ), পথ্য খেলো ঠিক হয়ে গেলো। এই করে করে একদিন আসবে যে রামকে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে কারণ তলপেটের ডান পাশে অসহ্য ব্যথা, মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে ব্যাথাটা নাভি থেকে নীচে দিকে যাচ্ছে। বমি পাচ্ছে, জ্বর আছে ,কিছুদিন থেকে খিদে নেই বললেই চলে। দেখল ওর অ্যাপেনডিসাইটিস হয়েছে।
সারা শরীর চুলকোচ্ছে । চামড়ার জায়গায় জায়গায় প্যাচ তৈরি হচ্ছে। স্পটগুলো লাল হচ্ছে । চামড়ার রঙ ফ্যাকাশে বা ডার্ক হচ্ছে । স্কিন শুকনো..কেমন একটা মাছের আঁশের মতো । দেরী না করে ডাক্তারের কাছে যাও। হয়তো লিভারের সমস্যা ।
শুধু ঘুম পায়, ওজন বিনা কারণে কমে যাচ্ছে । জিভ শুকনো। খুব খিদে পায়। বারেবারে প্রস্রাব হচ্ছে। শরীর জুড়ে অবসাদ । সুগারের সমস্যা হতে পারে।
মাথা ভার ভার..ঘাড়ে ব্যাথা, ব্রহ্মতালু মনে হচ্ছে ফেটে যাবে। প্রেসার পরীক্ষা করাও।
অবসাদ, খিদে কমে যাওয়া, পেটের গোলমাল, প্রস্রাব হলদেটে । জনডিস হওয়ার সম্ভাবনা আছে ।
দিনের পর দিন পিঠে একটা ব্যাথা। পেনকিলার খেলে কমে ..আবার হয়। গ্যাস হয়েছে বা ঠান্ডা লেগেছে অথবা বেকায়দায় লেগেছে না ভেবে ডাক্তার দেখাও। হার্ট সমস্যা হতে পারে।
মেয়েদের বগলে বা স্তনে যদি কোন লাম্প বা টিউমারের মতো দেখা যায় তাহলে ভেবে নিও না কোন একটা গ্ল্যান্ড বড় হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ নাও। এটা ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ।
ছেলেদের প্রস্রাব ত্যাগে যদি অসুবিধা সৃষ্টি হয় তাহলে সময় নষ্ট না করে ডাক্তার দেখানো উচিত। প্রোস্টেড গ্ল্যান্ডের সমস্যা হতে পারে।
একটু হাঁটলেই বুকে ব্যাথা হয়। মনে হয় পিঠে একটা কিল মারলে আরাম হবে। দৌড়ালে চট করে হাঁফ ধরে যায়। বুক ভরে শ্বাস নিতে অসুবিধা । হার্টের সমস্যা না ভেবে পালমোলজিস্ট দেখান। ফুসফুসের প্রবলেমও হতে পারে।
শ্বাস ফেলার সময় যদি বাচ্চার বুক খুব দ্রুত ওঠানামা করে তাহলে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে ।
উপরোক্ত সবই আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে বললাম। সবার একই উপসর্গ দেখা দেবে এমন কোন কথা নয় ..আবার এই উপসর্গগুলো দেখা দিলেই ঐ অসুখটাই হয়েছে সেটা ভাবার ও কোন কারণ নেই।
আসল হলো নিয়মিত ডাক্তার দেখানো আর সুস্থ জীবন কাটানো।
liton publisher