Answered 2 years ago
একটা গল্প বলিঃ
দিন-রাত চুলোচুলি করা দুই সতীনের মাঝে মারা গেল ছোট সতীন একদিন।
মারা যাবার আগে তার তিন বছরের ছেলেকে বড় সতীনের হাতে তুলে দিয়ে বলল,'আমারে মাফ কইরা দিয়েন। আমার পোলাডারে আপনের হাতে দিয়া গেলাম। আইজ থেইক্কা আপনেই ওর মা।'
বড় সতীনের ঘরে দুই সন্তান। আড়াই বছরের এক ছেলে। পাঁচ বছরের এক মেয়ে।এখন তার তিন সন্তান হল।
ছোট সতীন মারা যাবার পরে তার কোল থেকে নেমে গেল আড়াই বছরের ছেলে। সেখানে প্রতিস্থাপিত হল সতীনের তিন বছরের সন্তান।
সে এটাকে কোলে কোলে রাখে। মুখে তুলে খাওয়ায়। কোথাও গেলে নিজের ছেলেকে হাঁটিয়ে নিয়ে যায় কিন্তু সতীনের ছেলেকে নেয় কোলে তুলে।
এভাবেই আস্তে আস্তে বড় হল সে। কিন্তু সৎমা তাকে কোনও কাজ করতে দেয় না। নিজের ছেলেমেয়েদের দিয়ে কাজ করায়। কিন্তু তাকে দেয় মুখে তুলে খাইয়ে। এক গ্লাস পানিও ঢেলে খেতে দেয় না। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয় -স্বজন সবাই প্রশংসা করে সৎমায়ের।
'তুমি তো অনেক ভালা মানুষ। মা মরা পোলাডারে কত্ত আদর কর। এরেই তুমি আরও বেশি ভালবাস। কে কইব তুমি অরে প্যাডে ধরনাই।'
'ভুল ভাবতাছেন আপনেরা।' মুখ খুলল বড় বউ। 'আমি শোধ নিতাছি। অর মায়ে আমার স্বামী কাইড়া নিছিল। আমারে পাঁচটা বচ্ছর জ্বালাইছে। আমি সেই শোধ নিতাছি এই পোলারে দিয়া। আমার পোলা মাইয়া জীবনে চলতে শিখব। কিন্তু অরে আমি আদর দিয়া পঙ্গু বানাইয়া দিতাছি। অয় জীবনে চলতে গিয়া পদে পদে আছাড় খাইয়া পড়ব। উইঠ্যা দাঁড়াইতে পারব না।' বলে মুচকি হাসে বড় বউ।
যে মা কলেজ পড়ুয়া ছেলের জিন্সের প্যান্ট ধুয়ে দেন, বিছানা তুলে দেন ভার্সিটি পড়ুয়া মেয়ের। আমার ছেলে/মেয়ে আমাকে ছাড়া চলতেই পারে না বলে গল্প করেন যে মা। আপনি এক বেলা বাসায় না থাকলে আপনার ছেলেমেয়ে এক মুঠো চাল সেদ্ধ করে খেতে জানে না বলে গর্ব করেন যে মা। আপনারা আদতে কিন্তু মা না।
সৎমা।
আপনি নিজে খুব ক্ষতিকারক আপনার সন্তানের জন্য।
এটাও ব্যাড প্যারেন্টিং। আমি এমন বাবা নই। গত পাঁচ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেকে জুতা সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত শিখেছি এবং তা সে নিয়মিত করে থাকে।
triptykhan publisher