Answered 3 years ago
সূর্যের জীবনযাত্রা
একটি নক্ষত্রের জন্ম হয় নেবুলা (Nebula) বা নীহারিকা থেকে যা মূলত ধূলিকণা এবং বিভিন্ন গ্যাসের সংমিশ্রণে তৈরি। মহাকর্ষ বলের কারণে নীহারিকার গ্যাস এবং ধূলিকণা যখন অ্যাক্রেশন পদ্ধতিতে গ্যাস পিন্ডের আকৃতি ধারন করে তখন জন্ম হয় প্রোটোস্টার বা প্রাথমিক নক্ষত্র। সময়ের সাথে প্রোটোস্টারের মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল এর সবকিছুকে কেন্দ্রীভূত করার সাথে সাথে এর ভেতরের তাপমাত্রা, চাপ এবং ঘনত্বের পরিমাণ বাড়তে থাকে। তাপমাত্রা একটি নির্দিষ্ট মানে পৌঁছানোর পর হাইড্রোজেনের ফিউশন বিক্রিয়া শুরু হয় এবং প্রোটোস্টার হতে আলো বের হতে শুরু করে, আর তখনই নতুন নক্ষত্র দৃশ্যমান হয়। সূর্যের জন্মও এর ব্যতিক্রম নয়। নক্ষত্রের ভরের উপর নির্ভর করে নক্ষত্রের জীবনযাপন পদ্ধতি। নক্ষত্রের ভর যত কম তাদের জীবনযাপন তত সাধারণ। আমাদের সৌরজগতের নক্ষত্র সূর্যের ভর অনুযায়ী সে ১০ বিলিয়ন বছর আলো দিতে পারবে। ইতোমধ্যে সূর্য ৫ বিলিয়ন বছর ধরে আলো দিয়ে আসছে। আরো ৫ বিলিয়ন বছর আলো দেওয়ার পর সূর্য তার মৃত্যুর পথে এগুবে। অর্থাৎ সূর্যের ভেতরকার হাইড্রোজেন জ্বালানি ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে হিলিয়ামে পরিণত হতে আরো ৫বিলিয়ন বছর সময় লাগবে। জ্বালানি ফুরানোর পর সূর্যের আলো দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে এবং সূর্য শীতল হতে শুরু করবে। প্রতিটা নক্ষত্রই তার ভেতরকার তাপের কারণে সৃষ্ট বহিরমুখী বল এবং মহাকর্ষীয় কেন্দ্রমুখী বলের সমতা রক্ষা করে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় বিরাজ করে এবং আলো দিয়ে যায়। সূর্যের ফিউশন বিক্রিয়া বন্ধ হলে তাপ কমে যাওয়ায় বাহির দিকের চাপ কমে যাবে। স্থিতিশীল অবস্থা ভেঙে গিয়ে মহাকর্ষ আকর্ষণ বলের কারণে সূর্য সংকুচিত হতে শুরু করবে। সংকুচিত হওয়ার কারণে হিলিয়ামের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে এবং একসময় হিলিয়ামের ফিউশন বিক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। এতে সমগ্র নক্ষত্র আরো একবার জ্বলে উঠবে বিশাল আকার নিয়ে। সূর্যের আকার এতটাই বড়ো হবে যে তা বুধ, শুক্র এমনকি পৃথিবীকেও গ্রাস করে একেবারে দানবাকৃতি ধারন করবে।
আকৃতি বিশাল হওয়ায় ভেতরকার তাপমাত্রা তুলনামূলক কম হওয়ায় এর রং হবে লাল। নক্ষত্রের এই অবস্থা রেড জায়েন্ট হিসেবে পরিচিত। প্রায় ১০০ মিলিয়ন বছর রেড জায়েন্ট অবস্থায় থাকার পর সূর্যের বাহিরের আবরণ উড়ে গিয়ে ভেতরের অংশ সংকোচনের মাধ্যমে একটি ছোটো হোয়াইট ডোয়ার্ফে রূপান্তরিত হবে। তখন এর কেন্দ্রে থাকবে বিভিন্ন নিউক্লিয়াস,কার্বন এবং অক্সিজেন। হোয়াইট ডোয়ার্ফ হিসেবেই সূর্য (যদিও তখন আর সে সূর্য নয়) তার সাদামাটা জীবন পাড় করতে থাকবে।
লেখক: লামিয়া সুলতানা তাযকিয়া কিন্তু তার লেখার বহু অংশ আশ্চর্যভাবে সৌমেন বড়ুয়ার সাথে মিলে যায় যিনি কিনা এই লেখাটি আগে লিখেছেন
ভিডিওটি দেখুন আরো পরিষ্কার হবেন
runalaila publisher