‘সুবর্ণ আইজ্যাক বারি’ সম্পর্কে কেউ জানাবেন কি?

1 Answers   12.4 K

Answered 2 years ago

সুবর্ণ আইজ্যাক বারি হঠাৎই চারদিকে হৈ-হুল্লোড় তৈরী করা এক বিস্ময় বালক৷

আমার অভিমত বলার আগে তার সম্পর্কে কিছু তথ্য দেই৷

সুবর্ণ সম্পর্কে সার্চ করলেই যেটা ফার্স্ট পেইজে পাওয়া যায় সেটা হল সে বিশ্বের সবেচেয়ে কম বয়সী অধ্যাপক ।

২০১২ সালের ৯ এপ্রিল নিউইয়র্কে জন্ম সুবর্ণের। তার বাবার নাম রাশিদুল বারি। তিনি স্থানীয় একটি কলেজের গণিত শিক্ষক।

মাত্র তিন বছর বয়সেই নিজের মেধাকে জানান দিতে ভয়েস অব আমেরিকায় সাক্ষাতকার দেয় এই শিশুটি। মেধাকে যাচাই করতে ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন অধ্যাপক জ্যমিতি, বীজগণিতসহ রসায়নের জটিল বিষয়ের পরীক্ষা নিয়েছেন সুবর্ণের।

ছোট থেকেই সবাইকে অবাক করে একের পর এক কৃতিত্ব দেখিয়েছে সুবর্ণ। দেড় বছর বয়স থেকেই সংখ্যা এবং অংকের প্রতি আগ্রহ ছিল তার। তখন তার বাবা তাকে আরও কঠিন কিছু শেখাতে শুরু করলেন। তিনি সুবর্নকে জ্যামিতির বিভিন্ন আকৃতি শেখালেন। তারপর শেখালেন রসায়নের পর্যায় সারনী। এভাবেই বাবার হাত ধরেই তার পথচলা শুরু। দুই ভাইয়ের মধ্যে সুবর্ণ ছোট।

পিএইচডি স্তরের গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের সমস্যাগুলো সমাধান করতে সক্ষম হওয়ায় খুব অল্প বয়সেই বিশ্বে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, সন্ত্রাসবিরোধী ক্যাম্পেইন ও নিজের লেখা ‘দ্য লাভ' গ্রন্থের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে চাইল্ড প্রডিজি হিসেবে পরিচিত সে। এছাড়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে একজন অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী এ অধ্যাপককে বিশেষ সম্মাননা জানিয়েছেন।

এছাড়া অক্সফোর্ডসহ নানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুবর্ণের কাছে চিঠি আসত। এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও তার ট্যালেন্টে দেখে তাকে চিঠি দিয়েছিলেন। এরকম আরও অনেকে অনেক অর্জনের ভরপুর ছোট সুবর্ণের ঝুলি।

এখন আমার কিছু কথা বলি৷ আমি হঠাৎ একদিন ইউটিউব এ এই বিস্ময় বালকের সাক্ষাৎ পেলাম৷ দেখলাম A professor of MIT তাকে সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন৷

তারপর তাকে তিনি পিরিয়ডিক টেবিল (রসায়নের পর্যায় সারণী) লিখতে দেন৷ একটা তিনবছরের বাচ্চা সেখানে ১১৮ টির মধ্যে ১১৪ টি মৌল ক্রমাগত লিখে, বই না দেখে৷ আমি তো রীতিমতো অবাক!! তারপর তার সম্পর্কে একটা ছোটখাটো গবেষণায় নেমে যাই৷

আসলে আমাদের বাচ্চাদের মস্তিষ্ক অনেক শার্প থাকে৷ খুব সহজেই একটা জিনিস সে ক্যাচআপ করার ক্ষমতা রাখে। তবে একটা কথা ভুলে যাবেননা, যার যেই বয়স তার সেই বয়সে সেটাই করতে দেওয়া উচিত নাহয় বিরূপ প্রভাব পড়বে৷

আমি ভাবছিলাম, আমি তো ক্লাস নাইন টেনেও নিজে টেবিলে বসে পড়তে ভাল লাগত না৷ আর এই ছেলেটা এই বয়সই যেহেতু এত কিছু পারে তাহলে অবশ্যই এখনুই অনেক পড়ুয়া৷ ।

কিন্তু ব্যাপারটা এমননা৷ এই বাচ্চাটিকে বাহির দিক থেকে যে যত কথাই বলুক না কেন এই বাচ্চাটিই হয়ত পৃথিবীর একমাত্র সুবিধাপ্রাপ্ত বাচ্চা যার কাছ থেকে তার শৈশবকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে৷

একটা ভিডিওতে দেখলাম, ছোট একটা ক্লিপ৷ সেখানে সুবর্ণের বাবা রাশিদুল বারী সাহেব তাকে একটা টপিক নিয়ে সেটা বুঝাচ্ছিলেন৷ এবং বলছিলেন মেথ সলভ করতে৷ সে সেই সময় বলে যে না, তার ভাল লাগছে না, এখন না৷ কিন্তু পরোক্ষণে তিনি লোভনীয় খেলনা ও চকলেট বের করে বলেন এগুলো পেতে চাইলে এটা কর৷ পরে সে করতে বাধ্য।

সে যাই হোক এখন অনেকে বলতে পারেন এটা আর খারাপ কি?

আমাদের মানুষের জীবনের পর্যায়গুলো দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন একজন মানুষ পূর্ণাঙ্গ বুদ্ধিমত্তা প্রাপ্ত হতে ২০-২৫ বছর বয়স পূর্ণ হতে হয়৷ তখন তার মধ্যে নিজস্ব স্বকীয়তা ব্যাপারটা সৃষ্টি হয়৷ কিন্তু আপনি যদি এর আগেই তাকে মানসিক চাপে রাখেন তাহলে তার পরিস্ফুটনে কি প্রভাব পড়তে পারে সেটা দেখা যাবে অদূর ভবিষ্যতে৷

এই মুখস্থট্যালেন্ট বেশিদিন থাকবে না৷ একদিন হাড়িয়ে যাবে৷

রাশিদুল বারী সাহেব মূলত পরিবেশের কারণে, আবেগপ্রবণ একজন মানুষ তাই মানসিকভাবে পরিবর্তন হয়ে গিয়েছেন৷ অর্থাৎ তিনি তার নিজের মতটিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভাবেন৷ হ্যা এটা থাকা ভাল তবে বেশি থাকা ভাল নয়৷

উনি আসলে তার বাচ্চাকে যেমন চান তেমনই মানুষ করতে পারেন৷ কিন্তু আমার অভিমত হলো যে তিনি যেটাই করছেন সেটা ভাল কিছু নয়৷

আর পরবর্তী কথা হলো, সুবর্ণ যতটুক না ততটুকের থেকেও বেশি তার ও তার পরিবারের নামে প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো আছে বাংলাদেশে৷ একটা বাচ্চা তিনবছর বয়সে যখন তুতলিয়ে কথা বলে, অক্ষরগুলো ভাল করে লিখতে পারে না সেখানে বড় বড় কি ধরনের মেথ সলভ করে সেটা একটু বুঝা উচিত তার ভিডিও দেখে। ধন্যবাদ৷

এখন যারা বারী পরিবারের ফ্যান আছেন তারা আমাকে ইচ্ছেমত গালি দেন মন্তব্যে। 

Khaled
Khaled
303 Points

Popular Questions