সামরিক প্রযুক্তি ও সক্ষমতায় বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান কি যথেষ্ট, হলে বা না হলে কেন?

1 Answers   14.4 K

Answered 3 years ago

বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা এখনো ৮০র দশকে পড়ে আছে। আবেগ আর জাত্যভিমান বাদ দিয়ে যদি বাংলাদেশের সামরিক অবস্থা দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনি এখনো কোন গেম চেঞ্জিং অস্ত্র তৈরি করতে পারে না। ট্যাংক, এন্টি ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল, হুইটজার সব কিছুই অন্য দেশ থেকে কিনতে হয়।

বাংলাদেশে কিছু চাইনিজ এসল্ট রাইফেল তৈরি করা, কিছু গ্রেনেড তৈরি করা ছাড়া অন্য সব অস্ত্রর জন্যই অন্য দেশের উপর তাকিয়ে থাকতে হয়।

সামরিক ড্রোন তো দূরের কথা ম্যাভিক ড্রোনও এখনো বাংলাদেশ আর্মি সেভাবে হাতে পাইনি। আরেকদিন দেখলাম এক ক্যাপ্টেন ম্যাভিক টাইপ কোন এক ড্রোন হাতে পেয়ে অনেক খুশি(!)

করে ভাই এইসব ড্রোন তো পোলাপাইন ইউটিউব ভিডিও বানাইতে আরো আগে থেকে ইউজ করতিছে! তাইলে বাংলাদেশের অফিসারদের কাছে এতো পরে কেন এসব আসলো?

সামরিক ড্রোন এখন যেকোনো যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম কিন্তু বাংলাদেশে কোন সামরিক ড্রোন ই নাই!

৯০ দশকে কেনা কিছু মিগ ২৯ ই বাংলাদেশের বিমান বাহিনির গৌরব! যার অর্ধেক আবার গ্রাউন্ডেড থাকে বেশিরভাগ সময়!

বিমান বাহিনি এখনো কোন আধুনিক যুদ্ধ বিমান কিনতে পারেনি। কিনবো কিনবো করেও এখনো কোন দেশের সাথে চুক্তিই করতে পারেনি ডেলিভারি পাওয়া তো এখনো অনেক দূর!

বাংলাদেশের ৩ বাহিনির মধ্যে নৌ বাহিনি কিছুটা এগিয়ে যাচ্ছে। ছোট হোক তাও নিজেদের বেশ কিছু নৌযান নিজেরা তৈরি করতে সক্ষম তারা। সাবমেরিন কেনার মাধ্যমে আরো কিছুটা এগিয়েছে।

তবে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনি অন্য কোন দেশের রেগুলার সামরিক বাহিনির সাথে যুদ্ধে জড়ানো বা জেতার মত সক্ষমতায় নাই। কষ্ট লাগলেও এটা সত্য। বিচ্ছিন্ন কোন বিদ্রোহী গ্রুপ এর সাথে যুদ্ধ করতে পারলেও অন্য কোন দেশের সাথে পারবে না। এমন কি সেটা মিয়ানমারের সাথেও না। এজন্য দেখবেন মিয়ানমার অনেক সময় সামরিক ভাব উস্কানি দিলেও( এখনো দিচ্ছে) বাংলাদেশ থেকে সামরিক ভাবে কোন জবাব দেওয়া হয় না।

বাংলাদেশের অনেক ফেসবুক জেনারেল আছে যারা কথায় কথায় বাংলাদেশ কে হিরো আর বার্মা কে জিরো বানিয়ে কাল্পনিক যুদ্ধ জয় করে আনন্দের ঢেকুর তুলে তাদের জেনারেল গিরি বুঝার জন্য একটা উদাহরণ দেয় তাহলে বুঝতে পারবেন এসব জেনারেলদের যুক্তির দৌড়….

ফেবু জেনারেলরা দাবি করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনি যেহেতু পাহাড়ে চাকমা মারমা সন্ত্রাসী বাহিনির সাথে যুদ্ধ করে করে অভ্যস্ত সেহেতু এই যুদ্ধের অভিজ্ঞতা কাজে কাগিয়ে বার্মা কে হারানো কোন ব্যাপার ই না!

এই জেনারেলরাই আবার বার্মার সেনাবাহিনি যে তাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী বিদ্রোহী গ্রুপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এই যুদ্ধ কে বার্মিজ আর্মির জন্য নেগেটিভ পয়েন্ট মনে করে!

অর্থাৎ বাংলাদেশ আর্মি যুদ্ধ করলে সেটা হয় অভিজ্ঞতা আর বার্মিজ আর্মি যুদ্ধ করলে হয় অস্ত্র / ম্যান পাওয়ার ক্ষয়!

একই রকম ঘটনা কিন্তু ২ রকম চিন্তা!

বাংলাদেশ আর্মির চাইতে বার্মিজ আর্মি আরো বেশি যুদ্ধে অভ্যস্ত, সারা মিয়ানমারে অনেক গুলো বিচ্ছিন্ন গ্রুপ আছে যাদের সাথে বার্মিজ আর্মি বছরের পর বছর যুদ্ধ করে আসছে। এই অভিজ্ঞতা কি বাংলাদেশ আর্মির সাথে বেশি না?

যায় হোক, আমি বার্মা কে হিরো বানাতে চাচ্ছি না আবার বাংলাদেশ আর্মি কে পচাইতেও চাচ্ছি না। তবে অন্য দের মত বিচার যায় হোক তাল গাছ আমার টাইপ চিন্তা করে অবস্থা যায় হোক বাংলাদেশ সেরা এই নীতি ফলো করছি না।

অস্ত্র, জিও পলিটিক্সে বার্মা বাংলাদেশ থেকে অনেক এগিয়ে। বাংলাদেশের এত বন্ধু রাষ্ট্র থাকতেও কেউ কিন্তু বাংলাদেশের পাশে আসেনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে। অন্য দিকে বার্মা একটা এক ঘরে দেশ হয়েও বার্মার কোন চুল ই ছিড়তে পারেনি বাংলাদেশ। উলটা চীন ভারত ২ দেশই বার্মা কে সাপোর্ট করছে। তাহলে বাংলাদেশের জিও পলিটিক্স কই গেলো? কি করলো? রাষ্ট্র দূত, পররাষ্ট্র মন্ত্রী সচিব এদের কাজ কি?

সামরিক ভাবেও বার্মা কে কোন জবাব দেওয়া হয় না আবার কূটনৈতিক ভাবেও বার্মা কে চাপে ফেলতে পারছে না বাংলাদেশ।

( বুগান্ডা কেন সামরিক ভাবে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে পারছে না তার অন্যতম কারন রাজনৈতিক বাম হাত। বুগান্ডায় একটা কথা খুব বলা হয় যে সেনাবিহিনি রাজনীতি থেকে দূরে থাকবে! ভালো কথা।

কিন্তু এটা বলা হয় না রাজনীতি সেনাবাহিনি থেকে দূরে থাকবে।

আর্মি রাজনীতিতে নাক না গলালেও আর্মিতে রাজনীতি ১০০% নাক গলায়। এখানে প্রমোশনের ক্ষেত্রে যোগ্যতা অভিজ্ঞতা যথেষ্ট না, রাজনৈতিক পরিচয় ই বেশি জরুরী। এজন্য আমরা দেখেছি অনেক যোগ্য জেনারেলদের অবসরে পাঠিয়ে মাথা মোটা পাবলিককে সেনাপ্রধান বানানো হয়েছে । স্বাভাবিক ভাবেই অযোগ্য ব্যক্তি যখন কোন প্রতিষ্ঠানের প্রধানের দায়িত্ব পালন করে তখন সেই প্রতিষ্ঠান এগিয়ে না গিয়ে পিছাবে এটাই স্বাভাবিক।

তাছাড়া বুগান্ডায় এখন ট্রেনিং, অস্ত্র এসব বাদ দিয়ে সেনা সদস্যদের আরাম আয়েশ আর সেনাবিহিনিতে অহেতুক নারী যুক্ত করার মাধ্যমে উন্নয়ন করানো হচ্ছে(!!)

আগে রুটি খাইতো এখন ভাত খায় সো বুগান্ডার আর্মি সেরা!

আগে নারী ছিলো না এখন নারী পুরুষ এম্পি চেক পোস্টে আড্ডা মারে সো বুগান্ডার আর্মি প্রগতিশীল!

( শেষের দিকে এসে সত্যি কষ্ট থেকে বেশ কিছু খোঁচা মেরে কথা বলেছি। কারন আর যায় হোক বার্মিজরা আমাদের সীমানায় রকেট মারবে, এটাক হেলিকপ্টার উড়াবে আর এসব কিছুর কোন জবাব দিবে না। বার্মিজরা আমাদের সাথে পাল্লা দিয়ে দ্রুত সাবমেরিক কিনে ফেলতে পারলেও আমরা ওদের সাথে পাল্লা দিয়ে এখনো কোন ৫ম প্রজন্মের কোন যুদ্ধ বিমান কিনতে পারলাম না এসব মানা কষ্টকর।

বাংলাদেশ সেনাবিহিনি কে রাজনীতি মুক্ত রাখা উচিৎ। রাজনৈতিক পরিচয় যাতে এখানে প্রমোশন/ অবসরের কারন না হয়) সেটা লীগ বা পার্টি যে দলই হোক।

( বর্তমান সেনা প্রধান শফিউদ্দিন বেশ ছুটা ছুটি করে সেনাবিহিনির মধ্যে কিছু উদ্দীপনা আনার চেষ্টা করছে বলেই মনে হচ্ছে। আগের জনের করা ড্যামেজ কমানোর চেষ্টা করছে সে হইতো। এটা দরকারো। এসি রুমে বসে থাকার চাইতে সৈনিকদের কাছে যাওয়া উচিৎ)


Moushumi Hamid
Moushumi Hamid
530 Points

Popular Questions