Answered 2 years ago
যদিও সংখ্যা খুব কম, কিন্তু অনেকেই এই সমস্যায় ভুগছেন। এদের বেশিরভাগই এই সমস্যার কথা কাউকে বলে না। ধীরে ধীরে নিজের মনের উপরে চাপ দিতে দিতে, মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে। এর সঠিক সমাধান দরকার।
প্রথমে যেটা বুঝতে হবে, সেটা হলো - এমন কেন হয়?
এমন হবার পেছনে, বিভিন্ন ধরণের পরিস্থিতি থাকতে পারে, তবে, কারণ একটাই - তার কোন অসুবিধা নেই।
কথাটি বুঝতে কষ্ট হতে পারে। যার কোন অসুবিধা নেই, সমস্যা নেই, অভাব নেই, সেই লোকটির কাছে - কোন কিছু ভালো লাগে না। মনমরা লাগে। আমার কথাটি মেনে নিতে না পারলে, নিজেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। সেই পরীক্ষার জন্য, বেশী কিছু করতে হবে না - শুধুমাত্র একজন গরীব খুঁজে বের করবেন, যার মনমরা লাগে, যার কোন কিছু ভালো লাগে না।
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য একটি স্বপ্ন বা লক্ষ্য লাগে। একটি আশা লাগে। এই আশা না থাকলে, মানুষ আত্মহত্যা করে। কেমন আশা? ছাত্র আশা করে, এই বছর পরীক্ষায় পাশ করবে। সেই আশায় বেঁচে আছে। চাকরীজীবি আশা করে, কয়েক বছর পরে প্রমোশন পাবে। সেই আশায় বেঁচে আছে। চাষি আশা করে, ভালো ফসল পাবে। সেই আশায় বেঁচে আছে। নেতা আশা করে, এবার ভোটে জিতবে। সেই আশায় বেঁচে আছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, মানুষ ভবিষ্যতে কোন কিছু হবার আশায় বেঁচে থাকে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য স্বপ্ন বা লক্ষ্য লাগে। সমস্যা না থাকলে বেঁচে থাকার লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া যায় না। এজন্যই মনমরা লাগে, কোন কিছু ভালো লাগে না।
যাদের এই মনমরা রোগ আছে, তাদের সহজ চিকিৎসা হলো - সমস্যা তৈরি করুন।
সমস্যা তৈরি করা মানে, মারামারি করা নয়। যে কোন একটা লক্ষ্য ঠিক করে, কাজ শুরু করুন, যাতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা বা সংগ্রাম (struggle) করতে হয়। আর সেই কাজটি যদি জনকল্যাণ মূলক হয়, তাহলে তো কথাই নেই।
একটা উদাহরণ দিচ্ছি: এই লক্ষ্য বা পরিকল্পনা হাতে নিন - আপনার এলাকার আশেপাশে ৫ কিলোমিটার এর ভিতরে কেউ না খেয়ে থাকবে না। একদিনেই এই কাজ করতে পারবেন না। প্রথমে, অল্প জায়গা নিয়ে কাজ শুরু করুন, এর পর আপনার কাজের জায়গা বাড়িয়ে নিন। যার ঘরে খাবার নেই, তাকে খাবার পৌঁছে দিন, যার বাজার নেই, তাকে বাজার করে দিন, কাউকে নাগদ টাকা দিন। এই কাজটি শুরু করলে, দেখবেন কত ধরণের সমস্যা আসছে। একা মানুষ কতজন কে খাবার দিবেন, এত টাকা কোথায় পাবেন? তাছাড়া এত কাজ একা করবেন কিভাবে? তখন, টাকা জোগাড় করার জন্য সমাজের ধনীদের সাথে দেখা করবেন। আপনার দলে স্বেচ্ছায় কাজ করার জন্য এলাকার তরুণদের রাজী করবেন। সমস্যা আসবে, আর সমাধান করতে থাকবেন।
খাবার জোগাড় কাজটি যদি বেশী কঠিন হয়ে যায়, একই ধরণের সহজ কাজ করতে পারেন - আশেপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকার মানুষকে বই পড়াবেন। তাদের কাছে বই পৌঁছে দিবেন। পড়া শেষ হলে, বই ফেরত আনবেন। পুরো উপজেলার মানুষকে বই পড়িয়ে ছাড়বেন।
আমি শুধুমাত্র উদাহরণ দিয়েছি। আপনি ইচ্ছা করলে, এর চেয়ে ভালো পরিকল্পনা করতে পারেন। মূল কথা হলো, একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করুন। সেই কাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে থাকুন, সমাজের কল্যাণ করতে থাকুন। বিষয়টা মোটেও সহজ নয়। অনেক পরিশ্রম আছে। তবে, একটি বিষয় নিশ্চিত - যারা এমন কাজ করে, তারা কোনদিন মনমরা হয় না। তাদের "ভালো লাগে না" রোগ হয় না।
fiazfuad publisher