Answered 3 years ago
ভারতীয়রা তথা ভারতীয় বাঙালীরা জিন্নাহ্ ছাড়া আর কারোর কথাই মনে রাখেনি বা দেশভাগের দুঃখের স্মৃতি ভোলার সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন পূর্ব বাংলার সকল নেতাকেই ভুলে যেতে চেয়েছে। এমন কি এদিকে বাড়ি অথচ পাকিস্তানপন্থী নেতা যেমন সৈয়দ হোসেন সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেট কোলকাতা কিলিং এর নায়ক ছাড়া অন্য কিছু (যেমন কোলকাতার মেয়র ইত্যাদি) মনে রাখে নি। এমনকি আধুনিক প্রজন্ম তফশিলি ফেডারেশনের নেতা এবং গণপরিষদে আম্বেদকর কে জিতিয়ে পাঠানো পাকিস্তানের একমাত্র হিন্দু মন্ত্রী যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের সম্পর্কে জানেই না! স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে ওই ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক সময়টাকে খুবই সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে ফজলুল হক সাহেব সম্পর্কে বা কৃষক প্রজা পার্টি সম্পর্কে কিছুটা পড়ানো হয় মুসলিম লীগ ও সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা অংশটিতে। তাই যাঁরা তাঁর সম্পর্কে জানেন তাঁরা একমাত্র এই অসাম্প্রদায়িক নেতাটিকেই শ্রদ্ধা করেন ও কংগ্রেসের অবিমিশ্রকারিতার কারণে ১৯৩৫ ৩৬ এ কিভাবে কংগ্রেস ও কৃষক প্রজা পার্টির মিলিত সরকার না হওয়ায় তিনি মুসলিম লীগের খপ্পরে পড়েন ও লীগ দলটিকে ও ওনাকে গ্রাস করে এবং দেশভাগ তথা বাংলাভাগ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পরে সেই নিয়ে অনেকের মধ্যেই আফশোস আছে। তবে বর্তমান প্রজন্মের ওসব চিন্তা আছে বলে মনে হয় না!
পুনশ্চঃ ভারতীয়রা আগে ভারতীয় পরে তাদের ধর্মীয় বা প্রাদেশিক পরিচয়। ২৭% এর মধ্যে যে ৯% মুসলমান ১৯৪৭ এ ভারতীয় পরিচয়কেই বড় মনে করে নাপাক ই স্তান এ যান নি, তাঁরাই কাশ্মীর, মালদা,মুর্শিদাবাদ মাল্লাপুরম বা লাক্ষাদীপ এ সংখ্যাগরিষ্ঠ।(সংখ্যা গরিষ্ঠতা বজায় রাখা হয়েছে, জোর করে জনমিতি পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় নি!) আপনি শুনলে আশ্চর্য হবেন পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের মধ্যে শতকরা ১০ জন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানেন বলে মনে হয় না! আমার কথায় সন্দেহ হলে ভারতে চিকিত্সা করাতে বা ভ্রমণে এলে পশ্চিমবঙ্গের যে কোনো মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে জরিপ করে দেখতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীরা শুধু দুজনকে ভোলেননি! প্রথমজন নজরুল ইসলাম — যিনি সুস্থ থাকলে কখনোই ভারতীয়ত্ব ত্যাগ করতেন না! আর দ্বিতীয় জন সিলেটি ও পাকিস্তানের শিক্ষা দপ্তরের অফিসারের স্বামী,যিনি এমনকি পাকিস্তানে সন্তানদের ছেড়ে বোলপুরের নীচুপটির ঘরটিতে বার বার ছুটে চলে আসতেন সেই স্বনামধন্য বাঙালী সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী!
Irin Islam publisher