Answered 3 years ago
লজ্জার কিছুই নাই। বাংলাদেশ পাকিস্তানের অনুগত কোন রাষ্ট্র নয়। সে পাকিস্তানের নিকট থেকে কিছু কিনলেও সেটা নিজের সার্বভৌম অবস্থান থেকে সমকক্ষতার অবস্থান থেকে প্রয়োজনীয় দর কষাকষির মাধ্যমেই কিনেছে। অস্ত্র বানিজ্য ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার নিরিখে হয়। সেখানে রাষ্ট্র কোন আবেগ তাড়িত সিদ্ধান্ত নেয় না বা নিতে বাধ্যও নয়।
জাপানে আনবিক বোমা নিক্ষেপ করে মার্কীন যুক্তরাষ্ট্র যে অমানবিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তা জাপানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও অর্থনৈতিক লেনদেন এর ক্ষেত্রে কখনোই কোন বাধা হয়ে দাঁড়ায় নাই। ভিয়েতনামে ১৯৪০ এর দশক হতে ১৯৭৪ পর্যন্ত যথাক্রমে জাপান, ফ্রান্স ও মার্কীন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা যে ভয়ঙ্কর গণহত্যা ও যুদ্ধ চালানো হয়েছিল, তার পরও আজকে ভিয়েতনামের জনগন ও কম্যূনিষ্ট পার্টি এই প্রত্যেকটি দেশের সাথে গভীর কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক উত্থানের পিছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবদান যথেষ্ট দৃশ্যমান।
এধরনের ভুরিভুরি উদাহরন এটাই প্রমান করে ইতিহাসের কালপর্বে সংঘটিত কোন সংঘাত বা যুদ্ধ দুটি রাষ্ট্রের আন্তসম্পর্কের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘোটক হলেও নির্ধারক উপাদান নয়। পাকিস্তান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পক্ষ, নাকে খত দিয়ে সে ফিরে গেছে। যুদ্ধ আনুষ্ঠানিক ভাবে চুক্তির মাধ্যমে বন্ধ হয়েছে ৫০ বছর আগে। পাকিস্তানের আরো একটা আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থণা আমাদের দাবী, এবং এবিষয়ে বাংলাদেশ সরকার তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই প্রচেষ্টাটি সফলতার মুখও দেখবে বলে নানা ইংগীত দেখা যাচ্ছে। আমরা যদি ১৯৭১ সাল হতে পাকিস্তানের সাথে কার্যতঃ যুদ্ধ চালিয়ে যেতাম তাহলে কূটনৈতিক ভাবে জাতীয় লক্ষ্য অর্জনের পথে আমরা থাকতে পারতাম না। পাকিস্তানের সাথে বানিজ্য হবে, বিনিয়োগ হবে, কূটনৈতিক আদান প্রদান হবে আবার আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার দাবীর কাজও চলবে। রাষ্ট্র কোন ব্যক্তবিশেষ নয় যে আমৃত্যু প্রতিহিংসা লালন করবে।
Jannati Khatun publisher