মাথার চুল বড় হয় কিন্তু চোখের ভ্রু বড় হয় না কেন?

1 Answers   7.9 K

Answered 3 years ago

চুল বা লোম বেশ বিস্ময়কর। হাতের তালু, পায়ের তলা ও ঠোঁট ছাড়া আমাদের শরীরের প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই লোমের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। ভাবলে অবাক লাগে, একজন মানুষের শরীরের সমস্ত লোম সারা জীবন ধরে নাকি প্রায় ৯৫০ কিমি বাড়ে। অথচ ভুরু ও চোখের পাতার চুলকে কিন্তু আদৌ সে হারে বাড়তে দেখা যায় না। ভাগ্যিস বাড়ে না!


খরচ নেই


সারা জীবনে চুল কাটাতে গিয়ে আমরা যত পরিমাণ খরচ করি, ভুরুর চুলের ক্ষেত্রে সেখানে এক পয়সাও খরচ করতে হয় না। এই চুলএকটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত বেড়ে চুপটি করে লক্ষ্মী মেয়ের মতো বসে থাকে। আর বাড়ে না{ তবে এর ব্যতিক্রম যে নেই, তা নয়। আপনার নজরে নিশ্চয়ই অন্তত একজন মানুষও পড়েছে যাঁর চোখের ভুরু শুয়োপোকার মতো। তবে সিংহভাগ ক্ষেত্রে ভুরুর দৈর্ঘ্য খুব বেশি বড় হয় না। কিন্তু কেন এই বৈষম্য? তবে সেটা জানার আগে দেখে নেওয়া যাক, কয়েকটা রেকর্ডের কথা।


রেকর্ড


অথচ ভুরুর দৈর্ঘ্যের বিচারে জাপানের সুমিতো মাৎসুমোরা গিনিজ বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। তাঁর ভুরুর চুলের দৈর্ঘ ১৮.১ সেমি। চোখের পাতার চুলে বিশ্বরেকর্ডধারী হলেন ফ্লোরিডার স্টুয়ার্ট মুলার। তাঁর চোখের পাতার চুলের দৈর্ঘ্য ৬.৯৯ সেমি। তবে এ সব কৃতিত্ব কিছুই চাপা পড়ে যায় চিনের জি ক্যিউপিং-এর মাথার চুলের দৈর্ঘের কাছে। ১৯৭৩ সালে চুল কাটা বন্ধ করার পরে ২০০৪ সালে তাঁর চুলের দৈর্ঘ্য হয়েছিল ৫.৬২৫ মিটার। এর অর্থ অনেকটা এইরকম- তিনি যদি তিনতলায় চুল খুলে


মাথার চুলের বৃদ্ধি


হেয়ার ফলিকলের বৃদ্ধির যে চক্র তাতে কয়েকটি দশা বা পর্যায় আছে। যেমন, অ্যানাজেন (বৃদ্ধি) দশা, ক্যাটাজেন (রূপান্তর) দশা ও টেলোজেন (বিশ্রাম) দশা। আমাদের মাথার অন্তত ৮৫% চুল যে কোনও সময় অ্যানাজেন দশায় থাকে। এই সময়ের মধ্যে ফলিকল নতুন কোষ তৈরি করে এবং চুল বছরে মোটামুটি ১৫ সেমি হারে বাড়তে থাকে। ক্যাটাজেন দশায় হেয়ার ফলিকলগুলি কুঁচকে গিয়ে তার আসল দৈর্ঘ্যের ১/৬ ভাগ কমে যায়। এর ফলে ফলিকলের ভিত রক্ত সরবরাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এর মোটামুটি ২ সপ্তাহ পরে চুলের টেলোজেন দশা শুরু হয় এবং নতুন চক্র শুরু হওয়ার আগে কয়েক মাস ধরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। এই সময় খুব সহজেই চুলের ভিত তুলে ফেলা যায়। যে কোনও সময় ১০-১৫% চুল টেলোজেন দশায় থাকে। তাই প্রতিদিন চুল আচড়ানোর সময় বা স্নান করতে গিয়ে কিছু চুল পড়ে যেতেই পারে এবং এই নিয়ে অকারণ ভাবনার কিছু নেই।


শরীরের চুলের অবস্থানটি ঠিক কোথায় তার ভিত্তিতে অ্যানাজেন দশার মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। আর এই পার্থক্য চোখের পাতার ক্ষেত্রে ৩০ দিন থেকে মাথার চুলের ক্ষেত্রে ২ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত হতে পারে। অ্যানাজেন দশায় কোনও চুল যত বেশি থাকে সেটি তত বেশি বাড়ে। যেহেতু চোখের পাতা বা ভুরুর অ্যানাজেন দশা খুব কম সময়ের তাই পড়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত তারা খুব বেশি বাড়তে পারে না। অথচ মজার ব্যাপার এটাই যে, শরীরের সমস্ত চুল কিন্তু একই হারে (০.২৫-০.৩ মিলিমিটার প্রতিদিন) বাড়তে শুরু করে। তবে গোটা বিষয়টিই একজন থেকে অন্যজনে আলাদা।


Jannatul
jannatul
485 Points

Popular Questions