Answered 2 years ago
আমি একটা ঘটনা বলছি। একদম আমার ভীষণ কাছের একজনের কথা। মেয়েটা বিয়ের মাসখানেক পর জানতে পারলো স্বামী impotent. শ্বশুরবাড়ীর সবাই জানতো ব্যাপারটা কিন্তু বিয়ের কথাবার্তার সময় লুকিয়েছে। ডাক্তার বুঝি বলেছে বিয়ে হলে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সেটা তো ঠিক হবার নয়। মেয়েটা স্বামীকে ছেড়ে এলো না। এখনও আছে । স্বামীকে ভালবাসার দরুণ থেকে গেল। আমরা ডিভোর্সের জন্য জোর করেছিলাম কিন্তু সে মানেনি।
আমার দুর সম্পর্কের একজন আত্মীয় সারা বছর এমনিতে সুস্থ থাকে। কিন্তু বিশেষ কোন কোন মাসে মাথায় একটু গন্ডগোল দেখা দেয়। তখন প্রায় উন্মাদ হয়ে যায় আবার কয়েকদিনের মধ্যে ঠিকও হয়ে যায়। কখনও কখনও সারা বছর সুস্থ থাকে। এমনিতে ভীষণ ভালো মানুষ..মানে একটু বেশীই ভালো। ইঞ্জিনিয়ার, সরকারী চাকরি করে। বিয়ের আগে পাত্রীর বাড়ীকে ব্যাপারটা জানানো হয়েছিল। কিন্তু ওরা অতটা পাত্তা দেয়নি। তবে মেয়েটা বুঝি বারণ করেছিল। যাইহোক, বিয়ে হয়ে যায়। প্রথম যখন মেয়েটা স্বামীর এই পাগলামি দেখলো ..একদম ভয় পেয়ে গেল। কেঁদেকেটে বাপের বাড়ী চলে গেল। শ্বশুরবাড়ীর কেউ ওকে আটকায়নি কারণ ব্যাপারটা ভয় পাওয়ার মতোই। ওকে ফিরে আসার জন্য কেউ অনুরোধও করেনি। কিন্তু মাসখানেক বাদে নিজেই ফিরে এসেছিল। বিয়ের প্রায় কুড়ি বছর হয়ে গেল। স্বামীর অসুস্থতা এখন পুরোটা সে ই সামলায়।
রিসেন্ট একটা ঘটনা। জুলাই মাসের। ছেলে মেয়ে দুটোর ছয় বছরের প্রেম। আগামী নভেম্বরে বিয়ের তারিখ ঠিক হয়েছে। বিয়ের কেনাকাটা সব শেষ। এরমধ্যে ছেলেটার লিভার ক্যান্সার ধরা পড়লো। ডাক্তার খুব একটা আশা দিচ্ছে না। ছেলের বাড়ী থেকে বিয়ে ক্যানসেল করলো কিন্তু মেয়ের বাড়ীর কেউ ক্যানসেল করতে রাজী না। মেয়ে তো না ই। মেয়ের মা বললেন…অসুখটা বিয়ের পরও হতে পারতো। মেয়ে বললো.. নভেম্বর নয় ..ছেলেটা হাসপাতাল থেকে ফিরলেই ছোট্ট করে বিয়েটা সেরে নেবে। তারপর যা হবার হবে। মেয়েটা জোর জবরদস্তি বিয়ে করল । কাল খবর পেলাম মুম্বইতে ছেলেটার অপারেশন হয়েছে। 60% লিভার কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছে এবং ছেলেটার সুস্থ হয়ে যাওয়ার 90% আশা আছে। কি বলবে এই ধরণের মেয়েকে?
যাইহোক, বিয়ের পর যদি মেয়েটা দেখে ভীষণ বড় অসুখ ( যেটা সারার নয় ) লুকিয়ে স্বামী বিয়েটা করেছে তাহলে ওর একশ শতাংশ অধিকার আছে ডিভোর্স দিয়ে দেওয়া । এটা এক ধরণের জালিয়াতি, ধোঁকা দেওয়া । ওপরের ঘটনাগুলোর মতো যদি কোন রকম মানসিক অ্যাটাচমেন্ট গড়ে না ওঠে তাহলে স্বামীকে ছেড়ে চলে আসা উচিত। নতুন করে নিজের জীবন গড়ার দিকে মন দেওয়া জরুরি। ভাল থাকার অধিকার সবার আছে।
ahonasardar publisher