বাংলায় প্রথম ব্যাংক লুট কে করে?

1 Answers   6.2 K

Answered 3 years ago

আজকে আমরা যেভাবে ব্যাংক লুট দেখি ঠিক একইভাবে ব্যাংকলুট করেছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। ১৮২৯ সালে দ্বারকানাথ ঠাকুর তৈরি করেন ইউনিয়ন ব্যাংক। সেই ব্যাংকের কর্তৃত্ব নিজের হাতে রাখার জন্য তিনি তার ঘনিষ্ঠ ও আজ্ঞাবহ রমানাথ ঠাকুরকে ব্যাংকের কোষাধ্যক্ষ বানান। ব্যাংকের অন্যান্য পদে পরিবর্তন হলেও ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবার আগে পর্যন্ত এই রমানাথ ঠাকুর এই পদে কর্মরত থাকেন।

১৬ লক্ষ টাকা মুলধন নিয়ে ব্যাংক যাত্রা শুরু করে। তিন বছরের মধ্যে ব্যাংকের মুলধন ১ কোটি টাকা দাঁড়ায়। মুল লুটপাট হয় হুন্ডির মাধ্যমে। তখন হুন্ডি বৈধ ছিল। লুটপাট চালাতো দ্বারকানাথ নিজে ও নীলকরেরা। অডিটে এসব ধরা পড়লে দ্বারকানাথই সেসব ঝামেলা ঠেকাতো। মুলধনের দুই তৃতীয়াংশই যা সাকুল্যে ৭৩ লাখ টাকা, তা খেলাপি ঋনে পরিণত হয় ১৮৪৩ সালে। যার মধ্যে ১৮ লক্ষ টাকা খেলাপি ছিল দ্বারকানাথ ঠাকুরের কোম্পানির।

খেলাপি ঋণের এই ৭৩ লক্ষ টাকা লুটেরারা সরিয়ে ফেললেও দ্বারকানাথ ঠাকুর পরিচালনা বোর্ডে বলেন, ক্ষতি যা হবার হয়েছে এখন লোকসান কত কমানো যায় সেই চেষ্টা করা উচিৎ। দ্বারকানাথ ঠাকুর হিসাবের খাতাতেও কারচুপি করেন। এদিকে ব্যাংকের হিসাবরক্ষক এ এইচ সিমকে ১২ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগে বহিস্কার হয় । দ্বারকানাথ ঠাকুর সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু পরে ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে নিজের তহবিল থেকে ১২ লাখ টাকা দ্বারকানাথ ঠাকুর শোধ করে দেন।

মূলধনের ১ কোটি টাকার ৯৩ লাখ টাকাই এভাবে লুটপাট হয়ে যায় ১৮৪৬ সালের মধ্যে। ১৮৪৬এ ১ কোটি টাকা আজকের মূল্যে কত একটু হিসেব করবেন। বিদ্যাসাগর মশাইয়ের বাবা ১৮২০ সালে শিপসরকারের হৌসে কাজ করে মাসে ২টাকা রোজগার করে বাড়িতে টাকা পাঠাবার কথা চিন্তা করলেন। সে সময় সব থেকে ভাল চাল ১ মন বালাম চালের দাম ছিল ১টাকা ২৫ পয়সা।

লুটপাট শেষ হলে দ্বারকানাথ ঠাকুর তার ৭০০ শেয়ারের মধ্যে সাড়ে ছয়শো শেয়ার বিক্রি করে কেটে পড়েন আর তারপরেই ১৮৪৬ সালে ব্যাংকটি দেউলিয়া হয়ে যায়।


Sheza Khan
shezakhan
552 Points

Popular Questions