Answered 3 years ago
তবে দিন বদলাতে শুরু করেছে, সাঁতারের পোশাক, ব্লেজার, লনজারি বা অন্তর্বাসের মতো বেশি মূল্য সংযোজিত বা ভ্যালু অ্যাডেড পণ্যও দেশে উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে অন্তর্বাস উৎপাদনে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি নতুন কারখানা যুক্ত হয়েছে। ফলে পোশাক রপ্তানিতে ধীরে ধীরে বড় জায়গা করে নিয়েছে অন্তর্বাস।
পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, বিশ্বে অন্তর্বাসের বড় বাজার রয়েছে। সেই বাজারের বড় একটি অংশ দখলে নেওয়ার সুযোগও রয়েছে বাংলাদেশের। কারণ, বিশ্বের বড় ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের পোশাক উৎপাদন করিয়ে নেয়। তারাই আবার অন্য দেশ থেকে অন্তর্বাস কেনে। ফলে বাংলাদেশ যদি এ খাতে বিনিয়োগ করে, তাহলে ক্রেতা পাওয়া কঠিন নয়। তবে এ জন্য উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে এবং সঙ্গে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে হবে।
লনজারি বলতে সাধারণত মেয়েদের অন্তর্বাস (বক্ষবন্ধনী বা ব্রা, প্যান্টি ও রাতের পোশাক) বোঝায়। অন্তর্বাস উৎপাদনে কারখানায় কিছু বিশেষ ধরনের সেলাই মেশিন ও যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়। সেসব দিয়েই আবার ছেলেদের অন্তর্বাস (আন্ডারওয়্যার ও স্যান্ডো গেঞ্জি বা ভেস্ট) উৎপাদনও সম্ভব। ফলে লনজারি পণ্যের মধ্যে মেয়েদের অন্তর্বাসের পাশাপাশি ছেলেদের আন্ডারওয়্যার ও ভেস্ট যুক্ত আছে। বর্তমানে সাঁতারের পোশাক ও রোমপার লনজারি পণ্যের অন্তর্ভুক্ত বলে জানান সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা।
অনেক ধরনের পণ্য অন্তর্ভুক্ত থাকায় বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে লনজারি রপ্তানির সঠিক পরিসংখ্যান জানা যায়নি। তবে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩ হাজার ১৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ১১৫ কোটি ডলারের মেয়েদের অন্তর্বাস রপ্তানি হয়েছে, যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছর মেয়েদের অন্তর্বাস রপ্তানি হয়েছিল ১০৭ কোটি ডলারের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে সুইডিশ কোম্পানি হোপ লুন বিডি ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) অন্তর্বাস উৎপাদনের কারখানা করে। পরে ১৯৯৯ সালে এই ব্যবসায়ে আসে অ্যাপেক্স লনজারি। বর্তমানে প্রায় ৩০টি কারখানা উৎপাদনে আছে, যার অধিকাংশই হয়েছে চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে।
নরসিংদীর পলাশে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ১৫ একর জমির ওপর চরকা টেক্সটাইল নামে অন্তর্বাস তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। ১০৫ লাইনের এই কারখানাটিতে কাজ করেন ৫ হাজার ৬০০ শ্রমিক। মাসে ৪০ লাখ পিস ছেলেমেয়েদের অন্তর্বাস তৈরি করে তারা। এসব পণ্যের ক্রেতা হচ্ছে এইচঅ্যান্ডএম, ডেভেনহাম, নেক্সট, টার্গেট অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ২০ টির বেশি ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান। ১০ অক্টোবর কারখানাটি ঘুরে দেখা যায়, ভিন্ন ভিন্ন লাইনে এইচঅ্যান্ডএমসহ কয়েকটি ব্র্যান্ডের অন্তর্বাস তৈরি করছেন শ্রমিকেরা। পাশেই প্রস্তুত হওয়া পণ্য মোড়কীকরণ হচ্ছে। আরেক ইউনিটে মেয়েদের বক্ষবন্ধনী উৎপাদনে একসঙ্গে কাজ করছেন শ্রমিকেরা।
debjit publisher