Answered 2 years ago
গভীর খাদের কিনারে পাকিস্তানের অর্থনীতি। পাকিস্তান জামাত ইসলামের প্রধান সিরাজুল হক জানান যে, ১৮ জন পাকিস্তানী রাজনীতিবিদ এবং সামরিক বাহিনীর অফিসারের তালিকা তার কাছে রয়েছে যাদের ব্যাংক একাউন্টে ৪০০০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি বা ১৫.৫২ বিলিয়ন ডলার রয়েছে।
পাকিস্তানের ডিফেন্স মিনিস্টার খাজা মোহাম্মদ আসিফ সংসদে জানান যে, একজন পাকিস্তানী আমলার দ্বিতীয় মেয়ের বিয়েতে ৭২ কোটি রুপি বা ২৮ লক্ষ ডলার সালামি উঠেছে। ওই একই ব্যক্তির প্রথম মেয়ের বিয়েতে ১.২ বিলিয়ন রুপি বা ৪৬ লক্ষ ডলার সালামি উঠেছিল। এটা কেবলমাত্র নগদ অর্থ। এর বাইরেও গয়নাগাটি এবং বেশকিছু গাড়ি উপহার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেউ এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে না।
বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত কমে যাওয়া এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে মুডি'স ইনভেস্টর সার্ভিস পাকিস্তান সরকারের স্থানীয় ও বৈদেশিক মুদ্রা ক্রেডিট রেটিং Caa1 থেকে Caa3-এ নামিয়ে এনেছে।
মুডি'স আরো জানায়, বর্তমানের অত্যন্ত নাজুক এবং ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে যথাসময়ে দায় পরিশোধের বিষয়টি পাকিস্তানের পক্ষে অসম্ভব হতে পারে। তদুপরি, ২০২৩ সালের জুনে শেষ হতে যাওয়া বর্তমান IMF প্রোগ্রামের বাইরেও পাকিস্তানের যে বিশাল ঋণ রয়েছে সেটা অর্থ ফেরত প্রদানের জন্য দৃশ্যমান কোনো উৎসও দেখা যাচ্ছে না।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর বলেন, 'আমাদের রিজার্ভে এখন ৩ বিলিয়ন ডলারেরও কম বৈদেশিক মুদ্রা আছে। পাকিস্তানের ইতিহাসে মুদ্রার মজুত কখনও ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়নি। সে তুলনায়, বাংলাদেশের প্রায় ৩৫ বিলিয়ন, ভারতের ৬০০ বিলিয়ন এবং চীনের প্রায় ৪ লাখ কোটি ডলারের রিজার্ভ রয়েছে।
প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পাকিস্তানের একটি শীর্ষ ব্রোকারেজ সংস্থা টপলাইন সিকিউরিটিজের বরাতে জানিয়েছে, দেশটিকে ৭৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ওয়াল স্ট্রিটের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিস্থিতিকে এক প্রকার রাষ্ট্রীয় দেউলিয়াত্বই বলা যায়, যেহেতু এ ক্ষেত্রে পুরোনো দেনার কিছু অংশ মওকুফ আর ঋণের কিস্তি পরিশোধের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করতে হয়।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে সরকার পেনশন ও বেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এ ধরনের কোনো নির্দেশনা অর্থ মন্ত্রণালয় দেয়নি।
তবে বিশ্লেষকেরা বলেন, এ ধরনের গুজব তৈরি হওয়ার মতো পরিস্থিতি পাকিস্তানে আছে।
jannatul publisher