Answered 3 years ago
গাড়ির নাম্বার প্লেটের অর্থ -
আপনার যদি একটি গাড়ি থাকে, তাহলে নিশ্চিতভাবে সেই গাড়িতে সামনে ও পিছনে নাম্বারপ্লেট আছে। আর যদি গাড়ি না-ও থাকে তাহলে নিশ্চই প্রতিদিন চলতে ফিরতে যত গাড়ি দেখেন, সেইসব গাড়ির নাম্বার প্লেটে গাড়ির নাম্বার তো নিশ্চই দেখেছেন। প্রতিটি গাড়ির নাম্বার প্লেট আলাদা। ঢাকা মেট্রো ক ১২৩৪, ঢাকা মেট্রো খ- ২৩৪৫ ইত্যাদি আরো অনেক। ঢাকা মেট্রো বলতে যে গাড়িটি ঢাকা মেট্রোপলিটনের আওতাধীন তা সহজেই অনুমান করা যায়। কিন্তু শহরের নাম আর সংখ্যার মাঝে একটি বাংলা বর্ণমালাও জুড়ে দেয়া হয় গাড়ির নাম্বার প্লেটে। এই বর্ণমালা দিয়ে কী বুঝানো হয় --
বর্ণমালাগুলোর অর্থ কী তা জানার আগে জানতে হবে বাংলাদেশে গাড়ির নাম্বার প্লেট কারা এবং কীভাবে ঠিক করে দেয়। আপনি যখন একটি গাড়ি কেনেন, তখন গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হয়। আর গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে হয় বাংলাদেশ রোডস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি বা বিআরটিএ থেকে। বিআরটিএতে কো গাড়ির রেজিস্ট্রনের জন্য আবেদন করা হলে, তাদের ফর্মে গাড়ির তথ্যগুলো দিতে হয়। গাড়ির তথ্য দেয়ার পর বিআরটিএ গাড়িটি কোন ক্যাটাগরিতে পড়ে সেটি নির্ধারণ কর গাড়িটির একটি নাম্বার প্রদান করে থাকে।
বিআরটিএ যখন কোন গাড়িকে অনুমোদন দিয়ে থাকে, তখন গাড়ির ধরণ অনুসারে গাড়িকে একটি ক্যাটাগরিতে স্থান দেয়া হয়ে। কোন গাড়ি কোন ক্যাটাগরিতে পড়ছে, সেই ক্যাটাগরি অনুসারে গাড়ির জন্য একটি বর্ণমালা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। নাম্বারপ্লেট প্রদানের ক্ষেত্রে বিআরটিএ’র নিয়ম অনুসারে মোট ১৯ টি ক্যাটাগরি আছে। এর মধ্যে একটি ক্যাটাগরি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের গাড়ি, বাকি ১৮টি ক্যাটাগরি হচ্ছে জনসাধারণের গাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
ক –
প্রাইভেটকার, ৮০০ সিসি’র প্রাইভেট কারের নাম্বারপ্লেটে ব্যবহার করা হয়ে থাকে ব্যাঞ্জন বর্ণের প্রথম বর্ণ ক।
খ –
প্রাইভেটকার, যেসব প্রাইভেট কার ১০০০-১৩০০ সিসি’র হয়ে থাকে সেগুলোর নাম্বারপ্লেটে খ লিখা থাকে।
গ –
প্রাইভেটকার, ১৫০০-১৮০০ সিসি’র যেসব প্রাইভেটকার রয়েছে সেগুলোর নাম্বারপ্লেটে খেয়াল করলে দেখা যাবে গ বর্ণ দেয়া আছে।
ঘ –
জীপগাড়ি, জীপগাড়ির ক্যাটাগরি নির্ধারণের জন্য ঘ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
চ –
মাইক্রোবাসের নাম্বার প্লেটে ব্যবহার করা হয় বাংলা বর্ণমালার ৫ম বর্ণ ‘চ’।
ছ –
আবার ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস যেগুলো সেগুলোর নাম্বার প্লেটে থাকে ‘ছ’। লেগুনার জন্যও এই বর্ণটি নির্ধারিত।
জ –
মিনিবাসের ক্যাটাগরি বুঝানোর জন্য নাম্বার প্লেটে জ বর্ণটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ঝ –
আবার বড় বাস বা কোস্টার বাসের ক্যাটাগরি ভিন্ন। এই ক্যাটাগরি বুঝাতে ব্যবহার করা হয় ‘ঝ’।
ট –
কোন গাড়ির নাম্বার প্লেটে যদি ‘ট’ বর্ণটি লিখা থাকে তাহলে বুঝতে হবে এটি বড় ট্রাকের নাম্বার প্লেট।
ঠ –
নাম্বার প্লেটে ‘ঠ’ থাকলে বুঝতে হবে, নাম্বার প্লেটটি কোন ডাবল কেবিন পিক-আপ এর নাম্বার প্লেট।।
ড –
মাঝারি ট্রাকের নাম্বার প্লেটের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ‘ড’ বর্ণটি।
ন –
কোন গাড়ি যদি ছোট পিক আপ ক্যাটাগরির হয়ে থাকে তাহলে নাম্বার প্লেটে ন ব্যবহার করে ক্যাটাগরি নির্দিষ্ট করা হয়ে থাকে।
প –
টাক্সি ক্যাবের জন্য নির্ধারিত ক্যাটাগরি হচ্ছে প ক্যাটাগরি। এই ক্যাটাগরির বা ট্যাক্সি ক্যাবের নাম্বার প্লেটে ‘প’ বর্ণটি থাকে।
ভ –
২০০০+ সিসি প্রাইভেটকার বুঝানোর জন্য এইসব গাড়ির নাম্বার প্লেটে শহরের নামের পর ‘ভ’ বর্ণমালা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ম –
পন্য পরিবহন এবং ডেলিভারির জন্য ব্যবহৃত পিক-আপ বুঝানোর জন্য বাংলা বর্ণমালার ‘ম’ বর্ণটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
দ –
প্রাইভেট বা নিজস্ব পরিবহনের জন্য যেসব প্রাইভেট সিএনজি চলাচল করে থাকে সেগুলোর নাম্বার প্লেটে ‘দ’ ব্যবহার করে বুঝান হয় এইটি প্রাইভেট সিএনজি।
থ –
ভাড়ায় চলিত সিএনজির ক্ষেত্রে দ এর বদলে থ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
হ –
যদি কোন মোটরবাইক ৮০-১২৫ সিসি’র হয়ে থাকে তাহলে সেই বাইকের নাম্বারপ্লেটে হ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
ল –
যদি কোন মোটরবাইক ১৩৫-২০০ সিসি’র হয়ে থাকে তাহলে সেই বাইকের নাম্বারপ্লেটে ল দিয়ে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
ই –
ভটভটি টাইপের ট্রাকের নাম্বারপ্লেটে অনুমোদন দেয়ার সময় তাতে ই বর্ণটি দিয়ে ক্যাটাগরি ঠিক করে দেয়া হয়।
য-
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের গাড়িগুলো চিহ্নিত করতে নাম্বার প্লেটে য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কোন বর্ণ দিয়ে কোন ধরণের গাড়ি বুঝানো হয় তা জানা থাকলে শুধু নাম্বার প্লেট দেখেই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, শহর, ইঞ্জিন প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অনেক সময় গাড়ি ট্রেস করার জন্যও গাড়ির নাম্বার ব্যবহার করা হয়।
-Collected
Join CarHub BD [ Official ]
সংক্ষিপ্ত ঃ
BRTA-এর অনুমোদিত সকল যানবাহনে নাম্বারপ্লেট ব্যবহারের নিয়ম চালু হয় ১৯৭৩ সালে।
বাংলাদেশের যানবাহনগুলোর নাম্বারপ্লেটের ফরম্যাট হচ্ছে- ‘শহরের নাম-গাড়ির ক্যাটাগরি ক্রম এবং গাড়ির নাম্বার’।
যেমন, ‘ঢাকা মেট্রো য-১১২৫৯৯। এখানে, ‘ঢাকা মেট্রো’ দ্বারা বোঝানো হয়েছে গাড়িটি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আওতাধীন।
‘য’ হচ্ছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গাড়ির চিহ্নকারী বর্ণ। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন সব গাড়ি ‘য’ বর্ণ দ্বারা চিহ্নিত করা হবে। পরবর্তী ‘১১’ হচ্ছে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এবং ‘২৫৯৯’ হচ্ছে গাড়ির সিরিয়াল নাম্বার।
সাধারণত বাংলা বর্নমালার ‘অ, ই, উ, এ, ক, খ, গ, ঘ, ঙ, চ, ছ, জ, ঝ, ত, থ, ঢ, ড, ট, ঠ, দ, ধ, ন, প, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, শ, স, হ অক্ষরগুলো ব্যবহার করা হয়। উপরের প্রতিটি বর্ণ আলাদা আলাদা গাড়ির পরিচয় বহন করে।
চলুন জেনে নিই এগুলো দ্বারা কী বুঝায়ঃ–
ক – ৮০০ সিসি প্রাইভেটকার
খ – ১০০০-১৩০০ সিসি প্রাইভেটকার
গ – ১৫০০-১৮০০ সিসি প্রাইভেটকার
ঘ – জীপগাড়ি চ – মাইক্রোবাস
ছ – মাইক্রোবাস / লেগুনা (ভাড়ায় চালিত)
জ – বাস (মিনি)
ঝ – বাস (কোস্টার)
ট – ট্রাক (বড়)
ঠ – ডাবল কেবিন পিকআপ
ড – ট্রাক (মাঝারী)
ন – পিকআপ (ছোট)
প – ট্যাক্যি ক্যাব ভ – ২০০০+ সিসি প্রাইভেটকার
ম – পিকআপ (ডেলিভারী)
দ – সি এন জি (প্রাইভেট)
থ – সি এন জি (ভাড়ায় চালিত)
হ – ৮০-১২৫ সিসি মোটরবাইক
ল – ১৩৫-২০০ সিসি মোটরবাইক
ই – ট্রাক (ভটভটি)
hafizkhan publisher